মাইলফলকের দুয়ারে ম্যাককুলাম
স্পোর্টস ডেস্ক : রেকর্ডটা হতে পারত এবি ডি ভিলিয়ার্সের। সন্তানসম্ভবা স্ত্রীর পাশে থাকার কারণে বাংলাদেশের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজটা না খেলেই চলে গিয়েছিলেন দক্ষিণ আফ্রিকায়। ওই দুটি টেস্ট খেলতে পারলে প্রোটিয়া মহাতারকা হয়ে যেতেন টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসে অভিষেকের পর টানা ১০০ ম্যাচ খেলা প্রথম ক্রিকেটার। গতকাল শ্রীলংকার বিপক্ষে হ্যামিলটন টেস্ট খেলতে নেমে সে রেকর্ড ভেঙে দিলেন নিউজিল্যান্ডের অধিনায়ক ব্রেন্ডন ম্যাককুলাম। অভিষেকের পর খেলে ফেললেন বিরতিহীন ৯৯টি টেস্ট। আর মাত্র একটি টেস্ট খেললেই বিরল মাইলফলকে নিজের নাম লিখিয়ে ফেলবেন আধুনিক ক্রিকেটের মারমার-কাটকাট ব্যাটিংয়ের অন্যতম এ প্রতিভূ। ফেব্রুয়ারিতে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে দেশের মাটিতে দুই টেস্টের সিরিজ খেলবে কিউইরা। সুস্থ থাকলে তখনই হয়ে যাবে রেকর্ডটা।
কাকতালীয় ব্যাপার, ২০০৪ সালের ১০ মার্চ দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে যে হ্যামিলটনে অভিষেক হয়েছিল ম্যাককুলামের সেখানেই রেকর্ডটা গড়লেন তিনি। টেস্ট ক্রিকেটে একই বছরে উত্থান ম্যাককুলাম ও ডি ভিলিয়ার্সের। মার্চে ম্যাককুলাম, নয় মাস পর ডিসেম্বরে ডি ভিলিয়ার্স। আগে অভিষেক হয়েও ম্যাককুলাম পিছিয়ে ছিলেন। রেকর্ডটা ভেঙে এগিয়ে গেলেন! এর আগে, তিন কিংবদন্তি অস্ট্রেলিয়ার অ্যাডাম গিলক্রিস্ট ৯৬, ভারতের রাহুল দ্রাবিড় ৯৩ ও শচীন টেন্ডুলকার ৮৪টি টেস্ট অভিষেকের পর বিরতিহীন খেলেছিলেন। উলি্লখিত এই পাঁচজনের টানা টেস্ট খেলার রেকর্ড দেখে অবশ্য আরেক কিংবদন্তি অ্যালান বোর্ডার হাসতে পারেন। একই সঙ্গে দুঃখও করতে পারেন। তবে, দুঃখের মাত্রাটাই বোধহয় বেশি হওয়ার কথা এবির!
টেস্ট ইতিহাসে অ্যালান বোর্ডার সেই ক্রিকেটার যার ১৫৩টি টেস্ট টানা খেলার রেকর্ড আছে! হ্যাঁ, ভুল পড়েননি, ১৫৩টি! ১৯৭৮ থেকে ১৯৯৪ সাল পর্যন্ত ক্যারিয়ারে অ্যালান বোর্ডার টেস্ট খেলেছেন ১৫৬টি। ২০০৩ সালে স্বদেশি স্টিভ ওয়াহ তার রেকর্ডটি ভাঙার আগে সবচেয়ে বেশি টেস্ট খেলার রেকর্ডও ছিল বোর্ডারের এই ১৫৬ টেস্ট। তার পরও, বোর্ডারের দুঃখটা কোথায়? বুঝতেই পারছেন, অভিষেকের পর প্রথম তিনটি টেস্ট খেলার পর অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে খেলায় ছেদ পড়েছিল তার। সেটাও, যে সিরিজে অভিষেক হয়েছিল সে সিরিজেই!
বোর্ডারের অভিষেক হয়েছিল ইংল্যান্ডের বিপক্ষে, মানে অ্যাশেজে। সেবার ইংল্যান্ড খেলতে গিয়েছিল অস্ট্রেলিয়ায়। ছয় টেস্টের সিরিজ। বোর্ডারের অভিষেক হয়েছিল মেলবোর্নের তৃতীয় টেস্টে। অভিষেক ইনিংসে ২৯ রান। দ্বিতীয় ইনিংসে শূন্য। সিডনিতে পরের টেস্টে যথাক্রমে ৬০ ও ৪৫। দুটোই অপরাজিত। সিরিজের পঞ্চম ও ক্যারিয়ারের তৃতীয় টেস্টে অ্যাডিলেডে বোর্ডার করলেন ১১ ও ১। ব্যাস, ওই অপয়া, ‘১১, ১’-ই কাল হয়ে গেল! ক্যারিয়ারে প্রথম ও শেষবার অস্ট্রেলিয়া দল থেকে বাদ পড়লেন বোর্ডার!
অ্যাশেজ সিরিজ সাধারণত হয় পাঁচ টেস্টের। ছয় বা ততধিক টেস্টের অ্যাশেজ সিরিজ সেবার তৃতীয়বারের মতো হয়েছিল। শেষটাতে বাদ পড়লেন বলে অ্যালান বোর্ডার দুঃখ করে বলতেই পারেন, ওই অ্যাশেজটা কেন ‘ছয় টেস্টে’র হয়েছিল!