ইন্দোনেশিয়ার টাকায় গণেশ দেবতার ছবি থাকে কেন?
- তানজিল হোসেন
ইন্দোনেশিয়া একটি মুসলমান অধ্যুষিত দেশ, যেখানে সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ ইসলাম ধর্মকে অনুসরণ করে। দেশটির মোট জনসংখ্যার প্রায় ৮৯ শতাংশ মুসলমান।
হাজার হাজার বছর আগে ইন্দোনেশিয়ায় ইসলাম আসার আগে হিন্দু ধর্ম একটি খুব জনপ্রিয় ছিল এবং সারা দেশে বেশ কয়েকটি প্রাচীন মন্দির রয়েছে।
ইন্দোনেশিয়ায় হিন্দু প্রভাবের বিভিন্ন উদাহরণগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো ২০,০০০ রুপিয়া নোট। নোটটির সামনের দিকে হাজার দেওয়ন্তরার একটি চিত্রের পাশাপাশি হিন্দু দেবতা গণেশের একটি শিলালিপি রয়েছে।
নোটে দেবতা গণেশের শিলালিপি ছাড়াও ইন্দোনেশিয়া বিভিন্ন ধরণের হিন্দু সংস্কৃতিতে সমৃদ্ধ । অর্জুন বিজয়া মূর্তিটি জাকার্তা চত্বরে একটি ঐতিহাসিক নিদর্শন। এবং হনুমান ইন্দোনেশিয়ার সামরিক গোয়েন্দাদের সরকারী মাস্কট। গারুদা পানকাসিলা ইন্দোনেশিয়ার জাতীয় প্রতীক। এটি হিন্দু পৌরাণিক পাখি গারুদা দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়েছে। তদুপরি, একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বান্দুং ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজিতে লোগো হিসাবে গণেশের প্রতিকৃতি রয়েছে। এছাড়াও ইন্দোনেশিয়ার বিভিন্ন সরকারী বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে হিন্দু দেবতা গণেশের ছবি লক্ষ্য করা যায়।
দেশজুড়ে প্রচুর হিন্দু নিদর্শন পরিলক্ষিত হয়। এছাড়া এখানকার স্থানীয়দের মধ্যে রামায়ণ-মহাভারতের গল্পগুলি বেশ প্রচলিত।
মুদ্রায় গণেশের চিত্র থাকার অন্যতম একটি কারণ হতে পারে ইন্দোনেশিয়ায় হিন্দু সংস্কৃতির এতো জোরালো উপস্থিতি এবং এই ধর্মের প্রতি সম্মান প্রদর্শন। এছাড়া আরেকটি লোক কথাও এখানকার মানুষের মুখে প্রচলিত। তা হচ্ছে,
ডা. সুব্রমনিয়ান স্বামী একবার ইন্দোনেশিয়ার অর্থমন্ত্রীর কাছে তাদের মুদ্রার নোটে গণেশের চিত্র সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করেছিলেন। মন্ত্রী ব্যাখ্যা করেছিলেন যে ১৯৯৭ সালে বেশ কয়েকটি এশীয় দেশের মুদ্রাস্ফীতি হচ্ছিলো। তো এই স্ফীতি রোধ করার সমস্ত প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়ে যাওয়ার পরে, কেউ কেউ পরামর্শ দিয়েছিলেন যে তাদের কাছে দেবতা গণেশের একটি চিত্র রয়েছে, যেটা মুদ্রায় ব্যবহার করলে সৌভাগ্য বয়ে আনবে। সেই থেকে চিত্রটি নোটে থেকে যায় এবং স্থানীয়রা এটি গ্রহণ করে।
সুতরাং, কারণটি তাদের সৌভাগ্য আনার সেই বিশ্বাসই হোক বা দেশের ঐতিহ্য তবে একটি ব্যাপার এখানে অপরিবর্তনীয় সেটা হলো, প্রাচীন ভারত এবং হিন্দু ধর্মের সাথে দেশটির গভীর সম্পর্ক।
সূত্র : কোরা ডটকম