বাংলাদেশি গবেষক পেলেন জাতিসংঘের পুরস্কার
- নিউজ ডেস্ক
বাংলাদেশের এক গবেষকের উদ্ভাবিত বাড়িভিত্তিক সৌরবিদ্যুতের ‘স্মার্ট ভিলেজ ন্যানোগ্রিড’ জাতিসংঘের জলবায়ু পুরস্কারে ভূষিত হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার এই পুরস্কার ঘোষণা করেছে জাতিসংঘের জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক সংস্থা ‘ইউএন ফ্রেমওয়ার্ক কনভেনশন অন ক্লাইমেট চেঞ্জ (ইউএনএফসিসিসি)’।
পুরস্কারটির নাম ‘মোমেন্টাম অব চেঞ্জ অ্যাওয়ার্ড’। এ বছর সারা পৃথিবীর ১৩টি উদ্ভাবন এই পুরস্কার পেয়েছে, যার মধ্যে একটি হচ্ছে ‘স্মার্ট ভিলেজ ন্যানোগ্রিড’। বাড়িভিত্তিক সৌরবিদ্যুৎ ব্যবহারকারী এবং যাঁরা তা ব্যবহার করেন না, তাঁদের সবার মধ্যে বিদ্যুৎ দেওয়া-নেওয়ার একটি নেটওয়ার্ক হচ্ছে ‘স্মার্ট ভিলেজ ন্যানোগ্রিড’। গত জুন মাসে এই উদ্ভাবনই জার্মানির ‘ইন্টার সোলার অ্যাওয়ার্ড’ পেয়েছে।
দীর্ঘদিনের গবেষণা ও পরীক্ষামূলক প্রকল্প বাস্তবায়নের মাধ্যমে এই গ্রিড পদ্ধতি উদ্ভাবন করেছেন ঢাকার ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির সেন্টার ফর এনার্জি রিসার্চের গবেষক শাহ্রিয়ার আহমেদ চৌধুরী। তিনি ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষক। এই গবেষণায় অর্থ সহায়তা দিয়েছে ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট কোম্পানি লিমিটেড (ইডকল)। পদ্ধতিটি বাস্তবায়ন পর্যায়ে নিয়ে গেছে বেসরকারি সংস্থা ‘সলশেয়ার’। নিজের উদ্ভাবিত পদ্ধতি সম্পর্কে শাহ্রিয়ার আহমেদ চৌধুরী বলেন, বাড়িভিত্তিক সৌরবিদ্যুতের প্যানেল যাঁরা বসিয়েছেন, তাঁদের অনেকের বিদ্যুতের প্রয়োজন স্থাপিত প্যানেল থেকে মেটে না। অনেকের প্যানেলের উৎপাদিত বিদ্যুৎ প্রয়োজনের চেয়ে বেশি হয়। অনেকে সৌরবিদ্যুতের প্যানেলও ব্যবহার করেন না। উদ্ভাবিত পদ্ধতিতে এই তিন শ্রেণির পরিবারের মধ্যে নেটওয়ার্ক তৈরি করে বিদ্যুৎ বণ্টন করা হবে।
শাহ্রিয়ার আহমেদ চৌধুরী বলেন, এই নেটওয়ার্কই হচ্ছে ন্যানোগ্রিড। এর মাধ্যমে যাঁর বিদ্যুৎ উৎপাদন নিজের প্রয়োজনের চেয়ে বেশি, তিনি যাঁর কম কিংবা একেবারেই নেই, তাঁদের কাছে বিক্রি করতে পারবেন। সৌরবিদ্যুতের ভোল্টেজ যেহেতু কম, সেহেতু একেকটি গ্রামের ২০-২৫টি করে বাড়িকে একেকটি গ্রিডে যুক্ত করা হবে। প্রত্যেকের বাড়িতে বিশেষ ধরনের মিটার থাকবে, যাতে কে কতটুকু বিদ্যুৎ দিচ্ছেন, আর কে কতটুকু নিচ্ছেন, তার হিসাব পাওয়া যাবে। এই মিটারও উদ্ভাবন করেছেন তিনি। একটি পরিচালন সংস্থা বা একজন ব্যক্তি দেওয়া-নেওয়ার বিষয়টি সমন্বয় করবেন।
এই ন্যানোগ্রিড পরীক্ষামূলকভাবে চালু করা হয়েছে শরীয়তপুরের জাজিরায়। সেখানে আটটি বাড়ি এই গ্রিডে যুক্ত করে সফলভাবে বিদ্যুৎ আদান-প্রদান করা হচ্ছে।