চাকরি পেতে চাই বাড়তি যোগ্যতা
- ক্যারিয়ার ডেস্ক
প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষাই আপনার চাকরির জন্য যথেষ্ট নয়! অনেক চাকরিপ্রার্থী আছেন, যাদের প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার কোনো কমতি নেই, অথচ হস্তগত শিক্ষার অভাবে তারা চাকরি পাওয়া থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। তাই পুঁথিগত শিক্ষার পাশাপাশি হস্তগত শিক্ষা কিন্তু কম গুরুত্বপূর্ণ নয়। চাকরিদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোর দাবি, যোগ্য চাকরিজীবীর অভাবে তাদের অনেক সময়ই সমস্যার মুখোমুখি হতে হয়।
চাকরির নানা ধরনের ক্ষেত্র থাকলেও তার সবই যে আপনার জানা রয়েছে, এমনটি নয়। আবার হয়তো ক্ষেত্রটি সম্পর্কে আপনি জানেন, কিন্তু কখনও ভেবে দেখেননি যে এই খাতে আপনার চাকরির জন্য উজ্জ্বল ভবিষ্যত রয়েছে। এমনই একটি ক্ষেত্র হলো বাংলাদেশে কার্যক্রম পরিচালনা করে চলা বিদেশি ও মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানিগুলো। এই খাতের নামকরা অনেক প্রতিষ্ঠানই আছে যেগুলো সম্পর্কে আপনি আসলে আগে থেকেই জানেন। এসব প্রতিষ্ঠানে চাকরির কথা না ভেবে থাকলে ভাবতে পারেন এখনই!
চোখ কান খোলা রাখুন
প্রথমেই খোঁজ নিয়ে দেখুন, বাংলাদেশে এমন মাল্টিন্যাশনাল বা বিদেশি কোন কোন কোম্পানি কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। প্রথমে এর একটি তালিকা তৈরি করুন। এরপর এই তালিকা থেকে আপনি সুনির্দিষ্ট কোনো এক বা একাধিক কোম্পানির বিষয়ে আগ্রহী হলে সেই কোম্পানি বা সংস্থাগুলোর একটা তালিকা তৈরি করুন। তারপর এক এক করে সেই সংস্থা বা অফিসগুলো সম্পর্কে বিস্তারিত খোঁজখবর করুন। এভাবেই শুরু হোক আপনার নতুন পথচলা।
যোগ্যতার বেড়িবাঁধ
আপনি যেহেতু চাকরিপ্রার্থী, তাই ধরে নেওয়া যায় আপনি যোগ্যই। কেননা, সাধারণত এসব সংস্থা বা অফিসগুলোতে চাকরি করার জন্য প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার চেয়ে আপনার বাস্তবমুখী কাজের যোগ্যতাকে গুরুত্ব দেওয়া হয় বেশি। সুতরাং ভড়কে যাবেন না। আবার অনেকে হয়তো এজন্য খুশিই হচ্ছেন। কারণ যেখানে বাংলাদেশি প্রতিষ্ঠানগুলো সনদপত্র ছাড়া তেমন কিছুই করে না। তবে বাড়তি যোগ্যতা স্বরূপ আপনাকে ইংরেজিতে দক্ষ হতে হবে। প্রযুক্তি বিষয়ে বিশেষ দক্ষতা থাকতে হবে আপনার। অনলাইন জগত্ মানে শুধু ফেসবুক দুনিয়া নয়, এই বাস্তবতা আপনাকে জানতে হবে এবং অনলাইন দুনিয়ার খোঁজখবর সম্পর্কেও জানা আবশ্যক।
আবেদনের কানুন
সবকিছু বিবেচনা করে যদি নিজেকে যোগ্য মনে করেন তবে আপনাকে যা করতে হবে তা হচ্ছে অনলাইনে সজাগ থাকতে হবে। কারণ, এই সংস্থাগুলোতে চাকরির আবেদন অনলাইনে গ্রহণ করা হয়। যদি চাকরির পদ খালি থাকে তবে সেখানেই বিস্তারিত জানতে পারবেন, কী কী যোগ্যতা লাগবে এবং কেমন করেই বা সেখানে আবেদন করবেন—সেই মোতাবেক আবেদন করুন। যথাসময়ে ডাক পড়বে আপনার।
পরীক্ষা-ভাইভা
এসব প্রতিষ্ঠানেও কিন্তু আপনাকে পরীক্ষা এবং ভাইভার মুখোমুখি হতে হবে। অনেক প্রতিষ্ঠানে আবার সরাসরি প্র্যাকটিক্যাল কাজের ক্ষেত্রে আপনাকে নিয়ে যাওয়া হবে। আপনি যদি এসব ক্ষেত্রে নিজেকে মানিয়ে নেওয়ার যোগ্যতা প্রদর্শন করতে পারেন, তাহলেই আপনাকে চাকরিতে নিয়োগ দেওয়া হবে।
চাকরি যেমন
চাকরিগুলো তুলনামূলক উপভোগ্য। কাজের ক্ষেত্র খুবই চমৎকার। অফিসের পরিবেশ, সুযোগ-সুবিধা নিয়ে আপনাকে ভাবতে হবে না। সাধারণত এসব অফিসে আপনি দোভাষী, প্রজেক্ট ম্যানেজার, প্রজেক্ট কো-অর্ডিনেটর, ফিল্ড সুপার, অফিস এক্সিকিউটিভ পদের জন্য কাজ করতে পারবেন। এগুলো ছাড়াও অফিসগুলো তাদের নিজেদের দেশের মান বিবেচনায় অন্যান্য পদের জন্যও চাকরির নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে থাকে।
বেতন ভাতা
যদি সনদপত্রের পাশাপাশি হাতের কাজের দক্ষতা থাকে তাহলে বেতন নিয়ে আপনাকে খুব ভাবতে হবে না। যদি বড় সংস্থাগুলো হয়, তাহলে আপনার চাহিদার তুলনায় খারাপ কিছু নিশ্চয়ই হবে না।
খোঁজ রাখুন
বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া হলেও আপনি এসব প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন প্রজেক্টে কাজ করতে পারবেন। বিশেষ করে ব্রিটিশ কাউন্সিল বাংলাদেশ অফিস, সেভ দ্য চিলড্রেনের মতো সংস্থাগুলোতে। এ ছাড়াও রুম টু রিড, ইউনিসেফ, সুন্দরবন, পরিবেশ, মানবতা ইত্যাদি সম্পর্কিত অনেক সংস্থা বাংলাদেশে বড় অফিস নিয়ে কাজ করছে। এসব সংস্থা এবং প্রতিষ্ঠানে চুক্তিভিত্তিক, প্রজেক্টভিত্তিক অনেক চাকরির সুযোগ আছে। একটু খোঁজখবর রাখলেই ভালো পদে চাকরি পেতে পারেন।
তাই মাল্টিন্যাশনাল বা বিদেশি কোম্পানি ও সংস্থাগুলোর খোঁজে লেগে পড়ুন আজই। সেই সাথে বাড়াতে থাকুন নিজের যোগ্যতার খাত।