স্মার্ট ওয়ার্কার হতে যা করবেন

স্মার্ট ওয়ার্কার হতে যা করবেন

  • ক্যারিয়ার ডেস্ক

ওয়ার্কার নয় স্মার্ট ওয়ার্কার হওয়াটা বড় কথা। বর্তমান প্রেক্ষাপটে কর্মস্থলে এ গুণটির চাহিদা তুঙ্গে। কারণ একই ব্যক্তিকে অফিস সামলানো থেকে শুরু করে সংসারের খুঁটিনাটি বিষয়ও নখদর্পণে রাখতে হয়। অন্যথায় পিছিয়ে পড়তে হয় ক্যারিয়ার দৌড়ে। স্মার্ট ওয়ার্কাররাই পারেন এসব কাজ এফিশিয়েন্টলি সামলাতে।


একটি প্রতিষ্ঠিত অটোপার্টস কোম্পানির কো-অর্ডিনেটর এবং সিনিয়র ম্যানেজারের দায়িত্ব পালন করছেন ফয়সাল সাহেব (ছদ্মনাম)। পদটি যতটা গুরুত্বপূর্ণ, তেমনি কাজের ক্ষেত্রেও খুব একটা আলাদা নয়। কী নেই তার কাজের লিস্টে— বিদেশি ডেলিগেটদের সঙ্গে বসের অ্যাপয়েন্টমেন্ট-মিটিংয়ের সময় ম্যানেজ করা, এমনকি  শোরুমের দেখভাল করা। আর এর সঙ্গে তো আছেই মাঝে মাঝে কলকাতা ট্যুরে যাওয়া, প্রেজেন্টেশন বানানো, আবার কোনো বিশেষ ক্লায়েন্টের সঙ্গে অ্যাপয়েন্টমেন্ট— সবই সামলাতে হয় ফয়সালকে। এরই মাঝে বন্ধুবান্ধব ও শ্যালকদের নিয়ে ছুটির দিনে আড্ডা ও সন্ধ্যার পর জমিয়ে খাওয়া দাওয়া। আরও কত কী যে অফিস আওয়ারে তাকে করতে হয় তা কাউকে বলে বোঝানো অসম্ভব। কাজে সামান্য ভুল হওয়া মানেই হাজারটা প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হয় নিজের বিবেকের কাছে। একেকদিন তো এই অমানুষিক কাজের চাপ তার  কাছে ‘নাইটমেয়ার’ হয়ে দাঁড়ায়। আর এর সঙ্গে তো রয়েছেই তার  মেয়ের দায়িত্ব। যদিও স্ত্রী দীপা এ বিষয়গুলো খেয়াল রাখে তারপরও মেয়ের স্কুল, হোমওয়ার্ক এবং তাদের সঙ্গে কোয়ালিটি টাইম স্পেন্ড করা— সব মিলিয়ে মাঝে মাঝে হাঁপিয়ে ওঠেন ফয়সাল সাহেব। তাইতো মাঝে মঝে পড়ন্ত বিকেলে বন্ধুদের নিয়ে চলে যান বুড়িগঙ্গার তীরে খোলা হাওয়ায় নিজেকে একটু মেলে ধরতে। এর সঙ্গে রয়েছে বাবা ও মাকে সময় দেওয়া। পরিবারের দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি অফিসে কাজের প্রেসার সামলাতে যাদের নাজেহাল অবস্থা তাদের কাছে একটিই সলিউশন সবচেয়ে বেশি কার্যকর। তা হলো মাল্টিটাস্কিংয়ের সাহায্যে স্মার্ট ওয়ার্ক করা। ইংরেজি ‘মাল্টিটাস্কিং শব্দটির অর্থ হলো এক বিশেষ ধরনের দক্ষতা, যার সাহায্যে একাধিক কাজ একই সময়ে করা যেতে পারে। পৃথিবীজুড়ে সমীক্ষায় দেখা গেছে, ছেলেদের তুলনায় মেয়েরা অনেক বেশি দক্ষ মাল্টিটাস্কার। মাল্টিটাস্কিংয়ের প্রয়োজন এখন আমাদের সবার। দক্ষ মাল্টিটাস্কার হতে পারলেই কর্মক্ষেত্রে আপনি হয়ে উঠবেন স্মার্ট ওয়ার্কার।

  • কী করবেন :

স্মার্ট ওয়ার্কারের প্রথম এবং শেষ কথা হলো— গুছিয়ে কাজ করার ক্ষমতা। প্রতিদিন অফিস ছাড়ার আগে পরের দিনের নির্দিষ্ট কাজের একটা ‘টু ডু’ লিস্ট করে রেখে গেলে পরের দিন কাজ শুরু করতে সুবিধা হবে। এর জন্য প্রথমেই দরকার একটি ভালো প্ল্যানার কাম ডায়েরি। প্রতিদিনের নির্দিষ্ট সময়ের পাশে অফিশিয়াল এনগেজমেন্ট প্রায়োরিটি অনুযায়ী স্পষ্ট করে লিখে নিন, যাতে কোনোভাবেই ভুলে না যান। পরেরদিন সকালে ব্রেকফাস্ট করতে করতে ওয়ার্কলিস্ট চেক করে নিন।  পরে করার জন্য কোনো কাজ ফেলে রাখবেন না। অফিসে কাজ চলাকালীন অজস্র ফোন নম্বর বা অ্যাপয়েন্টমেন্ট নোট করতে হতে পারে। সমস্যা এড়াতে ফোনে কথা বলার সময় বাজে কাগজে জরুরি তথ্য লিখলেও, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ফেয়ার করে লিখে নিন।  কারণে অকারণে বাড়িতে অথবা বন্ধু-বান্ধবকে ফোন করে সময় নষ্ট করবেন না। এতে কাজের অনেক ক্ষতি হয় এবং সময়মতো কাজ শেষ করা যায় না। তাই দিনের মধ্যে একটি সময় নির্দিষ্ট করে নিন যখন আপনি পার্সোনাল ফোন কল করতে পারবেন।  কাজের চাপ যতই হোক লাঞ্চ মিস করবেন না। ক্যাফেটেরিয়ায় গিয়ে খাওয়ার সময় না থাকলে প্যাকেট লাঞ্চ নিয়ে আসুন। কাজের ফাঁকে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে লাঞ্চ অথবা ইভিনিং স্ন্যাক্সের পর্বটা শেষ করে নিন। সবচেয়ে বড় কথা স্মার্ট ওয়ার্কার হতে হলে মানসিক শক্তিটা বেশি প্রয়োজন। favicon59

Sharing is caring!

Leave a Comment