বাংলার বিষে নীল লংকান শিবির
- তৌহিদুল ইসলাম
বীণ বাজিয়ে সব সময় সাপকে যে বসে আনা যায় না সেই কথা হয়তো জানা ছিল নানা লংকানদের। ফলাফল পেল হাতে নাতে। বাংলার বিষে নীল হলো লংকান শিবির। বাংলাদেশ জিতল ২ উইকেট হাতে রেখে।
ইনিংসের শেষ ওভারে কি নাটকটাই না করলেন শ্রীলঙ্কান আম্পায়ার। পর পর দুটি বাউন্সার, কিন্তু একটিও ওয়াইড দিলেন না। দ্বিতীয় বলে রান আউট হয়ে গেলেন মোস্তাফিজুর রহমান। এর মধ্যেই হঠাৎ মাঠের পাশে নেমে এলেন সাকিব আল হাসান। মাঠে মাহমুদউল্লাহ উত্তেজিত কণ্ঠ। সাকিবের নির্দেশ উঠা আসো। হয়তো আবেককে আর ধরে রাখতে পারেনি শান্ত রিয়াদও। সবার মনে প্রশ্ন তবে কি মাঠ ছাড়বে বাংলাদেশ! হ্যাঁ মাঠ ঠিকই ছেড়েছে তবে বীরের বেশে।
ছক্কা হাঁকিয়ে বাংলাদেশকে ত্রিদেশীয় টি-২০ সিরিজের ফাইনালে তুললেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। শ্রীলঙ্কার ছুঁড়ে দেওয়া ১৬০ রানের টার্গেট ১ বল ও ২ উইকেট হাতে রেখে জয় পায় বাংলাদেশ।
১৮ বলে ৪৩ রানের টর্নেডো ইনিংস খেলে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, যেখানে ছিল ৩টি চার ও ২টি নজর কাড়া ছক্কার মার। এ নিয়ে টুর্নামেন্ট বাংলার লংকা বধ দ্বিতীয় বারের মতো। প্রথম দেখায় মুশফিকের ঝড়ো ব্যাটিংয়ে (৩৫ বলে ৭২) ২১৫ চেজ করে রেকর্ড গড়ে বাংলাদেশ।
যখন ৩৩ রানে দুই উইকেট হারিয়ে কাঁপুনি ধরে দিচ্ছিল বাংলাদেশ তখন ৬৪ রানের জুটি গড়ে জয়ের পথ দেখান তামিম ইকবাল ও মুশফিকুর রহিম। তবে অর্ধশতক হাঁকিয়ে কাটা পরেন তামিম। মুশফিক ও ফিরে যান ২৮ রান নিজের নামের পাশে লিখিয়ে। ইনজুরি কাটিয়ে প্রায় দু’মাস পর দলে ফেরা অধিনায়ক সাকিব আল হাসান নামের প্রতি বেশী সুবিচার করতেন পারেন নি। তিনি করেছেন ৭ রান। বাকিটা শুধু রিয়াদময়, আবেগে বশিভূত করে এনে দিয়েছেন স্বস্তির জয়।
এর আগে টস জিতে ফিল্ডিং করার সিদ্ধান্ত নেয় বাংলাদেশ। ৪১ রানে পাঁচ উইকেট হারিয়ে খাঁদের কিনারায় যখন হাথুরো বাহিনী, কুশল পেরেরা ও থিসারা পেরেরা ৯৭ রানের পার্টনারশিপ আশার মুখ দেখায়। ধাক্কা সামলে সাত উইকেটে ১৫৯ রানের স্কোর গড়ে লঙ্কানরা।
১৯তম ওভারে আউট হবার আগে ৪০ বলে ৬১রান করেন কুশল পেরেরা। যেখানে ছিল ৭টি চার ও ১টি ছক্কার মার। শেষ ওভারে ফেরেন থিসারা পেরেরা। ঝড়ো ব্যাটিংয়ে ৩টি করে চার-ছক্কার সাহায্যে করেন ৩৭ বলে ৫৮।
ওপেনার দানুস্কা গুনাথিলাকা ৪, কুশল মেন্ডিস ১১, উপুল থারাঙ্গা ৫ (রানআউট), দাসুন শানাকা (০), জীবন মেন্ডিস (৩) রানে সাজঘরের পথ ধরেন। ইসুরু উদানা ৭ ও আকিলা ধনাঞ্জয়া ১ রানে অপরাজিত থাকেন।
সাকিব ২ ওভারে ৯ রানের বিনিময়ে একটি উইকেট নেন। চার ওভারে ৩৯ রান খরচায় দু’টি উইকেট লাভ করেন মোস্তাফিজুর রহমান। একটি করে পান রুবেল হোসেন, মেহেদী হাসান মিরাজ ও সৌম্য সরকার।
ম্যাচ সেরা হন মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ।
রোববার (১৮ মার্চ) শিরোপা লড়াইয়ে ভারতকে মোকাবিলা করবে টিম বাংলাদেশ। কলম্বোর প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে খেলা শুরু সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায়।