ভ্রমণে সেরা দক্ষিণ বঙ্গের লঞ্চ
- প্রান্ত আচার্য
নদীমাতৃক দেশ হিসেবে এদেশের অভ্যন্তরীণ যাতায়াতে নৌপথের গুরুত্ব অপরিসীম। প্লেন ভ্রমণে ইচ্ছুক যাত্রীদের কথা আলাদা, তবে ঢাকা থেকে বরিশাল, পটুয়াখালী, ভোলা, ঝালকাঠিসহ দক্ষিণ বঙ্গের বিভিন্ন স্থানে ভ্রমণে লঞ্চ যোগে নৌপথই হতে পারে যাত্রীদের প্রথম পছন্দ।
ঢাকার বিভিন্ন স্থান থেকে যানজট আর মানুষের ভিড় ঠেলে সদরঘাট পৌঁছাতে যে ঝামেলা পোহাতে হবে, সে তুলনায় সদরঘাট থেকে লঞ্চে বরিশাল-পটুয়াখালী পৌঁছানোটা অনেক কম ঝামেলার। সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনাল থেকে দক্ষিণ বঙ্গের বিভিন্ন রুটে যাতায়াতের জন্য রয়েছে বেশ কিছু বিলাসবহুল লঞ্চ সার্ভিস। লঞ্চ গুলোতে রয়েছে লোয়ার ডেক, আপার ডেক, কেবিন ও বিজনেস ক্লাসসহ প্রায় ১০০০ থেকে ১২০০ জন যাত্রী ধারণক্ষমতা সম্পন্ন জায়গা।
ঢাকা থেকে পটুয়াখালীর পথে কথা হয় ছাত্র মুবদি সরোয়ারের সঙ্গে। বিভিন্ন ছুটিতে পটুয়াখালীতে বাবা-মায়ের কাছে যাওয়ার জন্য লঞ্চই সবচেয়ে সুবিধাজনক মনে করেন তিনি। তার ভাষ্যমতে, “বাসের তুলনায় লঞ্চে যাতায়াত অনেক বেশি সহজ এবং আনন্দেরও। রাতে যে কোনো একটা লঞ্চে উঠে পড়লেই হয়। লঞ্চে ডিনার সেরে এক ঘুম দিয়ে উঠতে না উঠতেই পৌঁছানো যায় পটুয়াখালীতে।”
ব্যবসায়ী ফাহাদ আজিজ বলেন, “শান্তির জন্য লঞ্চের থেকে আর ভালো কিছু নেই, নদীর এই অপরূপ সৌন্দর্য্যের ভিতর দিয়ে যখন বাড়ির পথে যাই পৃথিবীতে সব থেকে সুখী তখন নিজেকে মনে হয়।”
লঞ্চগুলোতে রয়েছে আধুনিক প্রযুক্তি ও বিভিন্ন ধরনের সুবিধা। এতে রয়েছে ডুপ্লেক্স কেবিন, ফুড কর্নার, যাত্রীদের জরুরি চিকিৎসাসেবার জন্য সিসিইউ ইউনিট, লিফটসহ আরও অনেক আধুনিক যাত্রীসেবা।
সুন্দরবন-৯ লঞ্চের সুপারভাইজর কুদ্দুছের সাথে কথা বলে জানা যায়, দুর্যোগ-দুর্ঘটনা যে কোনো সময় ঘটতে পারে। সড়কপথেও অনেক বেশি দুর্ঘটনা ঘটতে দেখা যায়। কিন্তু লঞ্চ একসঙ্গে অনেক মানুষ পরিবহন করে এবং দুর্ঘটনার সময় মাঝনদীতে উদ্ধার কাজ অনেক কষ্টকর হয় বলে লঞ্চে দুর্ঘটনার এতো ভয়াবহতা।
নিয়মিত মেরামত না করা এবং যান্ত্রিক ত্রুটিই লঞ্চ দুর্ঘটনার প্রধান কারণ মনে করেন তিনি। নিয়মিত মেরামত ও কোনো প্রকার যান্ত্রিক ত্রুটি না থাকলে এবং নিয়মিত মেরামত করালে অনেক প্রবল ঝড়ও সামাল দেওয়া সম্ভব। তবে সবসময়ই সতর্ক থাকা উচিত লঞ্চ কর্তৃপক্ষ-যাত্রী উভয়েরই। তাছাড়া নৌপুলিশ দায়িত্বশীল কাজ করলে লঞ্চ ডাকাতি থেকে যাত্রীদের নিরাপত্তা দেওয়া যায়।