অনুপ চেটিয়াকে হস্তান্তর
নিউজ ডেস্ক: ভারতের বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন উলফার শীর্ষ নেতা অনুপ চেটিয়াকে ভারতের কাছে হস্তান্তর করেছে বাংলাদেশ।অনুপ চেটিয়ার সঙ্গে বাংলাদেশে বন্দী থাকা বাবুল শর্মা ও শক্তি প্রাসাদকেও ভারতে পাঠানো হয়েছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান আজ বুধবার এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, ‘তাঁর (অনুপ চেটিয়া) সাজা ভোগ আগেই শেষ হয়ে গেছে। তাঁর যাওয়ার বিষয়টির সঙ্গে নিরাপত্তার প্রশ্ন জড়িত ছিল। তাই তাঁকে নিরাপদে ভারতে ফেরত পাঠানো হয়েছে।’
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘নূর হোসেনকে ফিরিয়ে আনার সঙ্গে অনুপ চেটিয়াকে ফেরত দেওয়ার কোনো সম্পর্ক নেই। মামলা শেষে ভারত যখন নূর হোসেনকে ফেরত দেবে, তখন তাঁকে আনা হবে।’ আজ সকালে রাজধানীর মিরপুর ১০ নম্বরে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স ট্রেনিং কমপ্লেক্সে ফায়ার সার্ভিস সপ্তাহ-২০১৫-এর উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
প্রায় ১৫ বছর ধরে বাংলাদেশের কারাগারে বন্দী ছিলেন ইউনাইটেড লিবারেশন ফ্রন্ট অব আসামের (উলফা) এই শীর্ষ নেতা। ২০১৩ সালের দিকে তিনি নিজ দেশে ফিরে যাওয়ার আগ্রহ পোষণ করেন। এ আগ্রহের কথা জানিয়ে কারা কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে তিনি বাংলাদেশ সরকারের কাছে চিঠি পাঠিয়ে আবেদনও করেন।
অনুপ চেটিয়া যখন এ আবেদন করেন, তখন তিনি রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে নিরাপত্তা হেফাজতে ছিলেন। রাজশাহীর কারাগারের কারাধ্যক্ষ ইসমাইল হোসেন তখন প্রথম আলোর কাছে অনুপ চেটিয়ার এই চিঠির কথা স্বীকার করেছিলেন। তিনি জানিয়েছিলেন, অনুপ চেটিয়ার আবেদন ওই বছরের ১৩ মে ঢাকায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়।
উলফা নেতা অনুপ চেটিয়া চিঠিতে লিখেছেন, বাংলাদেশের কারাগারে থাকা তাঁর দুই সহচর লক্ষ্মীপ্রসাদ গোস্বামী ও বাবুল শর্মাকে নিয়ে তিনি নিজ দেশে ফিরতে চান।
অতীতে বিভিন্ন সময়ে অনুপ চেটিয়াকে ভারতের কাছে হস্তান্তর করার জন্য ওই দেশের পক্ষ থেকে বাংলাদেশ সরকারের ওপর চাপ ছিল। কিন্তু বাংলাদেশে রাজনৈতিক আশ্রয় চেয়ে ২০০৩ সালের ২৩ আগস্ট হাইকোর্টে আবেদন করেন এই উলফা নেতা। এ কারণে তাঁকে হস্তান্তরে আইনি জটিলতা ও দুই দেশের মধ্যে বন্দী প্রত্যর্পণ চুক্তি না থাকার কথাও বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল। পরে ২০১৩ সালের ২৯ জানুয়ারি ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে বন্দী প্রত্যর্পণ চুক্তি স্বাক্ষর হয়।
ভারতীয় গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, ২০০৯ সালের শেষ দিকে উলফার চেয়ারম্যান অরবিন্দ রাজখোয়াসহ সংগঠনের শীর্ষ পর্যায়ের প্রায় সব নেতাকে বাংলাদেশ থেকে ধরে ভারতের কাছে হস্তান্তর করা হয়। এরপর ২০১০ সাল থেকে দিল্লিতে ভারতীয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে উলফার শান্তি আলোচনা চলছে।