সফলতার জরুরী মানসিকতা
- ক্যারিয়ার ডেস্ক
চকোলেট ভালবাসেন না, এমন কি কেউ আছেন? আমরা সবাই চকোলেট খেতে পছন্দ করি এবং আমরা সবাই মিল্টন হার্শিকেও চিনি। কিন্তু আমরা একজন সাধারণ মানুষ থেকে বিখ্যাত চকোলেট কোম্পানির প্রতিষ্ঠাতা হওয়ার পেছনে তার জীবনের গল্প আমরা জানি না।
তিনি আলাদা আলাদা ৩টি চকোলেট ভেঞ্চার খোলেন প্রথমে। কিন্তু কোনটাই আশানুরূপ সফল হয় না। এরপর তিনি খোলেন হার্শি চকোলেট কোম্পানি এবং এটি তাকে একজন প্রথম সারির ব্যবসায়ী হিসেবে সামনে নিয়ে আসে। কীভাবে তিনি সফল হলেন? সফলতা অনেক বন্ধুর পথ পেরিয়ে আসে। আমরা আমাদের ব্যক্তিগত এবং ব্যবসায়িক জীবনে অনেক ভুল করি। আমরা যদি ভুল থেকে শিখি, তাহলে এই ভুলগুলোই দেখাতে পারে সফলতার পথ।
হার্শির জীবনের গল্প থেকে আসুন জেনে নিই কীভাবে সফল মানুষেরা জয় করেন ব্যর্থতাকে। কী কী মাইন্ডসেট বা দৃঢ় মনোভাব তাদেরকে সাহায্য করে। আজ পর্ব-২।
৪। সমালোচনা ভাল
‘সমালোচনা অন্যের মতামত মাত্র। নিজ নিজ ক্ষেত্রে যারা দক্ষ তারাও অনেক সময় ভুল হতে পারেন। আপনি কোনটা গ্রহণ করবেন, কোনটা করবেন না, নাকি সবটাই গ্রহণ করবেন এটা আপনার ব্যাপার। আপনি যেটা মনে করেন সেটাই শুধু করবেন’ -রডোলফো কস্টা।
আমরা যে ভুলটা করি, আমাদের কাজের ব্যাপারে কোন নেতিবাচক বক্তব্য আমরা ভালভাবে নিতে পারি না। অন্যের সমালোচনা আমদের আহত করে, আমরা বিরক্ত হই, সমালোচনাকারী ব্যাক্তির উপর রেগে যাই। কখনো কখনো হতাশ বোধ করি। এটি প্রকৃতপক্ষে নিজেকে নিয়ে অনিশ্চয়তার ফল।
হার্শি কি করেছিলেন এমন পরিস্থিতিতে? তিনি বছরের পর বছর চকোলেটের নতুন ফর্মূলা বের করার পেছনে সময় ব্যয় করেছেন। চকোলেটের সাথে মেশাতে চেয়েছেন শালগম, ধনেপাতা, সেলারি এবং এমনকি বিট! তার নিজের সিগনেচার প্রডাক্টে এখনও এর সমালোচনা লেখা থাকে। সুইস চকোলেটের সাথে তুলনা করলে দেখা যায়, হার্শির ‘carries a single, faintly sour note’ দুধের চর্বি ফার্মেন্টেশনের ফল যা হয়েছে পাউডার দুধের বদলে তরল কনডেন্স মিল্ক মেশানোর কারণে। এই সমালোচনাকে নেতিবাচকভাবে নিয়ে হার্শি এই চকোলেট তৈরি বন্ধ করেন নি। বরং এর টক-মিষ্টি ফ্লেভার আলাদাভাবে আমেরিকানদের স্বাদের পরিচায়ক হয়ে দাঁড়ায়।
যখন আমরা কোন কঠিন কাজ করি, আমাদের এটা নিশ্চিত হতে হবে যে কাজটা আমরা নিজের জন্যই করছি। আর কারও কাছ থেকে স্বীকৃতি পাওয়ার জন্য নয়। তাই সমালোচনাকে খুশী মনে শুনুন, ভাল লাগলে কাজে লাগান। নাহলে ভুলে যান।
৫। ঠিক আছে, এরপর কী?
‘পরিবর্তনের জন্য প্রথম পদক্ষেপ হল সচেতনতা। ২য় পদক্ষেপ হল, গ্রহণযোগ্যতা এবং ৩য় পদক্ষেপ হল কাজ।’ -নাথানিয়েল ব্রান্ডেন।
যে কোন ভুলের ক্ষেত্রে তাৎক্ষণিক ফলাফলের চেয়েও বেশী জরুরী তা দীর্ঘমেয়াদে আপনার কাজের উপর কি প্রভাব ফেলছে সেটা। আমরা যদি ভুলগুলো নিয়ে বেশী আহত বোধ করি তাহলে তাহলে আমাদের পরবর্তী পদক্ষেপটি সঠিক হলেও এগিয়ে যাওয়া অনেক কঠিন মনে হবে। কেন ব্যর্থতা নয়ে এত ভাবছেন? যেটা অতীত সেটা তো অতীতই। বরং ভাবা দরকার কিভাবে ভুলের ক্ষতি থেকে আপনার স্বপ্নকে রক্ষা করবেন। আপনার লক্ষ্যের ওপর যে বিরূপ প্রভাব পড়েছে কিভাবে সেটাকে সামলে উঠবেন।
হার্শির জীবনের গল্পের এটাই হয়ত সবচেয়ে বড় শিক্ষণীয় বিষয় যে, কখনো নিজের উপর ভরসা হারানো যাবে না। বার বার বিফল হলেও ঘুরে দাঁড়াতে হবে।