হিমালয় শিখরে আবার লাল-সবুজ পতাকা
- নিউজ ডেস্ক
হিমালয়ের অন্যতম উঁচু শৃঙ্গ মেরা জয় করেছেন তিন বাংলাদেশি পর্বতারোহী। গত ১৫ অক্টোবর তারা ২১ হাজার ২২৭ ফুট (ছয় হাজার মিটার) উঁচু হিমালয়ের এই পর্বত শৃঙ্গে পৌঁছেন। সেখানে তারা লাল-সবুজের জাতীয় পতাকা উড়িয়ে দেন। এভারেস্টজয়ী পর্বতারোহী এমএ মুহিতের নেতৃত্বে এই দলে ছিলেন শায়লা পারভিন ও কাজি বাহরুল মজনু। দলের অন্য সদস্য সাদিয়া সুলতানা পাঁচ হাজার ২০০ মিটার পর্যন্ত আরোহণ করেন। বাংলা মাউন্টেইনিয়ারিং অ্যান্ড ট্র্যাকিং ক্লাব এই অভিযান পরিচালনা করে।
অভিযাত্রী দলটি গত ৪ অক্টোবর নেপালের উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করে। ৭ অক্টোবর হিমালয়ের ৯ হাজার ৩১৭ ফুট উঁচু লুকলা বিমানবন্দর থেকে ট্র্যাকিং শুরু করেন। প্রায় ৫০ কিলোমিটার হেঁটে ১২ অক্টোবর ১৬ হাজার ৫৫০ ফুট উচ্চতার বেসক্যাম্পে পৌঁছান। ১৪ অক্টোবর তারা ১৯ হাজার ফুট উচ্চতায় হাই ক্যাম্প স্থাপন করেন। ১৫ অক্টোবর রাত পৌনে ২টায় গাইড পেমবা দর্জি শেরপা ও ও লুকপা নুরু শেরপাকে সঙ্গে নিয়ে তিন পর্বতারোহী চূড়ান্ত আরোহণ শুরু করেন। প্রায় দুই হাজার ফুট খাড়া হিমবাহের দেয়াল বেয়ে নেপাল সময় সকাল ৭টা ২০ মিনিটে তারা মেরা শিখরে পৌঁছেন। উড়িয়ে দেন লাল-সবুজের বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা। দলনেতা এমএ মুহিত বলেন, দেশবাসীর দোয়ায় বিপদসংকুল এই পর্বতারোহণ সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে। ২১ হাজার ফুট উঁচুতে তুলে ধরেছি বাংলাদেশের পতাকা।
মেরা বিজয়ী শায়লা পারভিন বলেন, চূড়ায় উঠে আনন্দে বাকরুদ্ধ হয়ে গিয়েছিলাম। বার বার মনে পড়ছিল দেশের কথা, মায়ের কথা। এই দুর্গম অভিযানে প্রমাণিত হয়েছে এদেশের মেয়েরাও পারে। তারা কারও চেয়ে কম নয়।
গতকাল শুক্রবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে এই অভিযান নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করে মাউন্টেইনিয়ারিং ক্লাব। বিশিষ্ট অভিযাত্রী ইনাম আল হকের পরিচালনায় সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন অধ্যাপক জাফর ইকবাল, অর্থনীতিবিদ ও সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ড. হোসেন জিল্লুর রহমান এবং মানবাধিকার কর্মী অ্যাডভোকেট সুলতানা কামাল।
সুলতানা কামাল বলেন, যারা এসব দুঃসাহসী অভিযানে যায় তারা দেশের গর্ব। তারা সাহসের সঙ্গে বিশ্বের কাছে বাংলাদেশের পতাকাকে তুলে ধরে। তাদের মাধ্যমে দেশের ইতিবাচক ভাবমূর্তি গড়ে ওঠে। হোসেন জিল্লুর রহমান বলেন, পর্বতারোহণ শুধু মানসিক যোগ্যতা নয়, শারীরিক শক্তিমত্তার পরিচয় বহন করে; যা এই দেশের জন্য খুব প্রয়োজন। তিনি পর্বতারোহীদের দেশের পতাকার সঙ্গে প্রতি অভিযানে একটি করে দেশীয় মূল্যবোধ সম্পন্ন স্লোগান বহনের পরামর্শ দেন। ড. জাফর ইকবাল বলেন, এদেশের ছেলেমেয়েরা সমানভাবে এগিয়ে যাচ্ছে। মেরা অভিযানে এটা প্রমাণিত হয়েছে। এসব অভিযান অনেক ব্যয়বহুল, তাই দেশের বিত্তবানদের এই কাজে সহযোগিতার জন্য এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি।
মেরা অভিযান স্পন্সর করেছে আজিম গ্রুপ, ইস্পাহানি লিমিটেড ও চ্যানেল আই।