রিয়েল এস্টেট-এ গ্রাজুয়েশনের সাথেই চাকুরি

রিয়েল এস্টেট-এ গ্রাজুয়েশনের সাথেই চাকুরি

  • সাইফুল ইসলাম খান

ফেসবুকে স্ক্রল করতে করতে ছোট্ট একটি পোস্টারে চোখ আটকে যায় বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিচ্ছু এক শিক্ষার্থীর। হলুদ ব্যাকগ্রাউন্ডের পোস্টারের উপর স্পষ্টাক্ষরে লেখা কয়েকটি কথা দারুণভাবে আকৃষ্ট করে তাঁকে। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিচ্ছু সাজিদ মাথা চুলকে ভাবেন, ঠিকই তো!

পোস্টারে লেখা ছিল–টিউশন ফি-তে ডিসকাউন্ট অথবা ওয়েবার নিয়ে পড়বেন নাকি পড়া শেষে তিন মাসের মধ্যে চাকরিতে ঢুকবেন? চিন্তা করুন।

সদ্য উচ্চমাধ্যমিক পাশ সাজিদ চিন্তা করে মনে মনে বলেন, ঠিকই তো! পড়াশোনার পাশাপাশি চাকুরি করে যদি টিউশন ফি জোগাড় করা যায় তাহলে ডিসকাউন্ট, ওয়েবার এসবের দরকার কী?

সাজিদ খোঁজখবর নিয়ে জানলেন, এমন সুযোগ রয়েছে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির রিয়েল এস্টেট বিভাগে। এই বিভাগের শিক্ষার্থীরা স্নাতক পাশ করার আগেই স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠানগুলোতে চাকরি পেয়ে যায়। ২০১৯ সালে এই বিভাগের ২৪জন শিক্ষার্থী সমাবর্তনের আগেই চাকুরিতে প্রবেশ করেছেন। ২০২১ সালে ২জন শিক্ষার্থী ইন্টার্নশিপ চলার সময়েই চাকুরি পেয়েছেন। এছাড়া দ্বিতীয়বর্ষ থেকেই শিক্ষার্থীরা দেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে খন্ডকালীন চাকুরি পেয়ে যান।

এমন এক বিভাগে ভর্তি না হওয়াটা নির্বুদ্ধিতা নয় কী? সাজিদ তার অভিভাবকের সঙ্গে কথা বলে সিদ্ধান্ত নেন খুব দ্রুতই ভর্তি হয়ে যাবেন ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির রিয়েল এস্টেট বিভাগে।

শুধু সাজিদ নয়, এই সময়ের যেকোনা বুদ্ধিমান শিক্ষার্থী মাত্রই জানেন, মানুষের তৃতীয় মৌলিক চাহিদা আবাসন। সামনের দিনগুলোতে এই খাতে দক্ষ জনবলের চাহিদা বাড়তেই থাকবে।

বেসরকারি উদ্যোগে বানিজ্যিক ভিত্তিতে মানুষের আবাসন চাহিদা মেটাবার লক্ষ্যে বিভিন্ন শ্রেণীগোষ্ঠীর জন্য বিবিধ পরিকল্পনা নিয়ে বাংলাদেশে রিয়েল এস্টেট ক্ষেত্রের আবির্ভাব। সেটিও খুব বেশী দিনের কথা নয়। ক্রমঃবর্ধমান চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে স্বল্প পরিসরে শুরু হওয়া চরম সম্ভাবনাময় এ ক্ষেত্রটি দ্রুতগতিতে প্রসারিত হচ্ছে। প্রথম দিকে হাতে গোনা কিছু ডেভলপার কোম্পানি ঢাকা কেন্দ্রিক এ ক্ষেত্রটি নিয়ন্ত্রণ করলেও বর্তমানে ঢাকা ও এর বাইরের বড় শহরগুলোতে ছড়িয়ে পরা রিয়েল এস্টেট কোম্পানির সংখ্যা দু’হাজারেরও অধিক। সাম্প্রতিক সময়ে, বাণিজ্যিক মাত্রা ছাড়িয়ে ক্রেতার সংস্থাপন সংক্রান্ত বিভিন্ন চাহিদা, দুর্যোগ মোকাবিলায় ভবনের দৃঢ়তা, দীর্ঘস্থায়িত্ব, দর্শণীয় নান্দনিকতা প্রভৃতি বিষয়গুলো দ্রুত প্রসারমান রিয়েল এস্টেট ক্ষেত্রটিতে বিজ্ঞানসম্মত ও প্রাতিষ্ঠানিকভাবে পূরণ করার ওপর জোর দেয়া হচ্ছে।

