দক্ষিণ আফ্রিকার নাটকীয় জয়
স্পোর্টস ডেস্ক : পরের ম্যাচে জো রুট হয়তো আর সেঞ্চুরির চিন্তাও করবেন না! কীভাবে করবেন, টানা দুই ম্যাচে তিনি সেঞ্চুরি করলেন আর দুই ম্যাচেই যে হেরে গেল তার দল ইংল্যান্ড।
শুক্রবার জোহানেসবার্গে সিরিজের চতুর্থ ওয়ানডেতে ১ উইকেটের নাটকীয় জয় পেয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা। আর প্রোটিয়াদের এই জয়ে পাঁচ ম্যাচের সিরিজে এখন ২-২ সমতা। রোববার কেপ টাউনে নির্ধারণ হবে সিরিজ। দক্ষিণ আফ্রিকার সিরিজ জয়ের সম্ভাবনা বাঁচিয়ে রাখা এই জয়ে বড় অবদান আট নম্বরে ব্যাট করতে নাম ক্রিস মরিসের। ২৬৩ রান তাড়া করতে নেমে ২১০ রানে ৮ উইকেট হারিয়েছিল প্রোটিয়ারা। তবে দশম ব্যাটসম্যান কাইল অ্যাবটকে নিয়ে ৫২ রানের জুটি গড়ে দলকে দারুণ এক জয় এনে দেন মরিস। ৩০ বলে ফিফটি করা মরিসই ম্যাচের ব্যবধান গড় দেন। ২৬৩ রান তাড়া করতে নেমে শুরুতেই হোঁচট খায় দক্ষিণ আফ্রিকা। দলীয় ২ রানেই ফিরে যান আগের ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান হাশিম আমলা। দ্বিতীয় উইকেটে ফাফ ডু প্লেসিসকে সঙ্গে নিয়ে দলকে ৬৩ পর্যন্ত টেনে নিয়ে যান আগের ম্যাচের আরেক সেঞ্চুরিয়ান কুইন্টন ডি কক। কিন্তু পর পর দুই ওভারে ডু প্লেসিস (৩৪) ও ডি ককের (২৭) বিদায়ে আবার চাপে পড়ে স্বাগতিকরা।
এরপর অধিনায়ক এবি ডি ভিলিয়ার্স জেপি ডুমিনির সঙ্গে জুটি বেঁধে দলকে ভালোই এগিয়ে নিচ্ছিলেন। কিন্তু দলীয় ১২১ রানে রানআউটে কাটা পড়েন ডি ভিলিয়ার্স (৩৬)। দলীয় ১৪৩ রানে ডুমিনিও সাজঘরের পথে পা বাড়ান। ষষ্ঠ উইকেটে ফারহান বেহারদিয়েন ও ডেভিড ভিসে মিলে ৪৮ রানের জুটি গড়েন। কিন্তু ১০ রানের মধ্যে বেহারদিয়েন (৩৮) ও ভিসেসহ (২১) কাগিসো রাবাদার উইকেট হারিয়ে আবার বিপদে পড়ে প্রোটিয়ারা। তখন জয়ের জন্য দক্ষিণ আফ্রিকার ৫১ বলে ৫৩ রান প্রয়োজন ছিল, হাতে ২ উইকেট। সেখান থেকে প্রায় একাই দলকে জয় এনে দেন মরিস। ইংল্যান্ডের স্কোর ছোঁয়ার পর আদিল রশিদের বলে বোল্ড হয়ে শেষ হয় তার ৬২ রানের অসাধারণ ইনিংসটি। ৩৮ বলে খেলা এই অলরাউন্ডারের ঝড়ো ইনিংসে ছিল ৪টি ছক্কা ও ৩টি চারের মার। মরিসের বিদায়ের পরের বলে চার মেরে ১৬ বল আগে দলের জয় নিশ্চিত করেন ইমরান তাহির।
এর আগে টস জিতে ব্যাট করতে নেমেছিল ইংল্যান্ড। কিন্তু ব্যাটিংয়ের শুরুটা ভালো হয়নি। ১৮ রানেই জাসন রয়কে হারানোর পর দ্বিতীয় উইকেটে অ্যালেক্স হেলস ও রুট মিলে দলকে ৮৭ পর্যন্ত টেনে দিয়ে যান। কিন্তু ৮৭ থেকে ১০৮, ২১ রানের মধ্যে ৫ উইকেট হারিয়ে চরম ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে ইংলিশরা। হেলসের ব্যাট থেকে আসে ৫০ রান। পরের চার ব্যাটসম্যান ইয়ান মরগান, বেন স্টোকস, জস বাটলার ও মঈন আলী- কেউই দুই অঙ্ক ছুঁতে পারেননি। ষষ্ঠ উইকেটে ক্রিস ওয়কসের সঙ্গে ৯৫ রানের জুটি গড়ে দলকে খাদের কিনারা থেকে টেনে তোলেন রুট। ওকসের (৩৩) বিদায়ে ভাঙে এ জুটি। পরের ওভারেই সিরিজে টানা দ্বিতীয় সেঞ্চুরি তুলে নেন রুট। অষ্টম ব্যাটসম্যান হিসেবে ফেরার আগে ১২৪ বলে ১০ চার ও এক ছক্কায় ১০৯ রানের কার্যকরী ইনিংস খেলেন এই ডানহাতি। এরপর আদিল রশিদের ৩৯ রানের সুবাদে ৪৭ ওভার ৫ বলে অলআউট হওয়ার আগে ২৬২ রানের লড়াইয়ের পুঁজি পায় সফরকারীরা। ৪৫ রানে ৪ উইকেট নিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার সেরা বোলার পেসার রাবাদা। ৪৬ রানে ৩ উইকেট নেন স্পিনার তাহির। নাটকীয় ম্যাচে প্রোটিয়াদের জয়সূচক রানটিও আসল তাহিরের ব্যাট থেকেই।