সিলেটের বিখ্যাত সাত রঙের চা
- সানজিদা হোসেন
কাজের ফাঁকে কিংবা আড্ডায় একটু সতেজতার জন্য অনেকে সঙ্গী হিসেবে বেছে নেন ‘চা’।অনেকের আবার দিন শুরু হয় চায়ের কাপে চুমুক দিয়ে। লাল চা কিংবা দুধ চায়ের বেশ পরিচিতি থাকলে ও ‘সাত রঙের চা’ সম্পর্কে অনেক মানুষেরই জানা নেই।
এই চা নিয়ে অনেকে আবার বেশ শৌখিন। চা বিশ্বের অন্যতম উপভোগ্য পানীয়। চা’তে রয়েছে এক ধরনের স্নিগ্ধ প্রশান্তি। গত শতাব্দী থেকে চা পানের ঐতিহ্য রয়েছে। বাংলাদেশের উষ্ণ পানীয়র মধ্যে সিলেটের ‘সাত রঙের চা’ অন্যতম। সাত তালা চা এবং সাত স্তর চা নামেও এটি পরিচিত। সাত রং চায়ের উদ্ভাবক ‘রমেশ রাম গৌড়’।
সিলেটে সাত রঙের এই চা কে ‘রেইনবো -টি’ বলা হয়। এক কাপে সাত রঙের চা এ যেন আকাশের রঙধনুর মতোই বর্ণীল, এক এক স্তরে থাকে আলাদা আলাদা স্বাদ। এক স্তরের উপর আরেক স্তর ঢেলে দিয়ে রমেশ রাম গৌড় সাতটি স্তরবিশিষ্ট চা প্রস্তুত করেন। আশ্চর্য হলেও সত্যি যে, একটি স্তর অপরটির সঙ্গে মেশে না।
চা হলো সুগন্ধ এবং স্বাদবিশিষ্ট উষ্ণ পানীয়, যা চা পাতা গরম পানিতে ফুটিয়ে তৈরী করা হয়।কিন্তু এই সাত রঙা চায়ের রয়েছে অন্য রকম স্বাদ, যা সাধারণ চায়ের মত না।
চা প্রেমীরা বিভিন্ন জায়গা থেকে ছুটে আসেন সাত রঙ চায়ের স্বাদ নিতে। বিখ্যাত চায়ের দোকান ‘নীলকণ্ঠ টি কেবিনে’ সাত রং চা পাওয়া যায়, এটি সিলেটের শ্রীমঙ্গলে অবস্থিত।
এই চায়ের কিছু বিশেষ উপকরণ রয়েছে। সেগুলো হলো তিন ধরনের চা পাতা, দারুচিনি, ঘনীভূত দুধ, লেবু এবং লবঙ্গ। মিষ্টি স্বাদ থেকে শুরু করে ঝাঁঝালো লবঙ্গ সহ সাতটি স্তরে থাকে ভিন্ন ভিন্ন স্বাদ। উপরের স্তরটি দারুচিনি, এবং নিচের স্তরটি লেবু স্বাদ প্রদান করে। এর পরের স্তরগুলোতে ঘনীভূত দুধের সাথে কালো চা থাকে, এবং নিচের স্তরগুলোতে মিষ্টি, লবঙ্গসহ শরবত সবুজ চা, এবং বিভিন্ন ধরনের মশলা থাকে। এই চা সাশ্রয়ী মূল্যে পাওয়া যায়। উল্লেখ্য, সাধারণত ৭০ থেকে ৮০ টাকা এই চায়ের মূল্য।
এটি মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলের বিখ্যাত চা। সবার কাছে খুব আর্কষনীয়। দেশ জুড়ে রয়েছে সাত রঙ চায়ের খ্যাতি। চায়ের নাম এবং খ্যাতির জন্য সেখানে দর্শনার্থীদের ভিড় জমে। এই রহস্যময় চা পর্যটকদের আরও আকর্ষন বাড়িয়ে দেয়। শ্রীমঙ্গলে বেড়াতে গিয়ে এই চা পান করেনি, এমন মানুষ খুব কম রয়েছে। মানুষ শখের বসে এ চা পান করে থাকে। অনেকে শুধুমাত্র সেখানে যান সাত রঙের চায়ের স্বাদ নিতে। বেড়াতে আসা পর্যটকরা এক গ্লাস সাত রঙের এই আকর্ষনীয় চায়ের স্বাদ নেন।