ভবিষ্যৎ শিক্ষা ব্যবস্থায় পরিবর্তন আনবে যে ৯টি বিষয়

ভবিষ্যৎ শিক্ষা ব্যবস্থায় পরিবর্তন আনবে যে ৯টি বিষয়

  • আল-মোমিন

প্রযুক্তি আমাদের চারপাশের বিশ্বকে দ্রুত পরিবর্তন করছে, তাই অনেকেই আশঙ্কা করছেন যে মানুষের বুদ্ধির বিকল্প হিসেবে দাঁড়িয়ে যাবে প্রযুক্তি। কিছু শিক্ষাবিদরা আশঙ্কা করছেন যে ভবিষ্যতে শিক্ষার্থীরা আর পড়াশুনার জন্য কারো ওপর নির্ভরশীল থাকবে না, কারণ প্রযুক্তি আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থাকে কয়েক দশক ধরে আরো সহজ করে দিয়েরছ। তবে শিক্ষা কখনোই অদৃশ্য হবে না। এখানে ৯​​টি বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে  যা পরবর্তী কুড়ি বছরের মধ্যে শিক্ষা গ্রহণের  ধরন হিসেবে রূপ নেবে।


১. স্থান ও সময়

শিক্ষা গ্রহণের জন্য যে শ্রেণিকক্ষে যেতে হবে এমনটি নয়। এখন শিক্ষার্থীরা ই-লার্নিং ব্যবহার করে শ্রেণিকক্ষে না গিয়েও শিক্ষা গ্রহণ করতে পারবে। যেকোন যায়গায় বসে এবং যেকোন সময়ে শিক্ষা গ্রহণ করা সম্ভব।

২. ব্যক্তিগতভাবে শেখা

প্রতিটি শিক্ষার্থীর তার নিজের শক্তি, চাহিদা এবং স্বার্থের জন্য নিজ উদ্যোগে শিখবে। এজন্য শিক্ষার্থী নিজেই বেছে নেবে যে সে কখন, কীভাবে এবং কোথায় শিখবে। আমরা জানি সকল শিক্ষার্থীর বোঝার সামর্থ একরকম নয়। ব্যক্তিগতভাবে শেখার একটি বড় সুবিধা হলো, শিক্ষার্থীরা যদি কোনও বিষয় নিয়ে সমস্যার সম্মুখীন হয়, তবে তারা প্রয়োজনীয় স্তরে না পৌঁছানো পর্যন্ত আরও অনুশীলনের সুযোগ পায়। এতে শিক্ষার্থীদের শেখার প্রক্রিয়া এবং ইতিবাচকতা শক্তিশালী হবে।

৩. স্বাধীন ইচ্ছা

সকল শিক্ষার্থী সকল বিষয়ে পারর্দশী হবে বা সকল বিষয় ভালো লাগবে এমনটা নয়। কারো ইতিহাস ভালো লাগে আবার কারো গণিত। একইভাবে ব্যক্তিগত উদ্যোগে শেখার ফলে, শিক্ষার্থীরা তাদের নিজস্ব পছন্দ অনুসারে বিভিন্ন ডিভাইস, বিভিন্ন প্রোগ্রাম এবং কৌশলগুলি শিখবে।

৪. প্রকল্পভিত্তিক

শিক্ষা গ্রহণের মূল উদেশ্য হল, ভবিষ্যতের জন্য নিজেকে প্রস্তুত করা। প্রকল্পভিত্তিক শেখার ফলে আমরা যেকোন সাংগঠনের সাথে সহজে মানিয়ে নিতে পারবো। শিক্ষার্থীদের উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রকল্পভিত্তিক শিক্ষার সাথে ইতিমধ্যে পরিচিত হওয়া উচিত। এটি তখনই যখন সাংগঠনিক, সহযোগী এবং সময় পরিচালনার দক্ষতাগুলিকে বেসিক হিসাবে শেখানো যেতে পারে যা প্রতিটি শিক্ষার্থী তাদের ভবিষ্যৎ কর্মজীবনে ব্যবহার করতে পারে।

