বিদেশে যেতে ঋণ
- ক্যারিয়ার ডেস্ক
অনেক আগে থেকেই বিদেশে আমাদের দেশ থেকে রয়েছে কর্মীদের যাতায়াত। মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, সৌদিআরব, আরব আমিরাতসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশেই রয়েছে আমাদের দেশের কর্মী। তবে গ্রামাঞ্চল থেকে যারা বিদেশে যাওয়ার সুযোগ গ্রহণ করতে আগ্রহী হন, তাদের বেশিরভাগেরই নিজস্ব অর্থের ব্যবস্থা থাকে না। সে ক্ষেত্রে বেশিরভাগ সময়েই তাদের অনেককে বিক্রি করে দিতে হয় জমি বা বাড়ির জায়গা। অনেকেই আবার গ্রামের কারও কাছে উচ্চ সুদে ঋণও নিয়ে থাকেন। ফলে বিদেশে কাজের জন্য যাওয়ার সুযোগ হলেও তার জন্য তাকে অনেক কিছুই ছেড়ে দিতে হয়। এর মধ্যে যারা ঋণ নিয়ে যান, তাদের সুদ গুণতে গুণতেই অবস্থা কাহিল। বিদেশে যাতে আর্থিকভাবে খুব বেশি স্বচ্ছল না হলেও যাওয়ার সুযোগ পাওয়া যায়, তার জন্যই জামানত ছাড়া সরকারিভাবে ঋণ দিচ্ছে প্রবাসীকল্যাণ ব্যাংক। যেকেউ তাই যেকোনো দেশে যেতে চাইলে এই ব্যাংক থেকে নিতে পারেন ঋণ।
জামানত ছাড়াই প্রবাসীকল্যাণ ব্যাংকের এই ঋণদানের উদ্যোগ বলতে গেলে আর্থিকভাবে কিছুটা অস্বচ্ছলদের কাছে বিরাট এক পাওয়া হয়েই হাজির হয়েছে। ইতোমেধ্যই অনেকেই ঋণ নিতে সমর্থ হয়েছেন এই ব্যাংক থেকে, যাদের এই ঋণ না পেলে জমি বা পারিবারিক অলংকার বিক্রির কোনো বিকল্প ছিল না। জামানত ছাড়াই এই ঋণের সুবিধা পেয়ে অভিভূত ঋণগ্রহীতারা। আবার এখানকার ঋণ পাওয়ার জন্য বাড়তি কোনো অর্থ প্রদান করতে হয় না, এই সংবাদটিও বিদেশে যেতে আগ্রহীদের কাছে সম্পূর্ণ নতুন এবং অত্যন্ত আকর্ষণীয়।
আবেদনের নিয়মাবলী : প্রবাসীকল্যাণ ব্যাংক থেকে ঋণ পাওয়ার পূর্বশর্ত হচ্ছে বিদেশে যাওয়ার ভিসা নিশ্চিত হওয়া। ভিসা পাওয়ার পর প্রবাসীকল্যাণ ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বরাবর ঋণের আবেদন করতে হবে। এ সময় বেশকিছু কাগজপত্র জমা দিতে হয় আবেদনের সাথে। এ সময়ে প্রয়োজন হবে স্বহস্তে লিখিত অভিবাসন ব্যয়ের বিবরণী, আবেদনকারীর জামিনদারদের প্রত্যেকের দুই কপি সত্যায়িত ছবি, ভোটার আইডি কার্ডের সত্যায়িত ফটোকপি এবং বর্তমান ও স্থায়ী ঠিকানাসহ পৌরসভা বা ইউনিয়ন পরিষদের সার্টিফিকেটের সত্যায়িত ফটোকপি। এ ছাড়া আবেদনকারীর সব আয় নিযুক্ত প্রতিনিধির মাধ্যমে এই ব্যাংকে পাঠানো হবে মর্মে ১৫০ টাকার নন-জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে অঙ্গীকারনামাও তৈরি করতে হবে।
আরও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র : আপনি যে ভিসায় বিদেশ যাচ্ছেন, সেটি সঠিক কি না, তা ব্যাংক থেকে যাচাই করা হয়। তাই ঋণ পেতে ভিসাসংক্রান্ত কাগজপত্র প্রদর্শন করতে হবে। এর মধ্যে রয়েছে দূতাবাস থেকে ইস্যু করা ভিসা বা লেবার কন্ট্রাক্ট, শারীরিক যোগ্যতার সার্টিফিকেট, বিএমইটি থেকে পাওয়া স্মার্ট কার্ড, ম্যানপাওয়ার ক্লিয়ারেন্স কার্ড, প্রশিক্ষণ ও অভিজ্ঞতার সার্টিফিকেট, বিমানের টিকিট, পাসপোর্ট ইত্যাদি।
জামানতের প্রয়োজন নেই : আগেই বলা হয়েছে, প্রবাসীকল্যাণ ব্যাংক থেকে ঋণ নেওয়ার সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো এখানে কোনো ধরনের জামানত প্রয়োজন হয় না। শুধু দুজন সক্ষম ব্যক্তি জামিনদার হিসেবে দেখাতে হয়। আর ঋণের টাকা জমা দেওয়া শুরু হয় বিদেশ যাওয়ার দুই মাস পর থেকে। এ ঋণ শোধ করা যাবে দুই থেকে তিন বছরেও। এই ঋণে সুদের হারও কম—শতকরা ৯ টাকা। অন্যান্য ব্যাংকে এর পরিমাণ প্রায় দ্বিগুণ। সাধারণত আবেদনের পর দুই দিনের মধ্যেই ঋণের টাকা পাওয়া যায় এখানে। অনেক সময় তিন ঘণ্টার মধ্যেও ঋণ দেওয়া হয়। এটি নির্ভর করে গ্রাহকের চাহিদা এবং ভিসা সঠিক আছে কি না তা যাচাইয়ের ওপর। ঋণ দেওয়ার সময় সরকার নির্ধারিত খরচ এবং চাহিদার ওপর নির্ভর করে ৪০ হাজার থেকে এক লাখ টাকা দেওয়া হয়ে থাকে।
যোগাযোগ :৭১-৭২, পুরাতন এলিফ্যান্ট রোড, ইস্কাটন, ঢাকা।