এসিএম-আইসিপিসি: চ্যাম্পিয়ন শাবিপ্রবি
- বিজ্ঞান প্রযুক্তি ডেস্ক
বিশ্বের অন্যতম মর্যাদাপূর্ণ প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতা ইন্টারন্যাশনাল কলেজিয়েট প্রোগ্রামিং আইসিপিসি ঢাকা অঞ্চলের চ্যাম্পিয়ন হয়েছে সিলেট শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘সাস্ট ডেসাইফ্রাডর’। এই দলের সদস্যরা হলেন: আরাফ অভিষেক, অভিষেক পাল ও মওদুদ আহমেদ খান।
শনিবার (১০ নভেম্বর) সকাল ১১টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত টানা পাঁচ ঘণ্টা চলে প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতাটি। প্রতিযোগিতায় সাতটির মধ্যে ছয়টি সমস্যার সমাধান করে চ্যাম্পিয়ন হয় দলটি।
এছাড়াও প্রতিযোগিতায় প্রথম রানার আপ হয়েছে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় বা বুয়েটের দল ‘বুয়েট-ব্লাডহুন্ড’ (মুত্তাকিন আশিকুল, আশিকুল ইসলাম ও অর্ঘ পাল)। দলটি সমাধান করেছে ৫টি সমস্যা। প্রতিযোগিতায় পাঁচটি সমস্যা সমাধান করে তৃতীয় হয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দল ‘ডিইউ-এপিনেফ্রিন’ (পিয়াল রেজওয়ান, রেজওয়ান আহমেদ ও শাহেদ শাহরিয়ার)।
এবারে ঢাকা অঞ্চলের প্রতিযোগিতার আয়োজন করে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি।
শনিবার আশুলিয়ায় ইউনিভার্সিটির স্থায়ী ক্যাম্পাসে অনুষ্ঠিত হয় প্রতিযোগিতাটি। যেখানে সারা দেশের ১০১টি সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ও বিভিন্ন আইটি ইন্সটিটিউটের ২৯৮টি দল অংশগ্রহণ করে। যার প্রতি দলে ছিল তিনজন করে প্রতিযোগী। দেশের দল ছাড়াও এবার অংশ নিয়েছিল নেপাল থেকে আসা তিনটি দল।
ঢাকা অঞ্চলের প্রতিযোগিতার চ্যাম্পিয়ন ও রানার আপ দল দুটো আগামী বছরের ৩১ মার্চ থেকে ৫ এপ্রিল পর্তুগালের ইউনিভার্সিটি অব পোর্টোয় ওয়ার্ল্ড ফাইনালে অংশ নেবে।
সকালে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবদুল মান্নান প্রধান অতিথি থেকে এর উদ্বোধন করেন।
এসময় বিশেষ অতিথি ছিলেন জাতীয় অধ্যাপক জামিলুর রেজা চৌধুরী, হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হোসনে আরা বেগম, বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের নির্বাহী পরিচালক পার্থ প্রতিম দেব, বাংলাদেশ কম্পিউটার সোসাইটি ও ইন্টারনেট সোসাইটি (আইসক) বাংলাদেশ চ্যাপ্টার এর প্রফেসর হাফিজ মো. হাসান বাবু, বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের পরিচালক (প্রশিক্ষণ) ইঞ্জিনিয়ার এনামুল কবির, সাউথ ইস্ট ইউনিভার্সিটির স্কুল অব সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ডিন অধ্যাপক আবুল এল হক, সিটিও ফোরামের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি তপন কান্তি সরকার, এসএসএল ওয়ারলেসের চিফ অপারেটিং অফিসার আশিস চক্রবর্তী, চিফ টেকনিক্যাল অফিসার শাহাজাদা রিদওয়ান এবং ডাটাসফট্ সিস্টেমস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাহাবুব জামান প্রমুখ।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. এস এম মাহাবুবুল হক মজুমদারের সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য রাখেন প্রতিযোগিতার পরিচালক অধ্যাপক ড. সৈয়দ আকতার হোসেন ও প্রধান বিচারক অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ কায়কোবাদ।
বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আব্দুল মান্নান বলেন, আইসিপিসি প্রতিযোগিতাটি আমাদের তরুণদের সামনে নিজেদের দক্ষতা প্রমাণ করার এক বিশাল সুযোগ এনে দিয়েছে। অনেকে বলে থাকে, এই প্রতিযোগিতা হচ্ছে, মানুষ ও মেশিনের মধ্যে প্রতিযোগিতা। ব্যক্তিগতভাবে আমি তা মনে করি না। আমি মনে করি, মানুষের চেয়ে মেশিন কখনো উন্নত হতে পারে না।
জাতীয় অধ্যাপক জামিলুর রেজা চৌধুরীর বলেন, ২০ বছর ধরে বিভিন্ন প্রতিযোগিতার সঙ্গে যুক্ত থাকার ফলে আমি জানি, এই তরুণরা কী পরিমাণ মেধাবী। এই প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতা তরুণদের মেধাকে আরও শাণিত করবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টিবোর্ডের চেয়ারম্যান ড. মো. সবুর খান বলেন, বর্তমান সময় হচ্ছে প্রযুক্তির সময়। এই সময়ে প্রযুক্তির জ্ঞান থেকে দূরে থাকলে বৈশ্বিক প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে পড়তে হবে। আমরা চাই না আমাদের শিক্ষার্থীরা কোনো প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে পড়ুক। এজন্য ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি বিভিন্ন প্রতিযোগিতার আয়োজন করে থাকে।
কম্পিউটার প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতার পাশাপাশি জমকালো আয়োজনে ছিল টেকনিক্যাল টকস, সিএসআইএস, ফান ইভেন্ট এবং পুরস্কার বিতরণী ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।