উৎসাহ, উদ্দীপনায় সহজাত একজন

উৎসাহ, উদ্দীপনায় সহজাত একজন

  • ক্যারিয়ার ডেস্ক 
একটা গল্প বলি আপনাকে। এক ব্যবসায়ী কাঁকড়া রপ্তানি করে জীবন ধারণ করে। নানা ধরনের কাঁকড়া ড্রামে ভরে জাহাজে করে বিক্রি করা তার কারবার। এরমাঝে আবার দেশি-বিদেশির ব্যাপার রয়েছে। তো একদিন এরকম ড্রাম ভর্তি কাঁকড়া জাহাজে তুলে দিয়ে বাড়িতে চলে আসার পর রাতে গভীর ঘুম থেকে হঠাত্ জেগে উঠল সে। মস্ত বড় ভুল হয়ে গেছে! ড্রামের ঢাকনা লাগানো হয়নি! এখন তো সব কাঁকড়া ড্রাম বেয়ে বেরিয়ে যাবে!! স্ত্রীকে নিজের ভুলের কথা বলল সে। স্ত্রী সব শুনে নিশ্চিন্ত মনে ঘুমাতে বলল ব্যবসায়ীকে। কারণ কি? ঢাকনা ছাড়া ওই ড্রামে সব কাঁকড়া ছিল দেশি। আর রূপকার্থে দেশি কাঁকড়ার স্বভাব কী? যে উঠে যাবে তাকে টেনে নামিয়ে আনা। তাই কাঁকড়াগুলো আসলে বের হতে পারবে না। পরদিন খুব সকালে খোঁজ নিয়ে ব্যবসায়ী জানতে পারল যে আসলেই তাই। একটা কাঁকড়াও খোলা ড্রাম পেয়ে বের হয়ে আসতে পারেনি। কাঁকড়ার রূপকার্থে আসলে এটা আমাদের স্বভাবের দিকটি চিহ্নিত করে।
রাজধানীর মহাখালীতে একটা অফিসে বসে চা খেতে খেতে কথা হচ্ছিল গল্পবক্তা ডন সামদানীর সঙ্গে। প্রসঙ্গক্রমে উপর্যুক্ত গল্পটা বললেন তিনি। আমাদের এই ‘স্বভাবজাত’ টেনে নামিয়ে আনার অভ্যাসটাকে দূরে ঠেলে দিয়ে মানুষকে উত্সাহ, উদ্দীপনা প্রদানের কাজ করে যাচ্ছেন তিনি নিরলসভাবে। গত ২৮ জুন এই কাজের তিন বছর পার করল তারই তৈরি ‘ডন সামদানী ফ্যাসিলিটেশন অ্যান্ড কন্সাল্টেন্সি’।
এখন পর্যন্ত গ্রামীণফোন, শেভরন, পারফেট্টি, হোলসিম, ইউএনডিপি, ইস্টার্ন ব্যাংকসহ বিভিন্ন কর্পোরেট কোম্পানির সাড়ে ৪ হাজারেরও বেশি কর্মকর্তার পাশাপাশি বিভিন্ন পাবলিক ও প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০ হাজারেরও বেশি ছাত্রছাত্রীর সঙ্গে কাজ করেছে ডন সামদানী ফ্যাসিলিটেশন অ্যান্ড কন্সাল্টেন্সি। এফএম রেডিও শোয়ের মাধ্যমে বিভিন্ন ক্ষেত্রে সফল তারকাদের জীবনের গল্প প্রচার করার মধ্য দিয়ে তারা উত্সাহিত করেছে বহু মানুষকে। সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমগুলোতে উদ্দীপনামূলক ভিডিও ও কন্টেন্ট শেয়ার করে তারা বদলে দিয়েছে চিন্তাজগত্।

নিজের নামে প্রতিষ্ঠা করা এই ফাউন্ডেশনের চিফ ইন্সপিরেশনাল অফিসার হিসেবে কাজ করছেন ডন সামদানী। প্রথমে একটি দেশীয় বিজ্ঞাপনী সংস্থা ও পরবর্তীতে বহুজাতিক একটি কোম্পানিতে উঁচু পদে কাজ করা এই মানুষটি নিজের চিন্তা-ভাবনার সূত্র ছড়িয়ে দিতে চেয়েছেন বাকি সবার মাঝে। আর তারই ফসল এই ফাউন্ডেশন।

হতাশা, হিংসা-বিদ্বেষ, মানসিক অথর্বতা থেকে নিজেকে সরিয়ে এনে যদি একজন মানুষ জীবনের গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রগুলোতে উত্সাহ নিয়ে পজিটিভভাবে কাজ করতে পারেন, তবে সেটাকেই সফলতা হিসেবে দেখেন ডন সামদানী।

তার কথার সূত্র ধরে শেষাংশে বলা যেতে পারে যে, জীবনে আঁধার কাটিয়ে আলোর পথে চলার সময় আসলে সবটুকুই। আমাদের প্রয়োজন শুধু সিদ্ধান্ত নেওয়ার।

সূত্র: ইত্তেফাক

Sharing is caring!

Leave a Comment