অপার সম্ভাবনার কথা মাথায় রেখে বাংলাদেশেও প্রথমবারের মত রিয়েল এস্টেট বিষয়টির ওপর উচ্চশিক্ষা কার্যক্রম চালু হয়েছে। আর, বাংলাদেশের বিপুল সম্ভাবনাময় রিয়েল এস্টেট খাতকে প্রতিষ্ঠানিক, তত্ত্বীয় ও ব্যবহারিক জ্ঞানসম্পন্ন উচ্চমানের স্নাতক ও স্নাতোকোত্তর ডিগ্রিধারী মেধা সরবরাহের গুরু দায়িত্ব কাঁধে নিয়ে এগিয়ে আসার এ কাজটি সফলতার সাথে বাংলাদেশে প্রথমবারের মত শুরু করেছিলো ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি (ডিআইইউ) যা বর্তমানেও এককভাবেই পরিচালিত হচ্ছে।

গ্রীষ্মকালীন সেমিস্টার ২০০৮ থেকে শুরু করা ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি’র ডিপার্টমেন্ট অব রিয়েল এস্টেট চার বছর মেয়াদি শিক্ষা ব্যবস্থার আওতায় ব্যাচেলর অব রিয়েল এস্টেট ডিগ্রি কার্যক্রম চালু করেছে। এ প্রসঙ্গে উপাচার্য প্রফেসর ড. এম. লুৎফর রহমান বলেন “আবাসনের ক্রমবর্ধমান চাহিদার সাথে বাড়ছে রিয়েল এস্টেট কোম্পানির সংখ্যা। এ সেক্টরটিতে বিষয় ভিত্তিক জ্ঞানসম্পন্ন লোকবলের ব্যাপক চাহিদা সত্ত্বেও যোগান নাই। এটা রিয়েল এস্টেট খাতের বিজ্ঞানসম্মতভাবে এগিয়ে যাবার অন্তরায়। দেশের বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর নিরাপদ আবাসন নিশ্চিত করা ও আবাসন সংকট মোকাবিলায় বিষয়ভিত্তিক লোকবল সরবরাহের ব্রত নিয়ে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে রিয়েল এস্টেটের মত নতুন বিষয়ে পড়াশুনা করে ক্যারিয়ার তৈরীর সুযোগ চালু করেছে। এটা বলাই যায়, এখান থেকে ভাল রেজাল্ট করে বের হয়ে কাওকেই বেকার বসে থাকতে হবে না।” গ্রাজুয়েশন প্রোগ্রাম শেষ হওয়ার আগেই অর্থাৎ ইন্টার্নশিপ চলাকালীন সময়েই চাকুরীতে যোগদানের অসংখ্য নজির আছে। এর মূল কারন হচ্ছে এই শাখায় দক্ষ মানুষের অভাব থাকায় চাহিদা রয়েছে দক্ষ সব শিক্ষার্থীদের, যাদের হাত ধরে এগিয়ে যাওয়ার এবং দারুন কিছু করার সুযোগ রয়েছে।

সন্তানের নিশ্চিত ভবিষ্যৎ গড়তে অভিভাবকগণ রিয়েল এস্টেট বিষয়টিকে গুরুত্ব দিতে শুরু করেছেন। এ বিষয়টিতে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীরা নিশ্চিত ভবিষ্যতের সুখস্বপ্ন বুকে লালন করে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির রিয়েল এস্টেট ডিপার্টমেন্টে পড়াশুনা চালিয়ে যাচ্ছে। এ খাতে নিজেকে সংশ্লিষ্ট করতে পেরে শিক্ষার্থীরাও আনন্দিত। বাস্তবসম্মত শিক্ষা কারিকুলাম, মানসম্পন্ন শিক্ষক মন্ডলী, যুগোপযোগী শিক্ষা উপকরণ, উপযুক্ত শিক্ষার পরিবেশ, সীমিত শিক্ষাব্যায় ডিআইইউ রিয়েল এস্টেট ডিপার্টমেন্টকে স্বকীয় ও অনন্য উচ্চতায় নিয়ে গিয়েছে। ডিপাটমেন্টের একটি দারুন বিষয় হচ্ছে সবার আন্তরিকতা। এখানে শিক্ষক শিক্ষার্থীদের মাঝে রয়েছে দুর্দান্ত বোঝাপড়া। পুরো ডিপাটমেন্টটাই একটি পরিবারের মতো। পড়াশুনার পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের যোগ্য করে তোলার পেছনে এবং প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের সম্মিলিত করে রাখতে আছে ডিপাটমেন্টাল সংগঠন ‘‘রিয়েল এস্টেট ক্লাব”।

