অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং : অনালাইন ক্যারিয়ারে একটি নতুন সম্ভাবনা

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং : অনালাইন ক্যারিয়ারে একটি নতুন সম্ভাবনা

  • ক্যারিয়ার ডেস্ক

ছানাউল মাওলা সুফিয়ান শুরু করেছিলেন ইমেইল মার্কেটিং দিয়ে, কিন্তু এখন তার পরিচয় দেশের অন্যতম একজন আইটি উদ্যোক্তা ও ডিজিটাল মার্কেটার। তিনি প্রতিষ্ঠা করেন দেশের বেকার জনগোষ্ঠীকে অনলাইন ক্যারিয়ারে সফল করার জন্য আইটি ট্রেইনিং এবং আইটি বিষয়ক প্রতিষ্ঠান সফটটেক আইটি। তিনি বর্তমানে কাজ করছেন অ্যাফিলিয়েট এবং ডিজিটাল মার্কেটিং নিয়ে। অ্যাফিলিয়েট এবং ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের নানা বিষয় নিয়ে সাথে কথা বলেন তিনি। 


  • অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং কী ?

অ্যাফিলিয়েট – অন্যের পণ্য / কোনো প্রতিষ্ঠানের পণ্য বা সেবা প্রচারণার মাধ্যমে বিক্রি করতে সহায়তা করা অন্যথায় বিক্রি করার পদ্ধতি হল অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং, আর পন্য বা সেবা বিক্রি হবার পর এর কমিশন আপনাকে দিবে আপনার মার্চেন্ট / অ্যাফিলিয়েট নেটওয়ার্ক / আপনি যার পণ্য বিক্রি করছেন তিনি – এই পুরো প্রক্রিয়াটিই অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং। সহজে বলতে গেলে, আপনি কোন প্রতিষ্ঠান বা ব্যাক্তির পণ্য মার্কেটিং করে বিক্রির পর আপনাকে ঐ প্রতিষ্ঠান বা ব্যাক্তি যে কমিশন প্রদান করবে – এই কমিশন আয়ের পুরো মাধ্যমটাকে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং বলা যাবে।

  • অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং / ডিজিটাল মার্কেটিংয়ে সম্ভাবনা কেমন ?

বাংলাদেশের তরুণদের কাছে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং খুব একটা পরিচিত নাম না হলেও – এ খাতে রয়েছে সম্ভাবনাময় উজ্জল ক্যারিয়ার । আর অনলাইন ক্যারিয়ারে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিংটা আসলে খুব বিশাল একটা ইন্ডাস্ট্রি। আর যে কেউ এই ইন্ডাস্ট্রিতে ধৈর্য ধরে লেগে থাকলে ভাল আয় করা সম্ভব। বর্তমানে যারা এসইও (সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন), ইমেইল মার্কেটিং , আর্টিকেল রাইটিং, ডিজিটাল মার্কেটিং করছেন তারা এই সেক্টরে ভাল করার সম্ভাবনাটা অনেক বেশী রাখেন এবং আয়ের দিক থেকেও অ্যাফিলিয়েশনে আয়ের কমতি নেই ও সম্ভাবনা রয়েছে অনেক। বাংলাদশের ছেলে মেয়েরা ইংরেজিতে যারা ভাল তাদের জন্য এক অদ্বিতীয় আয়ের উৎস । তবে ইংরেজিতে আপনি যদি ভাল হয়ে থাকেন তাহলে আপনার জন্য অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং ।

  • আপনি এই পেশায় কিভাবে এলেন ?
14658356_1207823675943317_1047657674_n-1
ছানাউল মাওলা সুফিয়ান

. অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং / ডিজিটাল মার্কেটিংয়ে বা উদ্যোক্তা হওয়ার আগে আমার আগ্রহ ছিল কম্পিটার হার্ডওয়ার এর প্রতি, একটা সময় কম্পিউটার সার্ভিসিং শুরু করি এর পাশাপাশি সাইবারক্যাফেতে ইন্টারনেটে প্রচুর সময় দিতাম এক পর্যায়ে জানতে পারি অনলাইন এ আয় করার বিষয়টি। তার পর থেকে ইন্টারনেটে সময় দেয়াহত শিখার জন্য এবং প্রচুর টিউটোরিয়াল দেখা হয়, এর পাশা পাশি কিছু প্রাথিস্থানিক শিক্ষাও নেই কাজের সুবিদারথে। এই কাজ করতে করতে এক পর্যায়ে মনে হল সব সময় কাজ খোঁজা এই বিষয়টা কিভাবে বাদ দেয়া যায়, তারপর এই পেশায় কাজ করা শুরু করা।

  • অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিংয়ে আসতে হলে কী কী বিষয়ে প্রাথমিক ধারণা থাকতে হবে ?

