শিখতে হলে পড়তে হবে
- ক্যারিয়ার ডেস্ক
প্রতিদিন কতই না পড়ালেখা করি আমরা। পড়তে পড়তে খেলার সময় নেই, কার্টুন দেখার ফুরসত নেই, কেবলই আছে শ্রেণীর কাজ আর বাড়ির কাজের চাপ। এর মধ্যে তো পরীক্ষা আছেই। কখনো কি ভেবে দেখেছি, আমরা যা পড়ি; সেগুলো আমরা শিখি কীভাবে কিংবা মনে রাখি কীভাবে? এ প্রশ্নের জবাব আছে ‘হাউ উই লার্ন’ নামের নতুন একটি বইয়ে। নিউইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদক বেনেডিক্ট ক্যারি লিখেছেন এই মজার বইটি।
বইটির পুরো নাম একটু বড়, ‘হাউ উই লার্ন : দ্য সারপ্রাইজিং ট্রুথ অ্যাবাউট হোয়েন, হোয়্যার, অ্যান্ড হোয়াই ইট হ্যাপেনস’। কোনো কিছু শেখার প্রক্রিয়াটি খুব কঠিন নয়। ধারাবাহিকভাবে আমরা কীভাবে শিখে চলেছি, তারই বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা রয়েছে বইটিতে। লেখক ক্যারির মতে, এক জায়গায় সব সময় বসে থেকে বেশি বেশি পড়ার চেষ্টা করলে লাভ কমই হবে। কারণ, আমাদের মস্তিষ্কের গঠন এমন যে এতে স্মৃতি রক্ষিত হয় নানা জিনিস ও অভিজ্ঞতার সঙ্গে মিলেমিশে। একটি ঘটনা অন্য একটি তথ্যকে মনে রাখতে সাহায্য করে। আমাদের মস্তিষ্ক দুটি ঘটনা বিচ্ছিন্নভাবে গ্রহণ করলেও দুই ঘটনাই একে অপরকে স্মৃতিতে ধরে রাখতে সাহায্য করে। কাজেই পড়ালেখার সময় কোনো বিজ্ঞানী বা সম্রাট বা বাদশাহর নাম যদি মুখস্থ করতে হয়, তাহলে পরিচিত কারো সঙ্গে মিলিয়ে মনে রাখা যায়। এতে স্মৃতি অনেকদিন ওই তথ্য ধরে রাখতে পারে।
আর দ্রুত এবং কার্যকরভাবে কোনো কিছু শিখতে চাইলে সব সময় এক জায়গায় বসে পড়া উচিত নয়। মাঝেমধ্যে জায়গা বদল করে পড়লে ভালো ফল পাওয়া যায়! বিশেষ করে, কঠিন কোনো গণিত বা বিজ্ঞান বা ব্যাকরণের বিষয় শিখতে হলে জায়গা বদল করে পড়লে ভালো ফল পাওয়া যাবে।
নিজের ওপর বেশি চাপ দিতেও নিষেধ করেছেন ক্যারি। সবকিছু একবসায় পড়ে নেওয়ার চেয়ে মাঝেমধ্যে একটু বিরতি নিয়ে পড়লে শেখার কাজটা ভালো হবে বলে তাঁর মন্তব্য। এতে করে মস্তিষ্কের ওপর চাপ কমবে। একই সাথে, কোন বিষয়টা মনে রাখা জরুরি সেটারও একটি সংকেত পাবে মস্তিষ্ক। আরেকটি কাজও করতে হবে, যে কোনো ধরনের পরীক্ষার আগে নিজেকে একবার ঝালাই করে নিলে পরীক্ষার হলে বেশ কাজ দেবে।
সবশেষে বেনেডিক্ট খুব বেশি করে জোর দিয়েছেন ঘুমানোর ওপর। তাঁর মতে, ঘুমানোটা শেখার মতোই জরুরি। পড়ার কাজে মস্তিষ্কের ওপর অনেক চাপ যায়, সুতরাং ঘুমানোর মাধ্যমে এটি বিশ্রাম পায় এবং সতেজ হয়ে ওঠে। সুতরাং, শেখার জন্য ঘুমানো খুবই দরকারি বলে মনে করেন তিনি।