মালয়েশিয়ার রাজধানী কুয়ালালামপুরে শেষ হয়ে গেল ওয়েডিং অ্যান্ড পোর্ট্রেট ফটোগ্রাফারস অব এশিয়া (ডব্লিউপিপিএ) কর্তৃক আয়োজিত ওয়েডিং ফটোগ্রাফির উপর এশিয়ার সবচাইতে বড় সম্মেলন এবং আলোকচিত্র প্রতিযোগিতা। এ বছরের প্রিন্ট কম্পিটিশনে বাংলাদেশের মো. যোবায়ের হোসেন শুভ স্থান করে নিয়েছেন এশিয়ার শীর্ষ তিন আলোকচিত্রীদের মধ্যে একজন হিসেবে। নাফিস ফুয়াদ শুভ ও অর্জন করে নিয়েছে এশিয়ার শীর্ষ দশের মধ্যে স্থান। বাংলাদেশের বিয়ের ছবি তুলে তারা দেশকে এনে দিয়েছেন এই বিরল সম্মান। সমকালীন সামাজিক অস্থিরতার মধ্যে যেখানে আমাদের দেশের তরুণরা জঙ্গিদের ভয়াবহ আতঙ্কের প্রতিরূপ হয়ে উঠেছেন আন্তর্জাতিক অঙ্গনে, সেখানে তাদের এই অর্জন বাংলাদেশের ভাবমূর্তিকে উজ্জ্বল করেছে। এ বছর এই প্রতিযোগিতায় অংশ নেন সিঙ্গাপুর, চায়না, মালয়েশিয়া, তাইওয়ান, ফিলিপিন, কম্বোডিয়া, ইন্ডিয়া ও বাংলাদেশের শত শত আলোকচিত্রী। বাংলাদেশ থেকে এ প্রতিযোগিতায় অংশ নেন ড্রিমউইভার ওয়েডিং ফটোগ্রাফির কর্ণধার ও প্রধান আলোকচিত্রী মো. যোবায়ের হোসেন শুভ, নাফিস ফুয়াদ শুভ, মাজহারুল ইসলাম রাফি এবং সাফায়েত উল্লাহ মাহিদ। এছাড়া ওয়েডিংস ইঙ্কের কর্ণধার রিফাত শাখাওয়াত হোসেন, কে. নাসিফ ফটোগ্রাফির নাসিফ, রংপুর থেকে মোমেনটো ওয়েডিংয়ের রাশিদুল বারি জিম। বিচারকদের মধ্যে ছিলেন সিঙ্গাপুরের মাস্টার ফটোগ্রাফার ম্যাথিউ টান, এশিয়ার একমাত্র ডাবল মারস্টারস ও ফুজিফিল্ম ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর ফিলিপাইনের লিতো সি, ডিজিটাল ক্যামেরা ম্যাগাজিনের এডিটর ইন চিফ আর্থার চ্যান, মালয়েশিয়ার বিখ্যাত মাস্টার ফটোগ্রাফার রজার টান, ও আলভিন লিওং।
মোট ১২টি ক্যাটাগরিতে প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। প্রতিটি বিভাগে থাকে প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয় ও অ্যাওয়ার্ড অব এক্সিলেন্স উপাধি। এভাবে সবচেয়ে বেশি ক্যাটাগরিতে সর্বাধিক সংখ্যক পুরস্কার প্রাপ্তির ভিত্তিতে ও সর্বমোট অর্জিত নাম্বারের ভিত্তিতে পাওয়া যায় এশিয়ার শীর্ষ তিন ও শীর্ষ দশের স্থান।
যোবায়ের হোসেন শুভ বলেন, ‘গত বছর প্রথমবার অংশগ্রহণ করায় অনেক কিছু শিখেছি, ৩টি পুরস্কার জেতার আনন্দের পরও দেশের জন্য একটিও প্রথম পুরস্কার না পাওয়ার আক্ষেপটা অনেক বেশিই ছিল। অনেকটা অবহেলিত দেশের আলোকচিত্রী হিসেবেই গতবার মালয়েশিয়া ছেড়েছিলাম। কিন্তু এইবার একটি নয়, চারটি প্রথম পুরস্কারসহ মোট তেরটি পুরস্কার নিয়ে ফিরেছি আমরা। প্রতিবার নিজেদের নামের সঙ্গে যখন দেশের নাম উচ্চারিত হচ্ছিল আর উপস্থিত দুই শতাধিক আলোকচিত্রী করতালি দিয়ে আমাদের অভ্যর্থনা জানাচ্ছিল, তখন বাঙালি হিসেবে নিজেদের পরিচয় দিতে খুবই গর্ববোধ করছিলাম। আর যখন শীর্ষ তিন-এ নিজের নামটা শুনলাম তখন নিজেকে আর ধরে রাখতে পারলাম না, আনন্দে অশ্রুসিক্ত হয়েই পুরস্কার গ্রহণ করতে গেলাম। নামকরা এই বিচারক যারা আমার অনুপ্রেরণা ছিলেন, তাদের কাছ থেকে পুরস্কার নিতে পেরে আমি সত্যিই গর্বিত।’ নাফিস ফুয়াদ শুভ একটি প্রথম পুরস্কার ও একটি তৃতীয় পুরস্কার পান। এবং গড় নম্বরের ভিত্তিতে এশিয়ার শীর্ষ দশ আলোকচিত্রীর তালিকায় স্থান করে নেন।
মাযহারুল ইসলাম রাফি একটি দ্বিতীয় পুরস্কার, রিফাত সাখাওয়াত হোসেন একটি তৃতীয় পুরস্কার ও সাফায়েত উল্লাহ মাহিদ একটি তৃতীয় পুরস্কার অর্জন করেন। তিন দিনব্যাপী এই সম্মেলনের আয়োজনে স্পন্সর ছিল নামকরা লেন্স নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ট্যামরন এবং প্রফেসনাল ফটো এক্সেসরিস নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ফটিক্স।
Sharing is caring!