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং যেহেতু সম্পূর্ণ মার্কেটিং এবং টেকনিক্যাল কাজ। তাই সবার প্রথমে কম্পিউটারের বেসিক জ্ঞানের পাশপাশি জানতে হবে ইংরেজি বুজা,লিখতে পারা, এবং কিছুটা মাকেটিং সেন্স। তারপর জানতে হবে আর্টিকেল রাইটিং, ইমেইল মার্কেটিং এসইও, কিছুটা ওয়েব ডিজাইন ও ওয়েব ডেভেলপমেন্ট আর থাকতে হবে প্রচুর পরিমাণে ধৈর্য ।

  • এখান থেকে কেমন আয় করা সম্ভব ?

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এ আসার আগে আপনাকে প্রচুর পরিমাণে শিখতে হবে – এই বিষটা মাথায় নিতে হবে আর আয়ের ক্ষেত্রটা অনেক । অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং থেকে আপনি খুব কম সময় দিয়ে আনেক বেশী পরিমাণে আয় করতে পারবেন। যেহেতু আপনাকে পণ্য তৈরি এবং বাজারজাত করতে হয় না । আপনার কাজ হচ্ছে এনালাইসিস করে ধৈর্য নিয়ে মার্কেটিং ট্রাম তৈরি করা আর মার্কেটিং করা। আর আপনার মাধ্যমে যে পণ্য বিক্রি হবে সেই পণ্যর কমেশন আপনি পাবেন। তবে প্রথম দিকে আয়ের দিক থেকে ২০০ থেকে ৫০০ ডলার আয় করা সম্ভব। আর আসতে আসতে এই আয়টা নির্ভর করবে আপনি কতটা পরিশ্রম করছেন।

  • একজন সফল অ্যাফিলিয়েট মার্কেটার এর হতে গেলে কী কী করতে হবে বলে আপনি মনে করেন ?

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটার হতে গেলে ওয়েব ডেভেলপার হওয়া লাগবে বা প্রোগ্রামিং এ এক্সপার্ট হওয়া লাগবে তা কিন্তু না। তবে যে কেউ এই প্রফেশনে আসতে পারবে। সবার আগে থাকতে হবে প্রবল ইচ্ছা , ধৈর্য, শিখার মানসিকতা, আন্তরিক্তা, মার্কেটিং সেন্স, রিসারস করার প্রবণতা, আর ইংরেজির উপর খুব ভাল দক্ষতা এবং ভাল মানের ইন্টারনেট সংযোগ ও সফল না হওয়া পর্যন্ত লেগে থাকা।

  • অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করার জন্য কোন বিষয়গুলো জানা দরকারি ?

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করার জন্য যে বিষয় গুলো জানা খুব দরকারি . ১. নিস সিলেকশন করা ২. প্রোডাক্ট সিলেকশন করা ৩. কিওয়ার্ড রেডি করা ৪. ইমেইল মার্কেটিং ৫. কন্টেন্ট ডেভেলপ করা ৬. ইমেইল লিস্ট বিল্ডিং ৭. ডোমেইন / হোস্টিং ৮. ল্যান্ডিং পেজ রেডি করা ৯. পেইড ট্রাফিকঃ – বিং মার্কেটিং , ফেসবুক মার্কেটিং, অ্যাডওয়ার্ড মার্কেটিং।

  • যারা এই সেক্টরে কাজ করতে আগ্রহী তাদেরকে আপনি কী পরামর্শ দেবেন?

যারা অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিংয়ে আসতে চাচ্ছেন, তাদের বলব ধৈর্য ধরে লেগে থাকতে হবে। আমি বলব অনলাইনে এখন অনেক রিসোর্স আছে, আপনার কাজ হল স্টারডি করা। আর গুগল হল সবচেয়ে বড় শিখার জায়গা – শুধু গুগল করেই আপনি শিখতে পারবেন। আর আপনার আসে পাঁশে যদি যে আয় করছে , তার কাছ থকেও শিখতে পারেন। বাংলাদেশে বর্তমানে বেশকিছু প্রতিষ্ঠান অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এর ওপর প্রশিক্ষণ দিচ্ছে। ভাল ভাবে খোঁজ-খবর নিয়ে কে ভালো শেখায়, তা জেনে শিখে নেয়া যেতে পারে। তবে আমার পরামর্শ হবে আপনি যদি ইন্টারনেট থেকে রিসারস বের করে শিখেন সেটা সর চেয়ে ভাল হবে। আর ধৈর্য ধরে লেগে থাকলে আপনি সফল হবেনই। favicon59-4

Sharing is caring!

Leave a Comment