তাঁরা বিদেশি সিনেমার বাংলা সাবটাইটেলকারী
মো. সাইফ : কেমন হবে যদি আপনার প্রিয় হলিউড চলচ্চিত্র বাংলা ভাষায় দেখতে পারেন? অবাক হওয়ার কিছুই নেই। বাংলা সাবটাইটেল ব্যবহার করে বিদেশি ভাষার চলচ্চিত্রকে দেখতে পারবেন বাংলা ভাষায়।
হলিউড, বলিউড, ইরানি অথবা কোরিয়ান চলচ্চিত্রের বাংলা সাবটাইটেল তৈরি করছেন একদল তরুণ। তারা শুধু বিদেশি চলচ্চিত্রকে বাংলায় অনুবাদ করেই থেমে থাকেননি, বাংলা ভাষাকে ছড়িয়ে দিতে কালজয়ী বাংলা সিনেমার ইংরেজি অনুবাদ করার কার্যক্রমও শুরু করেছেন। এতে করে, বাংলা ভাষা না জানা মানুষ বাংলা সিনেমার কল্যাণে জানতে পারছে বাংলাদেশের ঐতিহ্য সম্পর্কে, বাংলাদেশের সংস্কৃতি সম্পর্কে।
বাংলাদেশে ২০১৩ সালের দিকে বাংলা সাবটাইটেল সম্পর্কে মানুষ ভালো ধারনা পাওয়া শুরু করলেও এর আগে ২০০৯ সাল থেকে অনুবাদকরা বাংলা সাবটাইটেল তৈরির কাজ শুরু করেন। রাজ নামে একজন অনুবাদক ৩ মে, ২০০৯ সালে প্রথম ‘স্লামডগ দ্যা মিলিয়নিয়ার’ সিনেমাটি বাংলায় অনুবাদ করেন। প্রথম নারী অনুবাদক হিসেবে ‘ব্যাটলশীপ’ নামে একটি সিনেমা অনুবাদ করেন নাসিমা।
তবে বর্তমানে বাংলা সাবটাইটেল যতটুকু জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে তার পিছনের মানুষটির নাম সাইমন এলেক্স। ১০০’রও বেশি সিনেমা অনুবাদ করা এই অনুবাদক এতই জনপ্রিয় যে অনেকে তাকে দেখে অনুপ্রাণিত হয়ে সিনেমা সাবটাইটেল তৈরিতে আগ্রহী হয়ে উঠছে।
বাংলা সাবটাইটেল দিয়ে যে শুধু সিনেমা দেখাই উপভোগ্য তা কিন্তু নয়। এর আরো কিছু উপকারিতা আছে। বিশেষত যারা ইংরেজিতে কিছুটা দুর্বল তারা বাংলা সাবটাইটেল দিয়ে সিনেমা দেখার ফলে ইংরেজীতে দক্ষতা কিছুটা হলেও বাড়ছে। প্রচুর ইংরেজি শব্দের বাংলা অর্থ জানার সুযোগ হচ্ছে।
সাবটাইটেলের জন্য সবচেয়ে জনপ্রিয় ওয়েবসাইট হচ্ছে ‘Subscene.com’। মুলত বেশিরভাগ মানুষ সাবটাইটেল ডাউনলোড করে থাকেন সাবসেন্স থেকে। বিশ্বের বিভিন্ন ভাষার সিনেমার সাবটাইটেল পাওয়া যায় এই সাইটে। এছাড়া নিজের তৈরি করা সাবটাইটেল এখানে আপলোড দেওয়া যায়। বর্তমানে এই সাইটে সাড়ে ছয় শোর বেশি সিনেমার বাংলা সাবটাইটেল রয়েছে। অনুবাদকরা আরও নতুন নতুন চলচ্চিত্রের সাবটাইটেলের কাজ করে যাচ্ছেন প্রতিনিয়ত।
এই পর্যন্ত অনুদিত চলচ্চিত্রের তালিকা পাবেন এই লিংকে (http://www.imdb.com/list/ls073990493/)
কোনো রকমের আর্থিক স্বার্থ নেই, তবুও বাংলা ভাষাকে ছড়িয়ে দেওয়ার কাজ নিরলসভাবে করে যাচ্ছেন সাবটাইটেল নির্মাতারা। পড়ালেখা কিংবা কাজের ফাঁকে সময় বের করে সাবটাইটেল তৈরিতে নেমে পড়েন তাঁরা। অনুবাদকদের যৌথ প্রচেষ্টার ফলে বাংলা সাবটাইটেল পেয়েছে নতুন পরিণতি।