বিস্ময়কর গুহা অলীকদম
- সানজিদা রহমান
বান্দরবান বাংলাদেশের পর্যটন কেন্দ্রগুলোর ভেতর অন্যতম। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর এই জেলার পাহাড়ি রূপ দেশী এবং বেদেশী পর্যটনদের মুগ্ধ করে।তাই ভ্রমণপিপাসুরা বিভিন্ন ঋতুতে পাড়ি জমায় বান্দরবানের দর্শনীয় স্থানগুলোতে।
বান্দরবানেরই একটি বিস্ময়কর পর্যটন এলাকা হচ্ছে লামা। আর এর ঠিক পাশেই অবস্থিত আলিকদম গুহা। যা ‘আলীর গুহা’ নামেও পরিচিত। এটি বাংলাদেশের চট্টগ্রাম বিভাগের বান্দরবান জেলার একটি উপজেলা যা সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ১৫০০ ফুট উচ্চতায় অবস্থিত। আলিকদম গুহার উপরের পাশে দাড়ালে পুরো বান্দরবান শহরের সৌন্দর্য উপভোগ করা যায়। এই অপরূপ সৌন্দর্য উপভোগ করতে পর্যটনরা প্রায়ই এখানে ভিড় জমায়।
আলীকদম সদর থেকে তিন কিলোমিটার দূরে মাতামুহুরী-টোয়াইন খালের পাশে দুই পাহাড়ের মাথায় এই গুহা নিয়ে রহস্যের শেষ নেই। এখানে মুলত তিনটি গুহা আছে যার সবগুলোতে প্রবেশ করতে সময় লাগবে প্রায় ২ ঘন্টা। ঝিরি পথ ধরে গুহায় যেতে হবে। ঝিরি থেকে গুহার মুখের উপরে অবস্থিত। প্রথম গুহাটিতে একটি সিঁড়ি আছে। বাকি অংশে পাহাড়ে উঠতে হবে। গুহার ভেতরে সম্পূর্ণ অন্ধকার। ভিতরে প্রবেশ করতে টর্চ লাইট বা টর্চ বহন করতে হবে। গুহার কিছু অংশ বেশ সরু। হামাগুড়ি দিয়ে সে জায়গাগুলো পেরোতে হয়৷ গুহার ভিতর স্যাঁতসেঁতে ও ছমছমে পরিবেশ। প্রাচীন পাথর এবং পানি ডিঙিয়ে গুহার ভেতর প্রবেশ করলেই যেন মনে হয় সেই প্রস্তর যুগের মানুষদের কথা।
যুগ যুগ ধরে এমন গুহাতেই ছিলো মানুষের বসবাস। মাঝে মাঝে পানির নিচে গভীর গর্ত থাকে যা অন্ধকারে দেখা যায়না৷ একারণে অনেক পর্যটকেরাই দূর্ঘটনার সম্মুখীন হন।
এ গুহার ভেতরে দর্শনার্থীদের জন্য একই পথই খোলা থাকে৷ অন্য পথ এতোটাই দুর্গম বা বিপজ্জক এজন্য তা জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত নয়৷ আর এসব কারণে মানুষের কাছে বিস্ময়কর একটি জায়গা হয়ে আছে আলীকদম গুহা। গুহার ভেতরের বাদুরের প্রাদুর্ভাব রয়েছে এবং নিজেদের কথা কথার প্রতিধ্বনি অনেক ভিন্নভাবে শোনা যায়। পাশাপাশি কথিত আছে, রাতের বেলা এই গুহা অঞ্চলে কেউ প্রবেশ করেনা৷ কারণ এটি সাধারণ মানুষের জন্য খুবই ঝুঁকিপূর্ণ।
আর যেখানে যত ঝুকি মানুষের বিস্ময় সে বিষয়ে তত বেশি। এসব বিভিন্ন কারণে অলীকদম গুহাকে একটি বিস্ময়কর গুহা মনে করেন অনেক পর্যটকেরা।