পুরস্কার ফিরিয়ে দিয়ে এবার প্রতিবাদে বাংলাদেশে
নিউজ ডেস্ক: বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সাংবাদিক সমিতির দেওয়া পুরস্কার ফিরিয়ে দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন বাংলাদেশি কবি ও লেখক মারুফ বরকত। ধারাবাহিকভাবে লেখক-প্রকাশক হত্যা এবং তাদের ওপর হামলার প্রতিবাদের ভাষা হিসেবে নিজের পাওয়া পুরস্কার ফিরিয়ে দেবেন তিনি। আজ শনিবার ভোরে তিনি তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে লেখেন, “লেখক শিল্পীদের ওপর হামলা এবং এ ব্যাপারে সরকারের ‘নীরবতাই সম্মতির লক্ষণ’ অবস্থার প্রতিবাদে আমি আমার পুরস্কারটা প্রত্যাখ্যান করছি।”
মোরশেদুল ইসলাম পরিচালিত প্রিয়তমেষু চলচ্চিত্রের চিত্রনাট্য লেখার জন্য এই পুরস্কার পেয়েছিলেন মারুফ বরকত।
বাংলাদেশে সম্প্রতি ঘটে যাওয়া লেখক-প্রকাশকদের ওপর হত্যা ও হামলার ঘটনার প্রসঙ্গে মারুফ বরকত সাংবাদিকদের বলেন, ‘এটা আমি ফেরত দিচ্ছি এ কারণে যে বাংলাদেশে যাঁরা লেখালেখির সাথে জড়িত, যাঁরা সমাজে ইতিবাচক পরিবর্তনের কাজে জড়িত— তাঁদের হত্যা করা হচ্ছে। আমার মনে হয়েছে এসব ঘটনায় সরকারের মৌন সম্মতি রয়েছে। কারণ তারা কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না। এর প্রতিবাদ হিসেবে আমি আমার পাওয়া স্বীকৃতি ফিরিয়ে দিলাম।’
এই ঘোষণার পর অনেকের সাধুবাদ পেয়েছেন বলেও জানান মারুফ বরকত। তিনি তাঁর ফেসবুক স্টাটাসে আরো লেখেন, ‘আমি জানি না পুরস্কার কীভাবে ফেরত দিতে হয়। এটা কি পুরস্কার দাতা সংস্থার কাছে গিয়ে ফিরিয়ে দিয়ে আসতে হয়? নাকি ক্রেস্ট আর সার্টিফিকেট ডাস্টবিনে ফেলে দিতে হয়? নাকি ফেসবুকে ঘোষণা করলেই হয়?’
‘এটা আমি ফেরত দিচ্ছি এ কারণে যে বাংলাদেশে যাঁরা লেখালেখির সাথে জড়িত, যাঁরা সমাজে ইতিবাচক পরিবর্তনের কাজে জড়িত— তাঁদের হত্যা করা হচ্ছে। আমার মনে হয়েছে এসব ঘটনায় সরকারের মৌন সম্মতি রয়েছে। কারণ তারা কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না। এর প্রতিবাদ হিসেবে আমি আমার পাওয়া স্বীকৃতি ফিরিয়ে দিলাম।’
লেখক শিল্পীদের ওপর হামলা এবং এ ব্যাপারে সরকারের নীরবতার প্রতিবাদেই তাঁর এই পদক্ষেপ বলে জানান মারুফ। তিনি আরো বলেন, ‘জানি, আমার মতো ক্ষুদ্র মানুষের ক্ষুদ্রতর পুরস্কার পাওয়া বা প্রত্যাখ্যানে সরকার তো দূরের কথা, একটা পিঁপড়ারও কিছু আসবে যাবে না। তবু, এই দুঃসহ অবস্থা থেকে মুক্তি পেতে আমি আমার প্রতিবাদ জানিয়ে রাখলাম।’
তাহমিনা আমির নামের এক প্রবাসী তাঁর স্ট্যাটাসটি শেয়ার দিয়ে লিখেছেন— ‘শুরুটা তিনিই করলেন। মেহেদী হাসান সুমন নামে একজন কমেন্টে লিখেছেন, ‘মারুফ ভাই, আমার সুহৃদ। তিনি পারেন। তিনিই পারেন। যে পুরস্কারটি তিনি প্রত্যাখ্যান করলেন, সেই পুরস্কারটি পাবার জন্য তাঁকে অভিনন্দন জানিয়ে ছিলাম। আজ সেটা প্রত্যাখ্যান করায়, আবার তাঁকে অভিনন্দন জানালাম।
তাঁর স্ট্যাটাসটি নিজের ওয়ালে শেয়ার দিয়ে কবি ও সাংবাদিক ফারুক ওয়াসিফ লিখেছেন, ‘ছোট হলেও দারুণ । সে তার পুরস্কার প্রত্যাখ্যান করেছে।’ এর আগে ভারতে একের পর এক বেশ কয়েকটি সাম্প্রদায়িক হত্যাকাণ্ড ও হামলার ঘটনার নিন্দা জানিয়ে সেখানকার প্রগতিশীল লেখক-সাহিত্যিকদের অনেকেই নিজের পাওয়া বিভিন্ন পদক ও সম্মাননা প্রত্যাখ্যান করছেন। সে ধারাবাহিকতায় সবশেষ গত ৫ নভেম্বর জাতীয় পুরস্কার ফিরিয়ে দেওয়ার ঘোষণা দেন ভারতীয় লেখক অরুন্ধতী রায়। তবে বাংলাদেশে এই প্রথম এ ধরনের প্রতিবাদ জানালেন মারুফ বরকত। 