৫. মাঠের অভিজ্ঞতা

যেহেতু প্রযুক্তি নির্দিষ্ট কার্যক্ষেত্রকে আরও দক্ষ করে তুলতে পারে, সুতরাং পাঠ্যক্রমটি এমনভাবে তৈরি করা হবে যেখানে সাধারণ ও মিথস্ক্রিয়া প্রাধান্য পাবে। সুতরাং, কোর্সের মধ্যেই মাঠের অভিজ্ঞতার উপর জোর দেওয়া হবে। স্কুলগুলি শিক্ষার্থীদের বাস্তব-বিশ্বের দক্ষতা অর্জনের দিকে আরও বেশি গুরুত্ব দিবে।

৬. উপাত্ত ব্যাখ্যা করা

যদিও গণিতকে তিনটি স্বাক্ষরতার মধ্যে একটি হিসাবে বিবেচনা করা হয়, তবে সন্দেহ নেই যে এই সাক্ষরতার ম্যানুয়াল অংশটি অদূর ভবিষ্যতে অপ্রাসঙ্গিক হয়ে উঠবে। কম্পিউটারগুলি শীঘ্রই প্রতিটি পরিসংখ্যান বিশ্লেষণের দায়িত্ব নেবে, ডেটা বর্ণনা ও বিশ্লেষণ করবে এবং ভবিষ্যতের প্রবণতাগুলির পূর্বাভাস দিবে। সুতরাং, এই তথ্যগুলির মানবিক ব্যাখ্যা ভবিষ্যতের পাঠ্যক্রমে অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ অংশে পরিণত হবে।

৭. পরীক্ষার ধরণ পরিবর্তন হবে

কোর্সওয়্যার প্ল্যাটফর্মগুলি প্রতিটি পদক্ষেপে শিক্ষার্থীদের দক্ষতার মূল্যায়ন করবে, প্রশ্নোত্তর মাধ্যমে তাদের দক্ষতা পরিমাপ অপ্রাসঙ্গিক হয়ে পড়বে। অনেকের যুক্তি যে, পরীক্ষাগুলি এখন এমনভাবে ডিজাইন করা হয়েছে, যাতে শিক্ষার্থীরা তাদের পাঠ্যগুলি মুখস্ত করে এবং পরের দিনই ভুলে যায়। শিক্ষকরা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন যে, যেভাবে পরীক্ষাগুলি নেওয়া হয়, তাতে শিক্ষার্থীরা ভবিষ্যৎ চাকরির জন্য যোগ্য হয়ে গড়ে উঠতে পারছে না।

৮. শিক্ষার্থীর মালিকানা

শিক্ষার্থীরা তাদের পাঠ্যক্রম তৈরির সঙ্গে আরও বেশি করে জড়িত হবে। সমসাময়িক, যুগোপযোগী এবং দরকারী এমন একটি পাঠ্যক্রম তৈরি করা হবে যেখানে পেশাদারদের পাশাপাশি ‘তরুণরা’ জড়িত থাকবে।

৯. পর্যবেক্ষণ আরও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে

আগামী বিশ বছরের মধ্যে শিক্ষার্থীরা তাদের শেখার প্রক্রিয়াতে এতটা অন্তর্ভুক্ত হবে যে, শিক্ষার্থীরাই পরামর্শ দেওয়ার মতো মৌলিক জ্ঞান অর্জন করতে পারবে। শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের চলার পথ সুগম করবে।

সূত্র: ই-লার্নিং ইন্ডাস্ট্রি

ইংরেজি থেকে অনুবাদ : আল-মোমিন। শিক্ষার্থী, জেএমসি বিভাগ, ডিআইইউ।

Sharing is caring!

Leave a Comment