কিউএস ইউনিভার্সিটি র্যাংকিং কী
- ক্যাম্পাস ডেস্ক
পৃথিবীজুড়ে ছড়িয়ে থাকা বিশ্ববিদ্যালয়গুলো নিয়ে যে র্যাংকিং হয়, তারমধ্যে ‘টাইমস হায়ার এডুকেশন’ এবং ‘কিউ এস’ র্যাংকিং সবচেয়ে বেশি গ্রহণযোগ্য তাবৎ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর কাছে। এটি মূলত নির্ভর করে কোন পদ্ধতির মাধ্যমে র্যাংকিং করা হয়েছে তার ওপর। এ দুটি র্যাংকিংয়ের ক্ষেত্রে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর রেটিং করা হয়। এ ক্ষেত্রে কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষকের অনুপাত, বিদেশি শিক্ষার্থীর সংখ্যা, বিদেশি শিক্ষকের সংখ্যা, গবেষণা প্রকাশনা, কোন জার্নালে সেটি প্রকাশ করা হলো, কতবার সেটি সাইট করা হলো, গবেষণা প্রকল্প, অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে শিক্ষা ও গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা, সাবেক ও বর্তমান ছাত্রছাত্রীদের অবস্থান—সবকিছু বিবেচনায় নেওয়া হয়ে থাকে। আর এজন্য ‘কিউএস’ এবং ‘টাইমস হায়ার এডুকেশন’ র্যাংকিংটি পৃথিবীর বড় ও নামকরা বিশ্ববিদ্যালয়গুলো থেকে শুরু করে প্রায় সব জায়গাতেই গ্রহণযোগ্য।
ইংল্যান্ড, আমেরিকা কিংবা ইউরোপের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে ঢুকলে দেখা যাবে, ‘টাইমস হায়ার এডুকেশন’ অনুযায়ী তাদের বিশ্ববিদ্যালয় কত নম্বরে আছে সে তথ্য তারা দিয়ে রেখেছে। এ থেকেই বোঝা যায় এর গুরুত্ব কতখানি হতে পারে।
কিউএস র্যাংকিংয়ে বাংলাদেশের অবস্থান
এই গুরুত্বপূর্ণ র্যাংকিংয়ে এবার বাংলাদেশের ৬টি বিশ্ববিদ্যালয় স্থান করে নিয়েছে। গত ২৪ অক্টোবর এশিয়ার সেরা ৫০০ বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকা প্রকাশ করেছে ব্রিটিশ প্রতিষ্ঠান কিউএস। সেই তালিকায় বাংলাদেশের ৬টি বিশ্ববিদ্যালয় স্থান পেয়েছে। তালিকার ১২৭ নম্বরে আছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ১৭৫ নম্বরে বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়। ৩০১ থেকে ৩৫০ এর মধ্যে আছে ব্রাক ইউনিভার্সিটি, নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি, ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি এবং ৪৫১ থেকে ৫০০ এর মধ্যে আছে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি।
কিউএস র্যাংকিং কেন গুরুত্বপূর্ণ
শুধু যে পৃথিবীর নামকরা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতেই এই র্যাঙ্কিংয়ের গুরুত্ব দেওয়া হয় তাই নয়, অনেক ক্ষেত্রে পৃথিবীর নানা ইমিগ্রেশন ও ভিসা অফিসেও এর গুরুত্ব রয়েছে। সুইডেনের লুন্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করা শিক্ষার্থী ওয়ালিউর রশিদ এমনই এক অবিজ্ঞতার কথা লিখেছেন তাঁর ফেসবুকে—‘আমি যখন সুইডেনের লুন্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মাস্টার্স করে ডেনমার্কের গ্রিনকার্ডের জন্য আবেদন করেছিলাম, তখন দেখা গেল ওদের ওখানে পয়েন্ট সিস্টেম প্রচলিত আছে। ১০০ পয়েন্ট পেলে গ্রিনকার্ড পাওয়া যাবে। এর মাঝে শিক্ষা, গবেষণা, অভিজ্ঞতা, ভাষার জন্য আলাদা আলাদা পয়েন্ট আছে। এ ছাড়াও কেউ যদি ‘কিউএস’ কিংবা ‘টাইমস হায়ার এডুকেশন’ র্যাঙ্কিংয়ে থাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়াশোনা করে থাকে, তার জন্য রয়েছে বোনাস পয়েন্ট। এই যেমন র্যাঙ্কিংয়ে পৃথিবীর প্রথম ১০০টি বিশ্ববিদ্যালয়ের মাঝে কেউ যদি পড়াশোনা করে থাকে, তাহলে ২০ পয়েন্ট এমনি এমনি পেয়ে যাবে। প্রথম ২০০টির মাঝে থাকলে ১৫ পয়েন্ট আর প্রথম ৪০০টির মাঝে থাকলে ১২ পয়েন্ট। আমি নিজে যেহেতু সেই সময়ের র্যাঙ্কিংয়ে প্রথম ১০০টি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেছি, তাই ২০ পয়েন্ট এক্সট্রা পেয়ে গিয়েছিলাম। অর্থাৎ সেরা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার একটা ক্যাপিটাল রিওয়ার্ড আমি পেয়েছিলাম।’
সুতরাং বলার অপেক্ষা রাখে না, র্যাংকিং সিস্টেমের যথেষ্ট মূল্য রয়েছে। র্যাংকিংয়ে থাকা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ছাত্র ও শিক্ষকদের মাঝে এক ধরনের স্পৃহা কাজ করে নিজেদের আরও মেলে ধরার জন্য, আরও এগিয়ে যাওয়ার জন্য। নিজেদের মান সম্পর্কেও একটা ধারণা পাওয়া যায়। তাই বাংলাদেশে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর এদিকে নজর দেওয়ার যথেষ্ট কারণ রয়েছে।