শখ থেকে উদ্যোক্তা
- উদ্যোক্তা ডেস্ক
অরুণিতা ২০১৩ সালে উচ্চমাধ্যমিক পাস করেন। ছোটবেলা থেকে তার হাতের কাজের শখ। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির পর হাতের কাজের নানা রকম উপকরণের খোঁজ পান। তারপর ধীরে ধীরে সেগুলো কিনে নিজের জন্যই নানারকমের গয়না বানানো শুরু করেন। এভাবে একসময় বাক্সপেটরা ভরে গেল, তখন তিনি সিদ্ধান্ত নিলেন কিছু গয়না বিক্রি করে দেবেন। ফেসবুকে ছবি দিলেন, প্রশংসাও পেলেন বেশ। উৎসাহিত হয়ে ফেসবুকে খুলে বসেন অনলাইন শপ ‘আরুণিকা’। এবারও সাড়া পেলেন খুব!
অরুণিতার আরুণিকার শুরুর গল্পটা এমনই।
নিছক শখের বশে শুরু। হাতখরচের টাকা জমিয়েই অরুণিতা এটি চালাচ্ছেন। বিক্রি বাড়ায় ধীরে ধীরে মূলধনের সমস্যাটা কাটছে। কিন্তু পড়ালেখার চাপ, মেসে থাকা এবং কখনো কারো কটু কথা শুনে হতাশ এলেও তিনি থেমে থাকেননি। স্বল্প পরিসরে শুরু করে মাত্র সাড়ে তিনমাসেই এতদূর এগিয়ে আসতে পেরেছেন তিনি। তিনি মনে করেন সামনের পথচলা নিশ্চয়ই আরও সুন্দর হবে।
অরুণিতার মতে, যে যা করতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করে এবং ভালোবাসে, তার সেই কাজ দিয়েই নিজেকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া উচিত। গয়না বানানো তার শখ। আর ভিন্নধাঁচের জিনিসের চাহিদা সবসময়ই আছে। অনেক ধৈর্য নিয়ে প্রতিটা গয়না তিনি তৈরি করেন। এরমধ্যে ‘হাতি মালা’ ও ‘হাতি আংটি’ অন্যতম প্রিয় কাজ। এছাড়া এবার বৈশাখের জন্য করা ওয়ারলি, ইজিপশিয়ান, লোকজ মোটিফের কিছু কাজ তিনি করেছেন।
অরুণিতার এগিয়ে আসার পিছনে ছিল বন্ধুবান্ধবদের দেওয়া উৎসাহ। নিজ পরিবার থেকে সমর্থন না পেলেও অনেকে অনুপ্রেরণা দিয়েছেন। জানা গেল তার কলেজের সহপাঠী দেবাশীষের কথাও। তাছাড়া ফ্যাশন ডিজাইনার বিবি রাসেলের কাজ দেখেও অরুণিতা অনুপ্রাণিত হন। অরুণিতা বলেন, ‘নতুন উদ্যোক্তাদের প্রধান ভুল হয় বিশ্বাসে। তা নিজের প্রতিই হোক বা অন্যদের ক্ষেত্রে। নিজের চিন্তাভাবনার প্রতি বিশ্বাসের অভাব থাকলে সব জায়গাতেই সেটার প্রতিফলন ঘটে। যে যা করছেন, তা পূর্ণ বিশ্বাসের সঙ্গে করা উচিত এবং যাদের সঙ্গে কাজ করছেন, তারা বিশ্বাসযোগ্য কি না সেটার প্রতিও লক্ষ রাখা উচিত। নিজের কাজ যেন সবার চেয়ে আলাদা হয় সেটাও দেখতে হবে। এখন শুধু গয়না নিয়ে কাজ করলেও ভবিষ্যতে তার ইচ্ছা আছে দেশি কাপড় ও হস্তশিল্প নিয়ে কাজ করার এবং অরুণিকার আউটলেট গড়ার। সাধ আছে অনেক, এখন সামর্থ্য হওয়ার অপেক্ষায় রয়েছেন তিনি। বহুদূর পথ হাঁটার সংকল্প অরুণিতার মনে।