মালয়েশিয়ায় বৈধভাবে ব্যবসা ও বসবাসের সুযোগ
- ক্যারিয়ার ডেস্ক
বাংলাদেশিদের জন্য মালয়েশিয়া একটি সম্ভাবনার দেশ। অনেকের কাছেই মালয়েশিয়ায় থাকা, কাজ বা ব্যবসা করা একটি স্বপ্ন। দেশটিতে আছে বাংলাদেশি শ্রমিকের ব্যাপক চাহিদা। সেখানে কাজের বা ব্যবসার সুযোগেরও অভাব নেই।
দুর্ভাগ্যজনক হলো, কাজ ও ব্যবসার সুযোগ থাকলেও শুধু সঠিক ভিসা না থাকায় অনেক বাংলাদেশি শ্রমিক মালয়েশিয়া গিয়েও সব হারিয়ে দেশে ফিরতে বাধ্য হচ্ছে অথবা জেলে বন্দী জীবনযাপন করছে। ভ্রমন ভিসা নিয়ে মালয়েশিয়ায় গিয়ে দেশে না ফিরে অনেক বাংলাদেশি চাকুরি করায় ন্যায্য মজুরিও পাচ্ছেন না। বিনিয়োগ বা ব্যবসাও করতে পারছেন না। মালয়েশিয়ায় যাবার পর অনেকে প্রতারিত হচ্ছে ভিসার ক্যাটাগরি বা ভিসার মেয়াদ বাড়াতে গিয়ে। দেশী-বিদেশী দালাল চক্র প্রলোভন দেখিয়ে সঠিক ভিসা করানো বা মেয়াদ বাড়ানোর কথা বলে অনেকের সর্বনাশ করছে প্রতিনিয়ত।
সম্ভাবনাময় মালয়েশিয়ার সবটুকু সুযোগ নিতে হলে প্রথম থেকেই সঠিক পরিকল্পনা ও সঠিক দিক-নির্দেশনা অনুযায়ী আগাতে হবে। বেছে নিতে হবে জন্য সঠিক ভিসা। স্বচ্ছভাবে ও সঠিক ভিসা প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে সহজেই মালয়েশিয়ায় প্রচুর উপার্জনের ও আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ার সুযোগ আছে।
২০২০ সালের মধ্যে উন্নত বিশ্বের সদস্য হওয়ার লক্ষ্যে মালয়েশিয়া সরকার ব্যবসার বাজার অনেকটাই উন্মুক্ত রেখেছে। বিনিয়োগ ও স্থায়ী বসবাসের জন্য ভালো অবস্থানে আছে দেশটি। চীন, ইন্দোনেশিয়া, নেপাল, ভারত সহ বিশ্বের অন্যান্য দেশের নাগরিকদের মতো বাংলাদেশিরাও এই সুযোগ নিয়ে স্বল্প পুঁজিতে প্রায় সব ধরনের আধুনিক ও রুচি সম্মত ব্যবসা করতে পারে।
আইনগত দিক ও প্রকৃত বাস্তব অবস্থা নিয়ে বিস্তারিত জানতে চাইলে আন্তর্জাতিক ইমিগ্রেশন কনসালট্যান্ট ড. শেখ সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, মালয়েশিয়ায় কিছুটা বড় পরিসরে জমি লিজ নিয়ে কৃষি খামার, মৎস্য চাষের মতো ব্যবসাও করা যায়। আবার প্রয়োজনীয় লাইসেন্স করে কনস্ট্রাকশন ও রিনোভেশন ব্যবসাও করা যায়। এর বাইরে আছে স্বল্প পুঁজির হোম স্টে ব্যবসা। এ ছাড়া ইম্পোর্ট-এক্সপোর্ট, সফটওয়ার বা আইটি রিলেটেড ব্যবসা করারও সুযোগ আছে। হোটেল, রেস্টুরেন্ট, বাজেট হোটেল, বুটিক হাউস, আইসক্রিম বা কফি শপ, বিউটি শপ বা স্পা সেন্টার, ফুলের দোকানের অনেক চাহিদা আছে মালয়েশিয়ায়। ফিজিওথেরাপি সেন্টার দিয়েও মানবিক সেবা ও ব্যবসা করার ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে দেশটিতে।
