কংক্রিটের বুকে সবুজের ছোঁয়া
- তৌহিদুল ইসলাম
ছাদ কৃষি—এ যেন কংক্রিটের বুকে সবুজের ছোঁয়া। ইট পাথরের এই নগরীতে দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে সবুজ। এক একটি ইমারতের পেছনের গল্পে লুকিয়ে আছে বহু গাছের প্রাণ উৎসর্গের ইতিকাব্য। নজরুল ইসলাম, যিনি একজন মুক্তিযোদ্ধা। ৭১-এ যুদ্ধ করেছিলেন দেশের জন্য, বর্তমানে লড়াই করছেন সবুজের বিপ্লব ঘটাতে। মধ্যবাড্ডায় নিজ বাড়ীতে গড়ে তুলেছেন শখের ছাদ কৃষি।
শাইখ সিরাজের হৃদয়ে মাটি ও মানুষ থেকে শুরু করে বর্তমানে ছাদ কৃষি অনুষ্ঠানের প্রতিটি পর্ব তাকে অনুপ্রাণীত করেছে প্রতিটি পদ্দক্ষেপে। নজরুল ইসলাম বলেন, শাইখ সিরাজের কর্মকাণ্ডে আমি উদ্বুদ্ধ হয়েছি। আমি নিজেই আমার ছাদে স্বল্প পরিমিত জায়গায় আমার ছাদ বাগানটি যথাযথ প্রক্রিয়ায় বড় করার প্রচেষ্টা চালাচ্ছি।
তার এই ছাদ কৃষিতে রয়েছে থাইল্যান্ড, পাকিস্তানের আম, দেশি লেবু, দেশি মালটা, জামরুল, কমলা, আনারস, পেয়ারা বিভিন্ন শাক-সবজির মধ্যে লাউ শাক, টমেটো, বেগুন, মরিচসহ দেশি-বিদেশি মিলে মিলে ৪০ প্রজাতির ফল ও সবজির গাছ আছে। প্রতিটি গাছ যেন তার পরিবারের এক একটি অংশ।
নজরুল ইসলাম বলেন, পরিবেশ রক্ষায় সবাইকে সবুজের প্রতি এগিয়ে আসতে হবে। বিশেষ করে ঢাকা শহরে যেভাবে বয়ু দূষণের মাত্রা বৃদ্ধি পাচ্ছে সেক্ষেত্রে গাছপালার বিকল্প নেই। পরিবেশ ঠিক রাখার জন্য আমদের মতো ছাদ বাগান করতে যারা আগ্রহী, তাদের সকলকে এগিয়ে আসা উচিত। যেহেতু ঢাকা শহর ছোট, পরিমতি জায়গা, তাই যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে প্রতি ছাদেই ছাদ বাগান করা উচিত ।
ড্যাফডিল বিশ্ববিদ্যালয়ের এনভাইরমেন্ট সাইন্স এন্ড ডিজেষ্টার ম্যানেজমেন্ট বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক এবং বিভাগীয় প্রধান ড. এ বি এম কামাল পাশা বলেন, যথাযথ প্রক্রিয়ার ছাদ কৃষি করা গেলে নিঃসন্দেহ পরিবেশ এবং আমাদের সকলের জন্য সুফল বয়ে আনবে। ছাদ কৃষি করার যে প্রক্রিয়া আছে তা অবশ্যই মানতে হবে। ঢাকা শহরে গাছের সংখ্যাও কম, সেক্ষেত্রে ছাদ কৃষির মাধ্যমে যদি সবুজ করতে পারা যায়, তাহলে অবশ্যই অক্সিজেন ও কার্বন ডাই অক্সাইডের ভারসাম্য অনেক অংশে কমিয়ে আনা সম্ভব। তিনি আরও বলেন, গাছের ভূমিকা পরিবেশের জন্য অপরিসীম।
এমন ছাদ বাগান পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষার পাশাপাশি বিষমুক্ত ফল নিশ্চিত করতে পারে বলে মত বিশ্লেষকদের।
তৌহিদুল ইসলাম : শিক্ষার্থী, সাংবাদিকতা ও গণযোগাযোগ বিভাগ, ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি