চিলাই নদী বাঁচবে কি !
নিউজ ডেস্ক : বাংলাদেশ নদীমাতৃক দেশ। নদী গর্ভেই জন্মেছে আমাদের প্রিয় এ দেশটি। দেশব্যাপী জালের মত ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে হাজারো নদ-নদী। তেমনি একটি নদী চিলাই, যা গাজীপুরের প্রাণের স্পন্দন। গাজীপুরকে জালের মত জড়িয়ে রেখেছে এ নদীটি।
স্বভাব কবি গোবিন্দ দাস আর ভাওয়াল রাজার স্মৃতি বিজরিত এ নদীটি আজ শীর্ণ হতে হতে মরা গাঙ্গে পরিণত হয়েছে। ভানু শীলসহ শত শত শহীদের রক্তে ভেজা এ নদী আজ গাজীপুরের মানচিত্র থেকে হারিয়ে যাচ্ছে। প্রবাদ আছে, খরস্রোতা এ নদীটি এতই প্রশস্ত ছিল যে চিল উড়ে যেতেও হিমশিম খেত। তা থেকেই এ নদীর নাম হয়েছে চিলাই।
ঈশা খাঁ ও মানসিংহের মধ্যকার ঐতিহাসিক নৌযুদ্ধও এ নদীতে সংগঠিত হয়েছিল । ঐতিহাসিক গুরুত্ব সম্পন্ন এ নদীটি আজ হারিয়ে যেতে বসেছে।
তাই এ নদীটি পুনরুদ্ধারের দাবিতে চিলাই নদী বাঁচাও আন্দোলন ২৭ ফেব্রুয়ারী এক মানববন্ধনের আয়োজন করে। উক্ত মানববন্ধনে সংগঠনের সভাপতি এডভোকেট মো. জালাল উদ্দীন ভান্ডারীর সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন শহর আওয়ামীলীগের সভাপতি এড. ওয়াজ উদ্দিন মিয়া, গাজীপুর জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারন সম্পাদক এড.মো. এমরান হোসেন, কমিউনিস্ট পার্টি জেলা সভাপতি জয়নাল আবেদীন, বাংলাদেশ নদী পরিব্রাজক দলের সভাপতি মনির হোসেন, তুরাগ বাঁচাও আন্দোলনের সভাপতি মনোয়ার হোসেন রনি, বাংলাদেশ নদী পরিব্রাজক দলের যুগ্ম সম্পাদক প্রকৌশলী জেমাম আহমেদ, সম্প্রসারণ সম্পাদক মো. মোখলেসুর রহমান, মুক্তিযোদ্ধা হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক মো. হানিফ প্রমুখ।
উক্ত মানববন্ধনে বক্তারা নদী রক্ষায় বিভিন্ন দাবী পেশ করেন। এর মধ্যে সিএস ম্যাপ অনুযায়ী নদী পুনরুদ্ধার করে নদীর সীমানা পিলার নির্ধারন, দখলদার উচ্ছেদ, প্লাবন ভূমি ব্যবহার নীতিমালা বাস্তবায়ন, নদীর পাড় রক্ষায় নদীর পাড়ে হিজল, তাল, গাব গাছ রোপন প্রকল্প প্রনয়ণ, নদীর উপর নির্মিত সেতুর নাম ফলকে নদীর নাম লিখন, নদী বান্ধব অর্থনীতি ও পর্যটন ব্যবস্থা প্রবর্তন উল্লেখযোগ্য।
আরো উল্লেখ্য যে, চিলাই নদীর ২৩ কিলোমিটারব্যাপী ৮ টি স্থানে এ মানবন্ধনে নদী তীরবর্তী হাজার হাজার মানুষ অংশগ্রহণ করে তাদের প্রাণের নদী চিলাই বাঁচানোর দাবী জানান। স্থানগুলো হলো শেরেলিয়াবাড়ী, গাজীতলা, মহলঘাট, শ্মশানঘাট, হানকাঁটা ব্রীজ, তিতারকুল ব্রীজ, কানাইয়া বাজার, পূবাইল বাাজার। আর এ দাবীতে সংহতি প্রকাশ করেন মুক্তিযোদ্ধা হাই স্কুল, এপেক্স ক্লাব অব গাজীপুর, কালেরকণ্ঠ শুভসংঘ গাজীপুর জেলা শাখা, বাংলাদেশ নদী পরিব্রাজক দল, অঙ্গনা সাংস্কৃতিক কেন্দ্রসহ বিভিন্ন সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠন ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।