প্রশিক্ষিত জনশক্তি রপ্তানির উদ্যোগ নিতে হবে
বিশ্ব অর্থনৈতিক মন্দা অভিবাসীদের জন্য দুর্দিন ডেকে এনেছে। দুনিয়ার অনেক দেশ নিজেদের নাগরিকদের রুটি-রুজির স্বার্থে অভিবাসীদের দরজা বন্ধ করার উদ্যোগ নিচ্ছে। গত এক দশক ধরে বিশ্ব অর্থনীতিতে মন্দার যে কালো স্রোত বইছে, অভিবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্সের আশীর্বাদে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে তার কুফল খুব একটা অনুভূত হয়নি। কিন্তু এখন বাংলাদেশের জন্যও তা মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বাংলাদেশের অভিবাসী আয়ের বড় অংশ আসে তেল উত্পাদনকারী মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো থেকে। তেলের দামে ধস নামায় এসব দেশের অর্থনীতি মারাত্মক সংকটের মুখে পড়েছে। যার পরিণতিতে সংকুচিত হয়ে পড়ছে অভিবাসীদের কাজের ক্ষেত্র। আগের চেয়ে কম বেতনেও তারা কাজ করতে বাধ্য হচ্ছে। বাংলাদেশ থেকে চলতি বছর গত বছরের চেয়ে বেশি লোক বিদেশের শ্রমবাজারে কাজ পেলেও অভিবাসী আয় কমে গেছে উদ্বেগজনকভাবে। অভিবাসীদের আয় হ্রাস পেলেও তাদের বিদেশে যাওয়ার খরচ কমেনি। এ ক্ষেত্রে সরকার ঘোষিত ফি আর বাস্তবের মধ্যে পার্থক্য আকাশ-পাতাল। এ মুহূর্তে বিশ্বের ১৬১টি দেশে বাংলাদেশের এক কোটি মানুষ কর্মরত। অভিবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স একদিকে যেমন দেশের অর্থনীতিকে শক্ত ভিত পেতে সাহায্য করছে তেমন জাতীয় অগ্রগতির সোপান নির্মাণেও তারা রেখেছেন অনবদ্য ভূমিকা। বিদেশে বাংলাদেশ থেকে অদক্ষ কর্মী হিসেবে যারা গেছেন তাদের এক বড় অংশ দক্ষ শ্রমিকে পরিণত হয়েছেন নিজেদের যোগ্যতা বলে। বিদেশ থেকে অর্জিত জ্ঞানকে কাজে লাগিয়ে অনেকে দেশে ফিরে বিভিন্ন ক্ষেত্রে সাফল্যের মুখ দেখাতে সক্ষম হয়েছেন। দেশে কর্মসংস্থানের সুযোগ সীমিত হওয়ায় বিদেশে জনশক্তি রপ্তানি অন্ধকারের মধ্যে আশার আলো হিসেবে বিরাজ করছে। এ ক্ষেত্রে সাফল্য পেতে হলে প্রশিক্ষিত কর্মীদের বিদেশে পাঠানোর দিকে নজর দিতে হবে। এটি সম্ভব হলে কমসংখ্যক লোক পাঠিয়েও বেশি রেমিট্যান্স অর্জন সম্ভব হবে। পাশাপাশি রেমিট্যান্স আয়ের পুরোটা যাতে ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে দেশে আসে সে বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে। হুন্ডি বা অন্য মাধ্যমে দেশে অর্থ পাঠানোর যে প্রবণতা অভিবাসীদের মধ্যে রয়েছে তা নিরুত্সাহিত করতে নিতে হবে কার্যকর উদ্যোগ। সূত্র: ইত্তেফাক |