ঘর থাকুক স্বাস্থ্যকর
- রিক্তা রিচি
একজন মানুষকে সম্পূর্ণ সুস্থ রাখার জন্য তার ঘরের পরিবেশ বিশেষ ভূমিকা রাখে। তাছাড়া সারাদিন ব্যস্ততার পর ঘরে এসেই পাওয়া যায় একটুখানি প্রশান্তি। তাই আপনার থাকার ঘরটিকে রাখুন পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন এবং জীবাণুমুক্ত। এছাড়া আমাদের দেশে শতকরা ২০ জন মানুষের এলার্জি সমস্যা থাকে। আর আমরা জানি ধুলা-বালি , অপরিষ্কার পরিবেশ এলার্জির প্রধান শত্রু। তাই এলার্জির হাত থেকে সুরক্ষা পেতে স্বাস্থ্যকর পরিবেশ বজায় রাখা খুবই জরুরী। আসুন তাহলে জেনে নিই কিভাবে ঘরের পরিবেশ রাখবেন স্বাস্থ্যকর।
- ঘরকে রাখুন পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন : ঘরকে ধুলা-বালিমুক্ত ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখুন। ঘরের সিল্কের নিচের পাইপে জমা হওয়া ধুলা নিয়মিত পরিষ্কার করুন। কারণ এসব ধুলা ঘরের পরিবেশ নষ্ট করে ঘরকে অপরিচ্ছন্ন করে ফেলে। যা হাঁপানী রোগীদের হাঁপানী বাড়িয়ে দিতে পারে। তাই এসব ধুলা থেকে পরিষ্কার রাখুন ঘরকে।
- বাথরুমে বাতাস চলাচলের ব্যবস্থা : দমবন্ধ করা পরিবেশ স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। তাই বাথরুমের দরজা, জানালা সবসময় বন্ধ করে রাখবেন না। মাঝে মাঝে খুলে রাখুন। তাহলে আলো বাতাস চলাচল করতে পারবে। যা আপনার ঘরের পরিবেশের ভারসাম্য বজায় রাখবে। এছাড়া সপ্তাহে অন্তত একদিন বাথরুম এর বালতি, মগ, ফ্লোর পরিষ্কার করুন।
- পোষা প্রাণীটির জন্য জায়গা রাখুন : অনেকে শখ করে বিভিন্ন প্রাণী পুষে থাকেন। কিন্তু আপনি জানেন কি, গবেষনায় এসেছে সাধারণ মানুষের তুলনায় পোষাপ্রাণীর মালিকরা এলার্জি সমস্যায় বেশী ভোগেন। তাই পোষাপ্রাণীর থাকার জন্য নির্দিষ্ট জায়গা রাখুন। তবে তা যেন হয় বেডরুম থেকে বেশ দূরে।
- অপ্রয়োজনীয় প্লাগ খুলে রাখুন : অনেক সময় দেখা যায় ঘরের দেয়ালে অপ্রয়োজনীয় প্লাগ থাকে। যা থেকে আমাদের শ্বাস-প্রশ্বাসজনিত রোগ হতে পারে। সম্প্রতি দেখা গেছে VOCS অর্থাৎ volatile organic compounds-এর কারণে মানুষের শ্বাস-প্রশ্বাসজনিত রোগ হয়ে থাকে। তাই এসব অপ্রয়োজনীয় প্লাগসমূহ খুলে রাখুন।
- দরকারী জিনিসপত্র গুছিয়ে রাখুন : দরকারী জিনিসপত্র সুন্দর করে গুছিয়ে রাখুন। কারণ সবকিছু ছড়ানো ছিটানো থাকলে ধুলা-বালি জমে থাকে। আর ধুলা-বালি থেকে এলার্জি হয়। তাই প্রয়োজনীয় কাগজ ফাইলে রাখুন, দরকারী ঔষধ বক্সে ভরে রাখুন এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিস নির্দিষ্ট স্থানে গুছিয়ে রাখুন।
- ফ্রিজকে রাখুন ব্যাকটেরিয়া মুক্ত : ফ্রিজকে সবসময় পরিষ্কার রাখুন। ফ্রিজের ট্রে, সাইডগুলো অপরিষ্কার থাকলে সেখানে ফ্যাঙ্গাস জন্ম নিতে পারে। তাই নিয়মিত ফ্রিজ পরিষ্কার রাখুন।
- একুরিয়াম পরিষ্কার রাখুন : একুরিয়ামের অস্বাস্থ্যকর পানি এবং মাছ আপনার ঘর এবং আপনার জন্য ক্ষতিকর। ঘরে একুরিয়াম থাকলে তা অন্তত মাসে একবার পরিষ্কার রাখুন।
- গাছের পরিচর্যা করুন : অনেকেই ঘরকে ছোট ছোট গাছ দ্বারা সাজাতে পছন্দ করে। ঘরে বা বারান্দায় যারা অনেক গাছ লাগান তারা গাছের পরিচর্যা করুন সঠিকভাবে। গাছে অতিরিক্ত পানি দিবেন না কারন অতিরিক্ত পানি আপনার ঘর এবং গাছ উভয়ের জন্যই ক্ষতিকর।
ঘরের বারন্দা, জানালার গ্রিল, পর্দা ধুলা-বালি মুক্ত রাখুন। এতে এলার্জি থেকে রক্ষা পাবেন আপনি এবং আপনার ত্বক। স্বাস্থ্যকর পরিবেশ সুস্থ মানসিক বিকাশে সহায়ক। তাই আপনার থাকার ঘরটি হোক পরিচ্ছন্ন ও মনোরম।