স্বপ্ন কখন দেখবেন..?

স্বপ্ন কখন দেখবেন..?

  • ক্যারিয়ার ডেস্ক

প্রতিযোগিতার যুগ! ভাবছেন ক্যারিয়ার কীভাবে সাজাবেন? অন্যদের সাথে প্রতিযোগিতায় কীভাবে সামনে আগাবেন? শুধু ভাবলেই কি চলবে? পরিকল্পনা করতে হবে, সাথে সেই অনুযায়ী কাজও আগাতে হবে। অনেকেরই প্রশ্ন থাকে, ক্যারিয়ার নিয়ে ভাবনাটা আসলে কখন থেকে শুরু করা উচিত? স্কুল থেকে? কলেজ থেকে? নাকি বিশ্ববিদ্যালয়ে কোন বিষয় পেলাম তা জানার পর থেকে? আমি বলবো আপনি যে কোন সময় ক্যারিয়ার ভাবনা শুরু করতে পারেন, গোছানো শুরু করতে পারেন নিজের ভবিষ্যত। দেখুন আমরা শিক্ষাজীবনের প্রতিটি স্তরে কীভাবে ক্যারিয়ারের জন্য নিজেকে গুছিয়ে নিতে পারি!


 

  • যখন আপনার সন্তানের স্কুলে যাওয়ার বয়স হয়ে গেল

আমাদের দেশে সাধারনত বয়স ৬ হলে, সরকারি স্কুলগুলোতে আপনি আপনার সন্তান ভর্তির সুযোগ পাবেন। এছাড়া বিভিন্ন প্রাইভেট স্কুলে সাড়ে তিন বছর বয়স হলেই বাচ্চা ভর্তির সুযোগ পাবেন আপনি। এখন কথা হচ্ছে এই বয়সে আবার ক্যারিয়ার প্ল্যানিং কি! ভেবে দেখুন, কোন কিছুই কিন্তু ফেলনা নয়! এই বয়সে আপনি আপনার সন্তানকে যা শেখাবেন, তা-তার ভবিষ্যতে গিয়ে কাজে লাগবে। তবে কি শেখাবেন সেটার সাথে সন্তানের আগ্রহের জায়গাটা একটু মিলিয়ে দেখতে ভুলবেন না যেন! আপনি সন্তানের আগ্রহ অনুযায়ী স্কুলের পাশাপাশি যেকোন একটি বিষয়ে স্কিল ডেভেলাপমেন্ট এর কাজ শুরু করে দিতে পারেন। সেটা হতে পারে ছবি আঁকা শেখা, গান শেখা, নাচ শেখা, ভাষা শেখা অথবা যেকোন ধরনের খেলা শেখা, অথবা সন্তানের আগ্রহ অনুযায়ী যেকোন কিছু! এমনকি তাকে হাতে ধরে খেলাচ্ছলে কম্পিউটার প্রশিক্ষনও দিতে পারেন আপনি! তবে খেয়াল রাখবেন, এতে তার শৈশবের উচ্ছলতায় কোন প্রভাব যেন না পরে!

  • স্কুলের নিম্ন মাধ্যমিক থেকে মাধ্যমিকে স্তরে

এই সময়টাতেও কিন্তু আপনার সন্তানের বয়স শিশুর কাতারেই থাকে, চেষ্টা করুন তার উপর কোন ধরনের চাপ প্রয়োগ না করে তাকে ক্যারিয়ার ভাবনায় আগ্রহী করে তুলতে। আগের স্তরের কাজের উপর ভিত্তি করে ধারাবাহিকভাবে এই স্তরেও আপনার সন্তানের স্কিল ডেভেলাপমেন্টের উপর নজর দিন। তাছাড়া শেখাতে পারেন যেকোন নতুন কিছু। যেমন- আজকাল সবাই ফটোগ্রাফিতে খুবই আগ্রহী হচ্ছে, তবে সেটা উচ্চ মাধ্যমিক পার করার পরে। কিন্তু আপনার সন্তান চাইলে তাকে এখনই আপনি ফটোগ্রাফির জুনিয়র কোর্সগুলোতে ভর্তি করিয়ে দিতে পারেন। তবে এই স্তরে সবচেয়ে প্রয়োজনীয় হচ্ছে নিয়মানুবর্তিতা এবং ব্যবহারের মধ্যে মাধুর্যতা নিয়ে আসা। এই ধরনের মানবিক গুণগুলোই কিন্তু ভবিষ্যতে আপনার সন্তানকে কাজের ক্ষেত্রে দক্ষ করে তুলবে বেশি!

  • উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে

এবার আর বাবা-মায়ের সাথে কথা বলছি না আমি। কথা বলছি সন্তানের সাথেই কারণ এই স্তরে এসে প্রায় সবার বয়সই ১৬ বা তার বেশি, এবং প্রত্যেকের হাতেই আছে ইন্টারনেট আর সবচেয়ে বড় কথা প্রত্যেকেরই নিজের সিদ্ধান্ত নিজে নেয়ার সময় চলে এসেছে! এতদিনে আপনি জেনে গিয়েছেন আসলে আপনি কোন বিভাগে পড়ছেন- সাইন্স, আর্টস, কমার্স, মাদ্রাসা, কারিগরি শিক্ষা, উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়সহ যেকোন কিছু হতে পারে আপনার পড়াশোনার বিভাগ। এবং প্রত্যেকের মনে আলাদা একটা চিন্তাও চলে আসার কথা যে – আমি ব্যবসায়ী হব, আমি উদ্যোক্তা হব, আমি চাকরি করবো, আমি গবেষক হব, বা আমি বেছে নেব যেকোন সৃজনশীল একটি পেশা। যে পেশাই আপনি বেছে নিন না কেন, পড়াশোনার পাশাপাশি ওই পেশা সম্পর্কিত স্কিল ডেভেলাপমেন্ট শুরু করে দিতে পারেন এখন থেকেই। পাশাপাশি আগে যদি করে না থাকেন তবে জোর দিতে পারেন কম্পিউটার স্কিল, ভাষা দক্ষতা এবং নেতৃত্বের গুণাবলি বিকাশের বিভিন্ন অনলাইন বা অফলাইন কোর্সও।

  • বিশ্ববিদ্যালয় স্তরে

এই সময়টা আসলে ক্যারিয়ার গোছানোড় চিন্তা ভাবনা এবং কাজকে ঝালাই করে নেয়ার সবচেয়ে সঠিক সময়। কারণ এখানে এসে আপনি নিশ্চিত হচ্ছেন যে আপনি আসলে কোন নির্দিষ্ট বিষয়টিতে বিশেষজ্ঞ হতে যাচ্ছেন! যদি আপনার আগের পরিকল্পনাগুলোর সাথে না-ও মেলে তাতে ঘাবড়ে যাওয়ার কিছু নেই! আপনি চাইলেই নতুন করে ক্যারিয়ার পরিকল্পনা শুরু করতে পারেন অথবা চালু রাখতে পারেন আগের পরিকল্পনাই। তবে এক্ষেত্রে আপনার পড়াশোনার বিষয়ের সাথে আগের পরিকল্পনাকে একটু মিলিয়ে নিয়ে, একটু কাঁটছাট করে নেয়াই ভালো। সেক্ষেত্রে আপনার ক্যারিয়ার গোছাতে অনেক সুবিধা হবে।

  • কাজে ঢোকার পরে

ধরুন, আপনি কোন পরিকল্পনাই আগে করেননি অথবা আপনার কাজের ক্ষেত্রটাই এমন যে আপনার আগের পরিকল্পনার সাথে একটুও মিলছে না! ঘাবড়ে যাবেন না! আত্মবিশ্বাস রাখুন যে আপনার চিন্তা এবং আপনার দক্ষতা আপনাকে ছেড়ে পালিয়ে যায়নি! সেগুলোকে কাজে লাগিয়ে নতুন করে পরিকল্পনা সাজিয়ে নিন ঝটপট এবং কাজেও নেমে পড়ুন জলদি!

দেখলেন তো! প্রতিটি স্তরেই আপনি আসলে ক্যারিয়ার স্বপ্ন দেখতে পারেন! প্রয়োজন শুধু পরিকল্পনা এবং বাস্তবায়নের! favicon59

Sharing is caring!

Leave a Comment