মাথায় চুল প্রতিস্থাপন কি জায়েজ?
- ফরহাদ খান নাঈম
ইসলাম আমাদের শরীরে আল্লাহপ্রদত্ত সৌন্দর্যের মধ্যে অপ্রয়োজনীয় হস্তক্ষেপ করতে নিষেধ করেছে। এটি আল্লাহর সৃষ্টিকে বিকৃত করার শামিল, যাকে ইসলামী শরীয়ত শয়তানি কর্মকাণ্ড বলে আখ্যা দিয়েছে।
আল্লাহপ্রদত্ত শারীরিক সৌন্দর্যের মধ্যে অবৈধ ও নিষিদ্ধ কিছু হস্তক্ষেপ হলো- সার্জারি করার মাধ্যমে বয়সের ভারে সৃষ্টি হওয়া চেহারার বলিরেখা দূর করা, শরীরের চামড়ার রঙ বদলে ফেলা এবং মাথায় পরচুল লাগানো ইত্যাদি।
এ ব্যাপারে হাদিসে এসেছে, হজরত ইবনে ওমর (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘রাসুলুল্লাহ (সা.) অভিশম্পাত করেছেন ওইসব নারীর ওপর, যারা পরচুলা লাগিয়ে দেয় এবং যে পরচুলা লাগাতে বলে।’ (বুখারি: ৫৯৩৭)
তবে অঙ্গ প্রত্যঙ্গের বিকৃতি না ঘটিয়ে শুধুমাত্র চিকিৎসার স্বার্থে যদি শরীরের কোনো অঙ্গ বা কোনো অংশ কেটে ফেলা হয় অথবা ছেঁটে ফেলা হয় কিংবা প্রতিস্থাপন করা হয়, তবে তার অনুমতি রয়েছে।
তাই প্রাকৃতিক (আসল) চুল দিয়ে যদি কেউ এমনভাবে হেয়ার ট্রান্সপ্লান্ট বা চুল প্রতিস্থাপন করে, যাতে করে তা নিয়মিতভাবে মাথায় গজানো স্বাভাবিক চুলের অংশে পরিণত হয় এবং এর মাধ্যমে তার টাক দূর হয়, তবে তা জায়েজ আছে। কারণ এটি মানুষের শরীরে কিডনি, চোখ অথবা হার্ট প্রতিস্থাপন করার মতো।
কৃত্রিম চুল দিয়ে হেয়ার ট্রান্সপ্লান্ট করার বিষয়টি ভিন্ন। কারণ কৃত্রিম চুল দিয়ে হেয়ার ট্রান্সপ্লান্ট করলে এটি মানুষের প্রাকৃতিক তথা আসল চুলের অংশে পরিণত হয় না। তাই এর অনুমতি নেই শরীয়তে।
তবে চুল প্রতিস্থাপনের বিষয়টি শুধু অনিবার্য প্রয়োজনীয়তার ক্ষেত্রে সীমাবদ্ধ রাখতে হবে; যেমন- কোনো ব্যক্তির টাক থাকায় তিনি সামাজিকভাবে অথবা প্রাতিষ্ঠানিকভাবে অবজ্ঞার স্বীকার হচ্ছেন কিংবা তাকে হেয় প্রতিপন্ন করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, প্রাকৃতিকভাবে মাথার চুল গজানো কিংবা চুল বড় করার জন্য যেকোনো চিকিৎসা বা ওষুধ নিতে কোনো সমস্যা নেই। চোখের দৃষ্টিশক্তি বাড়াতে অথবা শারীরিক শক্তিবৃদ্ধির জন্য বিভিন্ন ওষুধ নেওয়া যেমন জায়েজ আছে তদ্রূপ এটিরও অনুমতি রয়েছে।
সূত্র: যুগান্তর