হতে পারেন প্রচ্ছদ শিল্পী
- ক্যারিয়ার ডেস্ক
কাভার বা প্রচ্ছদ ডিজাইন করা সৃষ্টিশীল মানুষের কাজ। তাই আপনি যদি সৃষ্টিশীল হয়ে থাকেন বা কল্পনাশক্তি যদি মোটামুটি ভালো হয়ে থাকে, তাহলে আপনি ক্যরিয়ার শুরু করতে পারেন কাভার ডিজাইনার হিসেবে। একটা বইয়ের প্রচ্ছদ হলো এমন একটা জিনিস যা অনেক দূর হতে পাঠককে আকৃষ্ট করে। তাই প্রচ্ছদ করার আগে পুরো বইটি নিয়ে ভাবতে হয়। প্রচ্ছদ বইটির জন্য কতটা তার সহজ ব্যাখ্যা দিলেন প্রচ্ছদ শিল্পী সব্যসাচী মিস্ত্রী। তার মতে, পুরো বইয়ের সহজ অভিব্যক্তি ফুটে উঠে প্রচ্ছদে। লেখক বইটিতে যে ব্যাপারটি বোঝাতে চেয়েছেন তা এক পাতায় রং-তুলির আঁচড়ে ফুটিয়ে তুলতে হয় প্রচ্ছদ শিল্পীকে। কাজটি কঠিন! তবে এ কঠিন কাজটি করেন প্রচ্ছদ শিল্পীরা।
এ কারণে লেখক বা প্রচ্ছদ শিল্পীর চাহিদা সবসময়ই আছে। বই সম্পর্কে কোন তথ্য দিতে গেলে লেখকদের প্রথম যে প্রশ্নটি শুনতে হয় তা হলো আপনার বইয়ের প্রচ্ছদ কে করেছে? এ থেকে বোঝা যায় একজন প্রচ্ছদ শিল্পীর কতটা কদর। তরুণদের বইয়ের প্রচ্ছদ করা প্রসঙ্গে প্রচ্ছদ শিল্পী ধ্রুব এষ বলেন, ‘তরুণ প্রচ্ছদ শিল্পীরা অনেক ভালো কাজ করছেন, এ পেশায় আগের চেয়ে সম্মান ও সম্মানী দুই-ই বেড়েছে। তাই প্রচ্ছদ শিল্পীদের কদর আর একুশে বইমেলাকেন্দ্রিক নয়। বছরজুড়েই বই প্রকাশ হয়। এজন্য তাদের বছর জুড়েই কাজ থাকে।’ শুধু কি বইমেলায়? অনেকের ধারণা, একুশে বইমেলার সময়েই শুধু প্রচ্ছদ শিল্পীদের কদর বাড়ে।
সারাবছর তাদের অবসর। যারা এ ধরনের চিন্তা করেন তাদের জন্য তরুণ কার্টুনিস্ট মেহেদী হক বলেন, ‘একজন প্রচ্ছদ শিল্পী তো শুধু প্রচ্ছদ করে না, প্রচ্ছদ ছাড়াও একটি বইয়ের অনেক কাজ থাকে। যেমন অলংকার ও কার্টুন আঁকার মতো কাজ রয়েছ। কাজ করতে জানলে সারাবছরই একজন প্রচ্ছদ শিল্পীকে ব্যস্ত থাকতে হয়। সুযোগ রয়েছে পত্র-পত্রিকায় কার্টুন আঁকারও। শুধু বইমেলায় কাজ করবেন, এমন চিন্তা থেকে প্রচ্ছদশিল্পী হওয়ার দরকার নেই। এর ক্ষেত্রটা অনেক বড়।’ ভালো করার উপায় ইন্টারনেটের যুগে এখন আর হাতে কলমে শেখার কিছুনেই। গুগল বা ইউটিউবে অনেক টিউটোরিয়াল আছে গ্রাফিক্সের ওপর। এগুলোতে চোখ বুলালে সহজেই প্রচ্ছদ নিয়ে একটি স্বচ্ছ ধারণা পাওয়া যাবে। আর নতুন কিছু পাওয়ার জন্য বড় ভা-ার গুগল তো রয়েছেই।
এ প্রসঙ্গে ধ্রুব এষ বলেন, ভালো প্রচ্ছদ শিল্পী হতে চাইলে ভালো পাঠক হতে হবে। প্রচুর পড়তে হবে। কম্পোজিশনের ধারণা ও জ্ঞান থাকতে হবে। সবার ওপরে একটি শিল্পী মন থাকতে হবে। কারণ জোর করে বা ইচ্ছার বিরুদ্ধে প্রচ্ছদ শিল্পী হওয়া যায় না। তার কথার সাথে একমত পোষণ করেন সব্যসাচী মিস্ত্রীও। বইয়ের মুড বা ধারণাটা বুঝতে হবে আগে। সেই অনুযায়ী লে-আউট করতে হবে। তারপর ফটোশপ বা অন্য কোনো সফটওয়্যারে ইফেক্ট ব্যবহার করে বা পান্ডুলিপির ধরন অনুযায়ী প্রচ্ছদটা চূড়ান্ত করতে হবে।
তবে যারা নতুন তারা অনায়াসে লেখক ও প্রকাশকের পরামর্শ নিতে পারেন। শিখবেন নাকি? প্রচ্ছদের কারিগর হওয়ার জন্য দেশে কোনো প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নেই। যারা চারুকলার ছাত্র বা যাদের গ্রাফিক্সে দখল আছে এবং সৃজনশীল চিন্তা করতে পারেন- তারা অনায়াসে এঁকে ফেলতে পারেন প্রচ্ছদ। ধ্রুব এষ বলেন, ‘সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে চারুকলা অনুষদে এ বিষয়ে পড়াশুনা করা করা যাবে।’ এছাড়া গ্রাফিক্স ডিজাইনের কোর্স করে একটা প্রাথমিক ধারণা নেয়া যাবে। মনে রাখতে হবে, প্রচ্ছদ গ্রাফিক্স ডিজাইনের একটি অংশ। ফলে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে গ্রাফিক্সস ডিজাইন কোর্সে ভর্তি হলেই প্রচ্ছদ করা ও শেখা যাবে।