জিপিএ-ই যথেষ্ট নয়

জিপিএ-ই যথেষ্ট নয়

মারুফ ইসলাম : গোটা একটা শিক্ষাজীবন শুধু পড়াশোনার পেছনে ব্যায় করেছেন, বিনিময়ে পেয়েছেন কয়েকটি ঈর্ষাজাগানিয়া সনদপত্র। তারপর গোঁফে তা দিতে দিতে ভাবছেন, চাকরির বাজারে আপনাকে আর ঠেকায় কে! আপনার আছে ভালো রেজাল্ট, চাকরিদাতারা নিশ্চয় ডেকে ডেকে চাকরি দেবে আপনাকে! বালাই ষাট! এমন ভেবে থাকলে আপনাকে বলব, বাস করছেন আহম্মকের স্বর্গে! স্বর্গ থেকে ধরাতলে নামুন জনাব, দেখুন আপনার চারপাশ। খোঁজ নিন চাকরির বাজারের। হলফ করে বলতে পারি, আপনার আত্মবিশ্বাসের বাস্তিলদূর্গ ধসে পড়বে মুহূর্তে। কারণ সময় এখন বদলেছে বিস্তর। চাকরিদাতারা এখন শুধু প্রাতিষ্ঠানিক সনদই দেখে না, পাশাপশি আপনার আরও কোনো বিশেষ যোগ্যতা আছে কিনা তা দেখে। ব্যাপারটা এমন, জিপিএ-৫ তো অনেকেই পায়, আপনি জিপিএ-৫ অর্জনের পাশাপাশি আর কী অর্জন করেছেন, দেখার বিষয় সেটিই।


অতএব, আপনি যদি বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের শিক্ষার্থী হয়ে থাকেন তবে এখন থেকেই একাডেমিক পড়াশোনার পাশাপশি ক্যারিয়ার-ভাবনাও মাথায় রাখুন। এই সময় আপনি যেসব বিষয়ে মনযোগ দিতে পারেন :

Header Pic 3পছন্দনীয় কোর্স করুন

  • আপনি যে বিষয়ে পড়াশোনা করছেন, ভবিষ্যতে সেই বিষয়ভিত্তিক পেশা যদি বেছে নিতে চান তবে এখন থেকেই বিশেষ কিছু কোর্সে ভর্তি হতে পারেন। এই কোর্স আপনার একাডেমিক রেজাল্ট ভালো করতে যেমন সহায়তা করবে তেমিনি ভবিষ্যতে চাকরি পেতেও সহায়তা করবে। ধরা যাক, আপনি সমাজবিজ্ঞান বিষয়ে স্নাতক পড়ছেন। পেশা হিসেবে দেশি-বিদেশি এনজিও আপনার প্রথম পছন্দ। তাহলে দেরি না করে গবেষণা ও জরিপ সংক্রান্ত বিভিন্ন কোর্সে ভর্তি হয়ে যান। এছাড়া কোনো গবেষণা প্রতিষ্ঠানে ইন্টার্ন হিসেবে খন্ডকালীন কাজ শুরু করে দিতে পারেন। এতে অভিজ্ঞতা বাড়বে। আর কে না জানে, চাকরির বাজারে অভিজ্ঞতার সনদের কদর সবচেয়ে বেশি।

উচ্চতর ডিগ্রি নিন

  • আপনি যদি শিক্ষকতা কিংবা গবেষণাধর্মী পেশায় নিয়োজিত হতে চান তবে উচ্চতর ডিগ্রি নিন। অর্থাৎ স্নাতকোত্তর ডিগ্রি নিন। প্রয়োজনে এমফিল ও পিএইচডি ডিগ্রি নিন। অপনার আগ্রহের বিষয়ে যত রকমের উচ্চতর কোর্স রয়েছে সেসব কোর্স করুন।

পছন্দকে গুরুত্ব দিন

  • সবার আগে নিজের আগ্রহের জায়গা খুঁজে বের করুন। নিজের পছন্দকে গুরুত্ব দিন। মনে রাখবেন, পেশা এমন একটি বিষয় যেখানে নিজের সর্বোচ্চ ঢেলে না দিলে সফল হওয়া যায় না। সুতরাং আপনি যদি পেশাজীবনে সফল হতে চান তবে নিজের সবটুকু ঢেলে দিতে হবে। কিন্তু যে কাজে আপনি কোনো আগ্রহ খুঁজে পান না সে কাজে নিজেকে কী করে ঢেলে দেবেন? তাই সবার আগে নিজের পছন্দ নির্বাচন করুন। তারপর সেই পছন্দ অনুযায়ী নিজেকে প্রস্তুত করুন। এজন্য বিভিন্ন ধরনের সংক্ষিপ্ত কোর্স ও প্রশিক্ষণ নিন।

যোগাযোগ বাড়ান

  • আত্মবিশ্বাস বাড়াতে অনুপ্রেরণা লাগে। আপনি আপনার চারপাশ থেকে অনুপ্রেরণা খুঁজে নিন। এ জন্য আপনার নেটওয়ার্ক বাড়াতে হবে। আপনার বন্ধু স্বজন তো বটেই, ফেসবুকের আধা-পরিচিত মানুষের কাছ থেকেও নিতে হবে অনুপ্রেরণা। তাই যতদূর সম্ভব যোগযোগ বাড়ান। নিজের নেটওয়ার্ক বিস্তৃত করুন। আপনার চারপাশের সফল মানুষরা কীভাবে পেশাজীবনে সফল হলেন সে বিষয়ে তাদের কাছ থেকে পরামর্শ নিন। তারা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় কোনো বিশেষ প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন কিনা সে ব্যাপারে খোলামেলা আলোচনা করুন।

ইউএসএ টুডে অবলম্বনে

Sharing is caring!

Leave a Comment