ভেসে যায় আদরের নৌকায়
রবিউল কমল : ফুল ফুটুক না ফুটুক, আজ ‘তার’ জন্মদিন। ‘তার’ মানে আপনার প্রিয় মানুষ, কাছের মানুষ, মনের মানুষ। আপনার খুব ইচ্ছা এই দিনকে অন্যভাবে উদযাপন করার। আপনি বিশেষ দিনটাকে স্মরণীয় করে রাখতে চান। কিন্তু অনেক ভেবেও কোনো আইডিয়া পাচ্ছেন না, বুঝতেই পারছেন না কি করলে আপনার মনের মানুষটি খুশি হবে। ব্যাপার না, আপনার জন্য রোমান্টিক কিছু আইডিয়া সাজিয়ে দিলাম। একবার দেখে নিন…
মোমবাতির রূপকথারা :
খুব পুরনো, কিন্তু সবসময় নতুন আইডিয়া এটি। একটু ফাঁকা জায়গায় টেবিল সাজিয়ে ডিনার করুন মোমের আলোয়। অন্ধকারে শুধু আলো জ্বলা অংশটুকু আর আপনারাই সত্য। মনে রাখুন আধো আলো, আধো ছায়াতে আকর্ষণ বেঁচে থাকে।
আমি রাজি:
নিজের অপছন্দ ভূলে পার্টনারের সঙ্গে একমত হলে পার্টনারের যেমন ভাল লাগবে ঠিক তেমন আপনারও স্বাদবদল হবে। আপনার যেমন অ্যাকশন ছবি ভাল লাগে না তেমন আাপনার পছন্দের ইতালিয়ান ফুড আপনার পার্টনারের দুচোখের বিষ। কিন্তু বিশেষ দিনে কোনো কিছুতে না বলা উত্তম। তাই তার জন্মদিনে সবকিছুতে ‘আমি রাজি’ থিউরি প্রয়োগ করুন।
এই পথ যদি না শেষ হয় :
বাইক নেই? তাতে কী আসে যায়… মনটাই তো আসল, তাই সাইকেল থাকলেও চলবে। না হলে পায়ে হেটে গল্প করতে করতে চলে যেতে পারেন অনেক পথ। শুধু আপনি আর সে, সে আর আপনি। এতে সম্পর্কে নতুন অক্সিজেন আসবেই।
ভেসে যায় আদরের নৌকায় :
শহরের ধুলা আর ধোঁয়ায় মনট যখন বিরক্ত, তখন মনের মানুষের হাত ধরে বেরিয়ে পড়ুন নৌকা সফরে। নদীর পানিতে গোধূলীর আলো ঝিকমিক করবে, এই মুহূর্তে প্রতিদিনের পাংশুটে দিনগুলো ভূলে তার হাতে হাত রাখুন। নৌকার দাঁড়ের ছপ-ছপ শব্দ আর এক মায়বী বিকাল… এটি হতে পারে তার জন্মদিনের সেরা উপহার।
যে উপহার একান্ত নিজেদের :
প্রিয় মানুষকে সারপ্রাইজ গিফট দিতে চাইলে যত আগে থেকে প্রস্তুতি নেয়া যায়, ততই ভাল। নিজে হাতে কিছু তৈরি করে বা একটি ভাল ছবি এঁকে তাকে দিতে পারেন। প্রচলিত রীতি ভেঙে একটু ভিন্নতা আসতে পারে। অথবা আপনার ও তার যত ছবি আছে, সেগুলো সুন্দর করে একটি ক্যানভাসে সাজিয়ে তার সাথে বিখ্যাত সাহিত্যিকদের প্রেমের কবিতার লাইন ছড়িয়ে ছিটিয়ে কোলাজ করে দিতে পারেন। রেডিমেড গিফটের চেয়ে মনের অনেক কাছে পৌঁছাবে এই উপহার।
শহর থেকে অনেক দূরে :
চেনা শহরের অলিগলিতে ঘুরে প্রেম তো অনেক হলো, এবার নতুন কিছু ট্রাই করুন। পরস্পরের নিবিড় সানিধ্য পেতে হারিয়ে যান অজানার উদ্দেশ্যে। কোনো পরিকল্পনা ছাড়া হঠাৎ করেই উঠে যেতে পারেন দূরপাল্লার কোনো বাসে, আবার নেমে পড়তে পারেন নাম না জানা কোনো স্টেশনে। চেনা সম্পর্ক অচেনা মোড়কে এক্সপ্লোর করার এটি একটি দারুণ সুযোগ।
আজ থেকে আমাদের দ’জনের :
আপনার যে জিনিসটি আপনার প্রিয় মানুষেরও অনেক পছন্দের, আজ তাকে সেটি দিয়ে দিলে কেমন হয়? যা নিয়ে বহু খুনসুটি হয়েছে, ঝগড়া করে বলেছেন, ‘ওটা দেওয়া যাবে না, অসম্ভব…।’ আজ তাকে সেটিই দিয়ে দিন, এর চেয়ে সারপ্রাইজ আর কী হতে পারে? ‘যা আমার ছিল, আজ থেকে তা আমাদের’- এই স্টেটমেন্ট সম্পর্কের ভিত আরো শক্ত করবে।
ব্যাড হ্যাবিটকে বাই বলুন :
আপনার যে ব্যাড হ্যাবিটগুলো নিয়ে প্রিয় মানুষের সাথে প্রতিদিন ঝগড়া হয়, সেগুলোকে আজ থেকে বাই বলুন। একটি টপিক নিয়ে আর কত দিন টানাহ্যাঁচড়া করবেন। জন্মদিনের এই দুষ্টু-দিনে স্মোক করার ব্যাড হ্যাবিটকে গুডবাই বলুন। সম্পর্ক আরো মজবুত হবে।
যদি আজ দেখা না হয় :
তো কী হয়েছে! মোবাইল আছে না? ‘আজ সারাদিন তুমি আমার সাথে থেকো, মনের ক্যানভাসে জলরংয়ে ছবি এঁকো…’ এভাবে প্রিয় মানুষকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানিয়ে বার্তা লিখুন। নিজেরা নিজেদের অনুভূতি একে অপরের সাথে শেয়ার করে নিন।
পুরানো সেই দিনের কথা :
যেদিন তার সাথে প্রথম দেখা হয়েছিল সেই দিনকে ফিরে পেলে কেমন হয়? সেটা আর সম্ভব না! তবে প্রথম যেখানে দেখা হয়েছিল সেখানে দেখা করতে পারেন, প্রথম আলাপে যে পোশাক পরেছিলেন তা পরেই দেখা করুন। তাহলে ভালবাসার টাইম মেশিনে চড়ে চলে যাবেন সেই হারিয়ে যাওয়া সোনালী সন্ধ্যায়। দুরু-দুরু স্পন্দনে তাকে বলুন, ‘বহুদূর হেঁটে এসে তোমাকে চাই।’
মনের মল্লিকা তোমায় দিলাম…
আপনার জীবনে তার গুরুত্ব কতটা সেটা তাকে মিষ্টি করে বুঝিয়ে বলুন। প্রচুর হলুদ গোলাপ দিয়ে তৈরি একটি বোর্ডের মাঝখানে একটি লাল গোলাপ দিন। আর তার মেসেজ কার্ডে লিখুন লাল গোলাপ মানে আমর মনে শুধুই তুমি।
রচনা : রবিউল কমল
মডেল : জিতু চৌধুরী, পৃথা
ফটোগ্রাফি : এস এম রাসেল