ম্যানেজারও নেতা হতে পারেন
- ক্যারিয়ার ডেস্ক
প্রতিষ্ঠানের অতি প্রয়োজনীয় একটি পদ ‘ম্যানেজার’ বা ‘ব্যবস্থাপক’। আবার অনেকেই অফিসে নিজের দায়িত্ব বোঝাতে এ শব্দটি ব্যবহার করেন। ম্যানেজাররা একটি বিভাগ বা প্রজেক্টের প্রধান। কিন্তু তাঁরা সামগ্রিক অর্থে নেতা নন। নেতৃত্ব অর্জন করতে হয়। এখানে বিশেষজ্ঞরা ম্যানেজার এবং লিডারের মধ্যে পার্থক্যসূচক বিষয়গুলো তুলে ধরেছেন।
♦ ম্যানেজার নিয়ন্ত্রিত আর নেতা আস্থাভাজন
- এ দুয়ের মধ্যে অন্যতম পার্থক্য এটি। ব্যবস্থাপকরা বসের ভ‚মিকায় কর্মীবাহিনীকে কাজের নির্দেশনা দেন। তাঁরা যেকোনো লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য হাসিলের পথে এগিয়ে নেন সবাইকে। কিন্তু নেতারা দেন পথের দিশা। উদ্ভাবনী পন্থায় তাঁরা সবাইকে প্রাণবন্ত করে তোলেন। দলের প্রত্যেক সদস্য ও নিজের মধ্যকার পারস্পরিক বিশ্বাস ক্রমেই নিরেট করে তোলা নেতার অন্যতম কাজ। অন্ধকার থেকে কর্মীদের এক টানে আলোর পথে নিয়ে যান তিনি। গোটা বিভাগের উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধিতে তাঁরা উদ্দীপনার জোগান দেন। এ কাজে তাঁরা ম্যানেজারকে দিকনির্দেশনা দিয়ে থাকেন। আবার একজন ম্যানেজারও তাঁর কর্মপদ্ধতি ও কর্ম-আদর্শের সমন্বয় ঘটিয়ে নেতৃত্বের পথে এগোতে পারেন। গুণের প্রকাশে কর্মীদের চোখে তিনি নেতা হয়ে ওঠেন। এটা কেবল নির্দেশনা অনুযায়ী সঠিক পথে এগিয়ে নেওয়াই নয়।
♦ ম্যানেজার প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করেন আর নেতার থাকে দৃষ্টিভঙ্গি
- ব্যবস্থাপনা ও নেতৃত্ব পরিপূরক হতে পারে। প্রতিটি প্রতিষ্ঠানের ন্যূনতম ব্যবস্থাপনা দরকার। এতে করে প্রতিষ্ঠানের কর্ম-কাঠামো সুষ্ঠুভাবে পরিচালিত হয়। এর মাধ্যমেই লক্ষ্য নির্ধারিত হয়। গোটা প্রক্রিয়াকে সক্রিয় রাখতে ম্যানেজারদের কর্মসূচি নির্দিষ্ট থাকে। প্রতিষ্ঠানকে নিরবচ্ছিন্নভাবে কর্মমুখর রাখা ম্যানেজারের দায়িত্ব। কিন্তু নেতাদের বিচরণ আরো গভীরে। তাঁরা সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে প্রয়োজনে সব কিছু বদলে দেন। ভবিষ্যতের প্রতি দূরদৃষ্টিসম্পন্ন হওয়াই তাঁদের অন্যতম লক্ষ্য। একজন ম্যানেজার একই প্রক্রিয়ায় নিজের মধ্যে নেতৃত্বের স্ফুরণ দেখাতে পারেন। কেবল তালিকা ধরে সফলভাবে কাজ করে যাওয়াই নেতার একমাত্র আলামত নয়। প্রতিনিয়ত পরিবর্তনের সঙ্গে উদ্ভাবনী থাকাটাই নেতৃত্বের লক্ষণ।
♦ম্যানেজার কাজ গুছিয়ে রাখেন আর নেতা নেতৃত্ব দেন
- পুরোটাই দৃষ্টিভঙ্গির বিষয়। উভয় পক্ষকেই যাবতীয় কথা-কাজে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ থাকতে হয়। কর্মীবাহিনী কিভাবে এগোবেন বা কোনগুলো আঁকড়ে ধরবেন অথবা এড়িয়ে যাবেন, তা অভিভাবকের মতো শিখিয়ে দেন ম্যানেজার ও নেতা। তবে ম্যানেজাররা সাধারণত কর্মযজ্ঞে গোছালো ভাব আনার চেষ্টায় ব্যস্ত থাকেন। নেতার লক্ষ্য, উদ্দেশ্য ও দৃষ্টিভঙ্গিকে বাস্তবায়িত করতেই কাজের নির্দেশনা কাঁধে তুলে নেন ব্যবস্থাপক। প্রয়োজনে নেতা অধীনস্ত ম্যানেজারকে দিকনির্দেশনা দিয়ে থাকেন। নেতারা সব সমস্যার সমাধানের আধার। সব বিপদে আশা-ভরসার স্থান। ম্যানেজার যদি একই দৃষ্টিভঙ্গিতে নিজের কাজ করে যান, তবে তাঁর মাঝেও নেতৃত্বের দ্যুতি স্পষ্ট হতে পারে। কর্মীরা কিভাবে কাজ করবেন এবং কোন উপায়ে বাধা টপকে যাবেন তা একজন ম্যানেজারের উর্বর মস্তিষ্ক থেকে বেরিয়ে আসতে পারে। ঠিক যে কাজটি একজন নেতা করেন।