ডিপার্টমেন্টটিতে রয়েছেন কিছু দক্ষ মানুষ গড়ার কারিগর। এডভাইজিং প্যানেল থেকে নিয়ে ফ্যাকাল্টিসহ সবারই রয়েছে এই শাখায় অভূতপূর্ব সাফল্য এবং জ্ঞান। একইসাথে আছে কোর্স কারিকুলাম তৈরি করা থেকে নিয়ে তা সঞ্চালনায় আছে দুর্দান্ত পেশাদরিত্ব।

ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে শুরু হওয়া চার বছর মেয়াদী ও ১২৬ ক্রেডিটের ব্যাচেলর অব রিয়েল এস্টেট বিষয়ে রিয়েল এষ্টেট ব্যবসার পরিচিতি, মূলনীতি, আধূনিক নগরায়ন, পরিবেশ বিজ্ঞান, রিয়েল এষ্টেটের সাথে পরিবেশের সম্পর্ক, রিয়েল এষ্টেটে বিপনণ ব্যবস্থাপনা, রিয়েল এষ্টেটে পরিকল্পনায় সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং ও আর্কিটেক্ট ইঞ্জিনিয়ারিং এর মৌলিক বিষয় সমূহ, রিয়েল এষ্টেটে আইন, রিয়েল এষ্টেটে জি আই এস, বাংলাদেশে রিয়েল এষ্টেটের সমসাময়িক ইস্যূ, রিয়েল এষ্টেটে বিনিয়োগ ও মূল্যায়ন, রিয়েল এষ্টেটে পরিসংখ্যান সহ সর্বমোট ৪২ টি বিষয় পড়ানো হয়। এখানে উল্লেখ্য যে, রিয়েল এস্টেট ডিপার্টমেন্টের শিক্ষার্থীরা ব্যবসায়িক শিক্ষা, সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং এবং আর্কিটেকচার বিভাগের সাথেও ক্লাস করে থাকে। একইসাথে ব্যবসায়িক শিক্ষা, সিভিল ও আর্কিটেকচার বিভাগের সম্মিলিত কোর্সগুলো করে থাকে, যা তাদের স্থাপত্য ও আবাসন ব্যবস্থায় আরো দক্ষ জনশক্তি হিসেবে গড়ে তুলবে।

এস.এস.সি. ও এইচ.এস.সি.তে ভাল জিপিএ ধারীসহ ভর্তি হবার পর ডিপার্টমেন্টের প্রতি সেমিস্টারে ভাল রেজাল্ট অর্জনকারী মেধাবীদের বিভিন্ন পর্যায়ের বৃত্তি প্রদান করা হয়ে থাকে। এছাড়াও গরীব ও মেধাবী শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রেও ডিআইইউ বিশেষ ছাড় দিয়ে থাকে। ভালো জিপিএ এর ভিত্তিতে স্কলারশিপ এর ব্যবস্থা আছে। এছাড়াও যারা সেমিস্টারে ভালো রেজাল্ট করবে তাদের জন্যও আছে স্কলারশিপ।

