কম্পিউটার নেই, ব্ল্যাক বোর্ডেই ‘মাইক্রোসফট ওয়ার্ড’ শেখালেন শিক্ষক
- সংবাদ ডেস্ক
কম্পিউটার নেই। তাই বলে কি থেমে থাকবে প্রযুক্তি শেখার ক্লাস? মাথায় হাত দিয়ে ভাবতে বসলেন ঘানার সেকিডুমাস সিনিয়র হাইস্কুলের শিক্ষক ওউরা কাওদো হতিশ। অনেক ভেবে কূল কিনারা না পেয়ে ‘ধুর ছাই! হাতে এঁকেই শেখাব’ বলে ব্ল্যাক বোর্ডে চক দিয়ে মাইক্রোসফট অফিস ওয়ার্ডের ছবি আঁকতে শুরু করলেন তিনি। আঁকা শেষে শিক্ষার্থীদের দিকে তাকিয়ে বোঝাতে শুরু করলেন কীভাবে কম্পিউটারের মাধ্যমে মাইক্রোসফট ওয়ার্ডে লিখতে হয়। ছবি বরাবর তীর চিহ্ন দিয়ে বোঝাতে শুরু করলেন—এখানে ক্লিক করলে লেখা বোল্ড হবে, এখানে ক্লিক করলে ইতালিক হবে। এখানে ক্লিক করলে লেখার এলাইনমেন্ট ঠিক হবে, এখান থেকে লাইন স্পেস ঠিক করা যায়, আর এখানে রয়েছে রঙ বেছে নেওয়ার অপশন ইত্যাদি।
হতিশ যখন এভাবে পড়াচ্ছিলেন খুদে ছেলেমেয়েদের, তখন ছাত্রদের মধ্যেই কেউ একজন মোবাইল ফোনে ছবি তুলেছে তার। তারপর সেই ছবি দেখিয়েছে প্রিয় স্যারকে। হতিশ খুশি হন এবং কি মনে করে ছবিটা নিজের ফেসবুকে পোস্টও করে দেন। তারপর বাকিটা ইতিহাস। রীতিমতো ভাইরাল হয়ে গেলেন হতিশ। মুহূর্তেই হাজার হাজার শেয়ার, লাইক, কমেন্ট।
অনেকেই অভিনন্দন জানালেন হতিশকে। অনেকে করলেন প্রশংসা—অভাবনীয়! অতুলনীয়! এমন ত্যাগী শিক্ষকই তো চাই! আপনাকে পুরস্কৃত করা উচিত। কেউ কেউ অবশ্য মুখ ভেংচালেন—সবই শো অফ। ব্ল্যাক বোর্ডে মাইক্রোসফট ওয়ার্ডের কাজ শিখিয়েছেন, বেশ ভালো কথা। তা ফেসবুকে ছবি দেওয়ার মানে কি বাপু!
‘একুশ শতকে এসে এমন দৃশ্য দেখা সত্যিই বেদনাদায়ক। কম্পিউটারের অভাবে একজন শিক্ষককে প্রযুক্তির বিষয় শেখাতে হচ্ছে ব্ল্যাক বোর্ডে। ভাবা যায়!’ এমন মন্তব্য করেছেন কেউ কেউ। তাদের মধ্যে অনেকেই আবার এগিয়ে এসেছেন স্কুলটিতে কম্পিউটার উপহার দেয়ার জন্য।
স্থানীয় এক পত্রিকায় দেওয়া সাক্ষাৎকারে হতিশ বলেছেন, ঘানার অবস্থা ধীরে ধীরে উন্নত হচ্ছে। স্কুলের ছেলেমেয়েদেরকে তথ্যপ্রযুক্তি শিক্ষায় শিক্ষিত করতে সরকার অনেক আন্তরিক। সরকারের তরফ থেকে অনেক উদ্যোগও গৃহীত হয়েছে।
‘তবে সেকিডুমাস সিনিয়র হাইস্কুলের মতো এমন স্কুলের সংখ্যাও নেহাত কম নয়, যেখানে ন্যূনতম একটি কম্পিউটারও নেই ক্লাসরুমে।’ বলেছেন ওউরা কাওদো হতিশ।
সূত্র: এনডিটিভি
ইংরেজি থেকে অনুবাদ: মারুফ ইসলাম