কেকে, সেভেনইলেভেন, বারজায়া গ্রুপ, হান্ড্রেড প্লাস ও মাইনিউজ ডটকমের মতো মালয়েশীয় চেইন শপের পাশাপাশি বিশ্বখ্যাত ম্যাকডোনাল্ডস ও কেএফসির ফ্র্যাঞ্চাইজি বা শাখা দেখা যায় মালয়েশিয়ায়। প্রতিটি ব্র্যান্ডেরই সারা দেশে কয়েক হাজার করে শাখা আছে। রেমলি নামের ছোট আকৃতির এক ধরনের দোকান মালয়েশিয়ায় ভালো ব্যবসা করছে। গোটা মালয়েশিয়ায় প্রতিষ্ঠানটির দুই হাজারের বেশি শাখা আছে। প্রতিষ্ঠানটি আরো শাখা দিচ্ছে। এ ছাড়া নতুন আরো শতাধিক প্রতিষ্ঠান সম্প্রতি মালয়েশিয়াজুড়ে শাখা দেওয়া শুরু করেছে, যা যোগাযোগ করে যে কেউ নিতে পারেন।
ফেরতযোগ্য জামানত হিসেবে দুই হাজার রিঙ্গিত (এক রিঙ্গিতে ২০ টাকা) ব্যাংক অ্যাকাউন্টে রেখে তিন হাজার রিঙ্গিতে কোম্পানি খুলে মালয়েশিয়ায় চেইন শপের শাখা নেওয়া যায়। পরে দোকান ভাড়া নিতে হয়। মালয়েশিয়াতে দোকান ভাড়া নিতে বাংলাদেশের মতো ১৫-২০ লাখ টাকা জামানত রাখতে হয় না। তুলনামূলক কম ভাড়ায় দোকান পাওয়া যায়। কুয়ালালামপুরের অন্যতম প্রাণকেন্দ্র চেরাসে ১৬০০ বর্গফুটের একটি দোকান ১৮০০ রিঙ্গিতে ভাড়া পাওয়া যায়। চলতি ও কয়েক মাসের ভাড়া দিয়েই মালয়েশিয়ায় দোকান নেওয়া সম্ভব। আর অনেক দোকান সাজানোই থাকে। এ ছাড়া লাখ লাখ টাকার পণ্য পাওয়া যায় টাকা ছাড়াই। বিক্রি করে মূল্য পরিশোধ করতে হয়।
ড. শেখ সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, মালয়েশিয়ায় আন্তর্জাতিক কোম্পানির অধীনে বিজনেস রেসিডেন্স ভিসা করলে পাঁচ বছর পরে নাগরিকত্ব (পিআর) পাওয়া যায়। দুই বছর পর পর ভিসা নবায়ন করেও দেশটিতে দীর্ঘদিন বসবাস করা যায়। আর পাঁচ বছর পর স্থায়ী নাগরিকত্বের জন্য আবেদন। ব্যবসায়ী ভিসা নিলে মালয়েশিয়া থেকে পৃথিবীর ৭৩টি দেশে মাত্র ৩ শতাংশ ট্যাক্স দিয়ে ব্যবসা করা সম্ভব।
মালয়েশিয়ায় দুভাবে কোম্পানি খুলে ব্যবসা করা যায়। মালয়েশিয়ায় অফশোর কম্পানির মাধ্যমে শতভাগ বিদেশি শেয়ার নিয়ে ব্যবসা। আরেকটি পথ হলো এসডিএন বা বিএইচডি কোম্পানির মাধ্যমে এমপ্লয়মেন্ট পাস নিয়ে সপরিবারে মালয়েশিয়া বসবাস ও ব্যবসা।