ক্যারিয়ার গড়তে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির রিয়েল এস্টেট বিভাগকে বেছে নেয়া, এ বিষয়ে পড়াশুনার পর কর্মক্ষেত্রের সুযোগ এবং বিভাগটির বর্তমান অবস্থা ও ভবিষ্যত পরিকল্পনা প্রসঙ্গে বিভাগীয় প্রধান সহকারী অধ্যাপক ড. আমির আহমেদ বলেন, “ডিআইইউ এর চার বছর মেয়াদি ব্যাচেলর অব রিয়েল এস্টেট বিষয়ে একাডেমিক ডিগ্রী অর্জনের পথে একজন শিক্ষার্থী নিয়মিতভাবে ডিপার্টমেন্ট আয়োজিত আমন্ত্রিত বিশেষজ্ঞ পরিচালিত বিষয়ভিত্তিক বিভিন্ন সেমিনার. সিম্পোজিয়াম, ওয়ার্কশপ, ব্যবহারিক প্রোজেক্ট, বাণিজ্য উৎসব প্রভৃতিতে অংশ নিয়ে থাকে। মূল কোর্সের সাথে সন্নিবেশিত এসব কার্যক্রম প্রতিটি শিক্ষার্থীকে পুরোপুরি দক্ষ ও বাস্তব জ্ঞান সম্পন্ন করে তোলে। সিনিয়র মেধাবী শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন রিয়েল এস্টেট কোম্পানিতে পার্ট টাইম চাকুরির জন্য পাঠানো হয়। বিষয়টির গুরুত্ব অনুধাবন করে ও শিক্ষার্থীদের ক্যারিয়ার সম্ভাবনার কথা মাথায় রেখে ডিআইইউ স্নাতকের পাশাপাশি ইতোমধ্যেই স্নাতোকত্তোর পর্যায়ের এমবিএ মেজর ইন রিয়েল এস্টেট চালু করেছে, যাতে ভর্তি হয়ে আরো উচ্চতর ডিগ্রী অর্জনের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা নিশ্চিত সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করতে পারে।”

ডিআইইউ রিয়েল এস্টেট বিভাগের শিক্ষার্থীরা এ বিভাগে নিজেদের ভর্তি হওয়া ও বিভাগের বর্তমান প্রেক্ষাপট বর্ণনা করে বলেন, “ডিআইইউ কে ধন্যবাদ দিতে চাই রিয়েল এস্টেট ডিপার্টমেন্টের মত একটি নতুন ও সম্ভাবনাময় বিষয় খোলার জন্য। এখানকার শিক্ষাব্যবস্থা মানসম্মত, শিক্ষার পরিবেশ বন্ধুভাবাপন্ন এবং শিক্ষাব্যয় সীমিত। এখান থেকে ভাল রেজাল্ট করে সামাজিক দায়বদ্ধতা পূরণের পাশাপাশি নিজেদের জন্য ভাল কিছু করতে পারব বলে বিশ্বাস করি। আমাদের অন্যতম সেরা সাফল্য শতভাগ চাকুরীর নিশ্চয়তা। ভর্তি হওয়ার আগে থেকেই শুনে আসছিলাম এই শতভাগ চাকুরীর বিষয়টি। তবে বলতে দ্বিধা নেই গত দুই বছরে স্বচক্ষে তার প্রমাণ পেয়েছি”।

যাদের লক্ষ ব্যতিক্রমের দিকে, যাদের লক্ষ উন্নতমানের চাকুরীর দিকে, যারা চাচ্ছেন দ্রুত নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে তাদের জন্য অবশ্যই রিয়েল এস্টেট একটি দারুণ প্রছন্দনীয় বিষয় হবে। আর যেহেতু এই শাখায় নিঃসন্দেহে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ডিপাটমেন্ট অব রিয়েল এস্টেট এর রয়েছে অসংখ্য সাফল্য, সুতরাং শিক্ষার্থীদের জন্য এর সাথে যুক্ত হতে পারাটাও দারুণ সুযোগ হবে বলে মনে করি।

ভর্তির যাবতীয় তথ্য পেতে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, ৪/২ সোবাহানবাগ, ধানমন্ডি, ঢাকা অথবা ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, ড্যাফোডিল স্মাট সিটি. আশুলিয়া এই ঠিকানায় যোগাযোগ করতে পারেন। অনলাইনেও ভর্তির ব্যবস্থা রয়েছে। প্রয়োজনীয় টেলিফোন নাম্বার সমূহঃ ৪৮১১১৬৩৯, ৪৮১১৭১১৫, ৪৮১১৩৬৯০-৯১ বর্ধিতঃ ৪৪৪, ৫৫৫। মোবাইলঃ ০১৭১৩৪৯৩০৫০-১, ০১৮৪১৪৯৩০৫০, ০১৭১৩৪৯৩১৪১। ইমেইলঃ admission@daffodilvarsity.edu.bd ওয়েবঃ www.daffodilvarsity.edu.bd

প্রতিবেদক: ঊর্ধ্বতন জনসংযোগ কর্মকর্তা, ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি

Sharing is caring!

Leave a Comment