তথ্যপ্রযুক্তির উন্নয়ন সূচকে পিছিয়েছে বাংলাদেশ
- বিজ্ঞান প্রযুক্তি ডেস্ক
টেলিকম ও তথ্যপ্রযুক্তির অনেক ক্ষেত্রেই বেশ ভালো করেছে বাংলাদেশ। বহির্বিশ্বে বেশ প্রশংসাও কুড়িয়েছে। ডিজিটাল বাংলাদেশের অনেক গল্প এখন বিশ্বজুড়ে উদাহরণ। এরপরও আন্তর্জাতিক টেলিকমিউনিকেশন্স ইউনিয়ন বলছে, এ সংক্রান্ত উন্নয়ন সূচকে বেশ খানিকটা পিছিয়েছে এ দেশ।
সংস্থার প্রতিবেদনে বাংলাদেশ উন্নয়ন সূচকে আগের চেয়ে ভালো করলেও অবস্থান পিছিয়ে গেছে অন্য দেশগুলো আরও ভালো করায়।
আইটিইউর সম্প্রতি প্রকাশিত ২০১৬ সালের প্রতিবেদন বলা হচ্ছে, আগের বছরের তুলনায় দুই ধাপ পিছিয়েছে বাংলাদেশ। ২০১৫ সালে এক ধাপ অগ্রগতি হয়েছিল। এবার বিশ্বের ১৭৫ দেশের মধ্যে অবস্থান হয়েছে ১৪৫তম। আইটিইউর এ সূচকে গত পাঁচ বছরে বাংলাদেশ তিন ধাপ এগিয়েছে। ২০১০ সালে প্রথম সূচকে অবস্থান ছিল ১৪৮তম। আন্তর্জাতিক এ সংস্থা বিশ্বের তথ্যপ্রযুক্তি খাতের দেশওয়ারি তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে প্রতি বছর ‘গ্লোবাল ডেভেলমেন্ট ইনডেক্স’ তৈরি করে। নভেম্বরের একেবারে শেষ দিকে এ প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়।
এ বছর বাংলাদেশের পয়েন্ট ২ দশমিক ৩৫। গত বছর যা ছিল ২ দশমিক ২৭। এর আগে ২০১৪ সালে বিশ্বের ১৬৬ দেশের মধ্যে এ অবস্থান ছিল ১৪৫তম। ২০১৩ সালের তুলনায় ২০১৪ সালে তথ্যপ্রযুক্তি খাতের বিভিন্ন মানদণ্ডে উন্নতি করায় ২০১৫ সালে বেশ ভালো অগ্রগতি হয়েছিল। ২০১৫ সালের জন্য এ সূচক তৈরিতে তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার, টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থাসহ বিভিন্ন তথ্য বিবেচনা করা হয়।
সংস্থাটির প্রতিবেদনে বলা হয়, বিশ্বে ৮৪ শতাংশ মানুষ এখন মোবাইল নেটওয়ার্কের আওতায় থাকলেও ইন্টারনেট ব্যবহার করছে মাত্র ৪৭ শতাংশ মানুষ। গত বছর যা ছিল ৪৩ দশমিক ৪ শতাংশ। বিশ্বে মোবাইল গ্রাহকের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে প্রায় ৭২০ কোটি, যা মোট জনসংখ্যার ৯৫ শতাংশ। সূচকে শীর্ষ ২০-এ এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় ছয়টি দেশ রয়েছে। তালিকায় শীর্ষে রয়েছে দক্ষিণ কোরিয়া।
এরপর ক্রমানুসারে ডেনমার্ক ও আইসল্যান্ড ও যুক্তরাজ্য। সর্বশেষ ১৭৫তম অবস্থানে রয়েছে নাইজার। টেলিকম বিশেষজ্ঞ মোবাইল ফোন অপারেটরগুলোর সংগঠন অ্যামটবের সাবেক মহাসচিব আবু সাঈদ খান বলছেন, তথ্যের অপর্যাপ্ততার কারণেও রেটিংয়ে বাংলাদেশ পিছিয়ে পড়ছে। এ জন্য টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনকে দায়ী করেন তিনি।
এ ছাড়া বিদ্যমান অনেক নীতির কারণে খাতটি একই জায়গায় আটকে আছে বলে মনে করেন এ টেলিকম বিশেষজ্ঞ। তিনি বলেন, দেশের ইন্টারনেট গ্রাহকদের বড় অংশই মোবাইল ফোনের মাধ্যমে সংযুক্ত। অথচ এরা সঠিক ব্যান্ডউইথ পাচ্ছে না মূলত ফাইবার অপটিক বিষয়ে সরকারের সঠিক ও বাস্তবসম্মত নীতি না থাকায়।
এরই নেতিবাচক ফল পড়েছে আইটিইউর প্রতিবেদনে উল্লেখ করে আবু সাঈদ বলেন, ‘এ অঞ্চলের মধ্যে শুধু আফগানিস্তান এখন বাংলাদেশের পেছনে রয়েছে। তবে যেভাবে এখন সবকিছু চলছে, আরও সময়োপযোগী পদক্ষেপ না নিলে তারাও সামনের দিনে আমাদের টপকে যাবে।’