খাবার টেবিলে সুন্দর সাজ, গৃহিণীর মাথায় তাজ
আকলিমা আক্তার রিক্তা :
উদ্বেগ নিয়ে ভরপেট খাবার চাইতে মনে শান্তি নিয়ে আধপেট থাকাও ভালো।
_________________________________________________ঈশপ।
খাবার ঘরের প্রাণকেন্দ্র খাবার টেবিল। তাছাড়া প্রতিটি পরিবারের হাবভাব অনেকটা বোঝা যায় খাবার টেবিলের মাধ্যমে। আবার কথায় বলে, আগে দর্শনধারী, পরে গুণবিচারী। যত ভাল খাবারই আপনি পরিবেশন করুন না কেন, টেবিলের সজ্জা যদি ভাল না হয়, তো আপনার এত স্বাদের খাবার কাঙ্খিত গুরুত্ব নাও পেতে পারে। যতার্থ বাহবা আপনার এত শ্রমের রান্নায় নাও জুঠতে পারে। সুতরাং, যে কোন বিবেচনায় খাবার টেবিলের সৌন্দর্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু হতাশার কথা হচ্ছে, বেশিরভাগ পরিবারে অতিথি আপ্যায়নের ক্ষেত্রেই কেবল রুচিসম্মত খাবার টেবিল বেশি প্রাধান্য পায়। কিন্তু কেন ? নিজ পরিবারের লোক সবসময় বঞ্চিত থাকবে কেন ? গোছানো ও রুচিসম্মত খাবার টেবিল, সুন্দর পরিবেশন দেখলে মনে প্রশান্তি আসে, পারিবারিক সৌন্দর্য বৃদ্ধি পায়। খাবার টেবিল নামের পারিবারিক আড্ডা প্রাণের ছোয়া পায়, দৃড় হয় পারিবারিক বন্ধন। তো সুন্দর খাবার টেবিল সাজানো কী খুব কঠিন ? মোটেও না। চলুন, আজ চটজলদি জানাবো এসম্পর্কিত কিছু গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ।
বাজারে বিভিন্ন আকৃতির খাবার টেবিল পাওয়া যায়, যেমন: গোলাকৃতি, ষড়ভুজাকৃতি, আয়তাকার ইত্যাদি । যেকোন আকৃতির খাবার টেবিলকে আকর্ষনীয় করতে পারে যে বিষয়গুলো :
আকর্ষনীয় টেবিল ক্লথ
- বাজারে টেবিলক্লথ পিচ বা গজ আকারে পাওয়া যায়। সুতি, প্লাস্টিক বা রাবারের তৈরি টেবিল ক্লথ পাওয়া যায় এবং তাতে বিভিন্ন রঙের ফুল, ফল ও প্রিন্টের নকশা আঁকা থাকে। আকর্ষনীয় ক্লথটি কিনতে পারেন আপনার বাসার খাবার টেবিলের ধরণ অনুযায়ী।
টেবিল ম্যাট
- বাশ, রাবার, ফাইবার, প্লাস্টিক, কাপড় ও পাটের ছোট, মাঝারি ও বড় ধরনের টেবিল ম্যাট পাওয়া যায় বাজারে। আপনার পছন্দ অনুযায়ী গোল, ডিম্বাকার, চারকোনা, ত্রিকোনা আকৃতির ম্যাট বেছে নিতে পারেন। ম্যাটগুলো সেট আকারে বিক্রি হয় এবং বাঁশের তৈরী ম্যাটের চাহিদা বাজারে সবচেয়ে বেশী।
ফলের ঝুড়ি
- খাবার টেবিলকে দৃষ্টিনন্দন করতে টেবিলের উপর ফলের ঝুড়ি রাখতে পারেন। তবে টেবিলের আকারের দিকটি বিবেচনায় রাখুন। ডিম্বাকার টেবিল হলে মোমদানি, চামচস্ট্যান্ড ও ফলের ঝুড়ি গুচ্ছ করে সাজান। আয়তাকার হলে সারি করে সাজান।
শোভা বর্ধনকারী ফুল
- গৃহসজ্জার সৌন্দর্য বহুগুনে বাড়িয়ে দেয় ফুল। ফুলদানিতে একগুচ্ছ তাজা ফুল রাখুন। সম্ভব না হলে কৃত্রিম ফুলও ব্যবহার করতে পারেন। টেবিলের মাঝখানে মাটি, কাচ, ক্রিস্টাল ইত্যাদির ফুলদানি ও রাখতে পারেন।
রানার
- টেবিলের বাড়তি সৌন্দর্য বৃদ্ধি করতে রানার ব্যাবহার করতে পারেন। রানার বিভিন্ন আকারের এবং লাল নীল হলুদ রঙের পাওয়া যায়।
প্লেট স্ট্যান্ড
- প্লেট স্ট্যান্ডে প্লেট সাজিয়ে রাখা যায় মনের মত করে। প্লেট স্ট্যান্ডগুলো বিভিন্ন আকারের হয়। প্লেট স্ট্যান্ড স্টিল, প্লাস্টিক ও কাঠ ফাইবারের হয়। আকার অনুযায়ী স্ট্যান্ডে কম বা বেশী প্লেট সাজিয়ে রাখা যায়।
গ্লাস স্ট্যান্ড
- গ্লাস স্ট্যান্ডগুলো স্টিল, কাঠের ইত্যাদির হয়। কাঠের স্ট্যান্ডগুলো বিভিন্ন রঙ্গের হয়। কোন স্টান্ডে ছয়টি, আবার কোন স্ট্যান্ডে বারোটি গ্লাস রাখা যায়।
চামচ স্ট্যান্ড
- চামচের সাথে চামচ স্ট্যান্ড থাকে। কোন কোন চামচ স্ট্যান্ডে শুধু চামচ রাখা যায় আবার কোন কোন চামচ স্ট্যান্ডে ছুড়িসহ চামচ রাখা যায়।
গ্লাস ঢাকনা
- গ্লাস ঢাকনা বিভিন্ন আকৃতির হয়। গ্লাসের সাথে মিল রেখে ঢাকনা নির্বাচন করা হয়। বিভিন্ন নকশা করা ঢাকনা, যেমন ফুল, ফল ইত্যাদির ঢাকনা কিনে নিতে পারেন।
সুগন্ধি মোম
- খাবার টেবিলের সৌন্দর্য বাড়াতে কিছু সুগন্ধি মোম রাখতে পারেন। সৌন্দর্য বৃদ্ধির পাশাপাশি কাজেও আসতে পারে।
টিস্যু বক্স
- বাজারে বাঁশ, বেত, স্টিল ও কাপড়ের টিস্যু বক্স পাওয়া যায়। টিস্যু বক্স প্রয়োজন মেটানোর পাশাপাশি সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে।
ভোজনবিলাসীদের কাছে উৎসবের খাওয়া দাওয়ার আনন্দ অধিক থাকে। আর যদি খাবার টেবিল হয় আকর্ষনীয় তাহলে তো প্রশান্তি ভরেই খাওয়া যায়। উৎসবের আনন্দটা যেন দ্বিগুন হয়ে যায়। অতিথি আপ্যায়ন, কী পারিবারিক ভোজ, সুসজ্জিত খাবার টেবিলের জুড়ি নেই। তাই আপনার বাসার খাবার টেবিলকে রাখুন সর্বদা রুচিশীল ও সুসজ্জিত।