এছাড়া প্রয়োজন ও যোগ্যতা অনুযায়ী মালয়েশিয়ায় আছে ফাউন্ডেশন ভিসা, যাতে দুই বছরের স্টিকার প্রদান করা হয় এবং নবায়ন করে দীর্ঘদিন বসবাস করা যায়। এই ভিসার বিশেষত্ব হচ্ছে, পাঁচ বছর পর স্থায়ীভাবে থাকার আবেদন করা যায় এবং পরিবারসহ বসবাস করা যায়। এছাড়া আছে মাইডা ভিসা। এই ভিসায় পরিবারসহ ভিসায় ছয় বছর মালয়েশিয়াতে বসবাসের সুযোগ আছে। আরপিটি ট্যালেন্ট নবায়ন যোগ্য ভিসার মাধ্যমে ১০ বছরের অনুমোদনসহ ৫ বছরের স্টিকার গ্রহন করে দীর্ঘ সময় মালয়েশিয়ায় বসবাসের সুযোগ আছে। আর সল্প সময়ের কোন প্রশিক্ষন গ্রহন করতে চাইল এক বছরের ট্রেনিং ভিসা নেওয়া যায়। মুলত সবকিছুই নির্ভর করছে কারো চাহিদার ওপর।
গত কয়েক বছর ধরেই মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশের নাগরিকদের বিজনেস রেসিডেন্স ভিসা নিয়ে কাজ করছেন বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী এবং ওয়ার্ল্ডওয়াইড মাইগ্রেশন কনসালট্যান্টস লিমিটেডের চেয়ারম্যান ড. শেখ সালাহউদ্দিন আহমেদ রাজু। কোম্পানি রেজিস্ট্রেশন, ট্রেড লাইসেন্স, অ্যাকাউন্ট ওপেনিংসহ সব ধরনের বৈধ ব্যবসা স্থাপনের আইনগত সহযোগিতা করে আসছেন তিনি।
ড. শেখ সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, কাগজপত্র তৈরি হয়ে গেলে কনসালটেন্সি ফার্মের মাধ্যমে প্রার্থীকে ডেকে নেয় মালয়েশিয়া ইমিগ্রেশন অফিস। এরপর মালয়েশিয়ার ইমিগ্রেশন অফিসে গিয়ে ভিসা নিতে হয় প্রার্থীকে। মালয়েশিয়া ইমিগ্রেশন অফিস অতি দ্রুত ভিসা হাতে দিয়ে দেয় বলে দাবি করেন শেখ সালাহউদ্দিন আহমেদ।
মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশিদের বিনিয়োগ ও ব্যবসার সম্ভাবনা সম্পর্কে ড. শেখ সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, মিথ্যার আশ্রয় না নিয়ে এবং সঠিক প্রক্রিয়া অনুসরণ করে কাগজপত্র দাখিল করলে কোনো প্রার্থীর আবেদনের ফাইল প্রত্যাখ্যাত হওয়ার আশঙ্কা থাকে না।
মালয়েশিয়ায় নাগরিকত্ব এবং বিজনেস রেসিডেন্স ভিসা পেতে কী কী করতে হবে সে বিষয়ে জানতে যোগাযোগ করতে পারেন advahmed@outlook.com ও raju.advocate2014@gmail.com এই মেইল ঠিকানায়। ভিজিট করতে পারেন www.wwbmc.com ওয়েবসাইট। এ ছাড়া সরাসরি ড. শেখ সালাহউদ্দিন আহমেদের সঙ্গে কথা বলতে পারেন +৬০১৬৮১২৩১৫৪ ও +৬০১৪৩৩০০৬৩৯ নম্বরে।
ঢাকার উত্তরায় ৭ নম্বর সেক্টরের ৫১ সোনারগাঁও জনপথে অবস্থিত খান টাওয়ারে ওয়ার্ল্ডওয়াইড মাইগ্রেশন লিমিটেডের কার্যালয়েও খোঁজ নিতে পারেন। ফোনে কথা বলতে পারেন ০১৯৬৬০৪১৫৫৫, ০১৯৬৬০৪১৩৩৩, ০১৯৯৩৮৪৩৩৩৯ ও ০১৯৯৩৮৪৩৩৪০, ০১৯৭৭০১৪৭৭৮, ০১৯৬৬০৪১৮৮৮ নম্বরে।