বউ বাজারের নারী ব্যবসায়ীরা
- উদ্যোক্তা ডেস্ক
ঈশ্বরদী শহরের দরিনারিচাপাড়ার গৃহবধূরা নিজেরা কিছু একটা করতে চাইছিলেন। এলাকার আলো বেগম, আজিজা বেগম, আলেয়া খাতুন, জেসমিন, দৈবকি, না৬গিসসহ প্রায় ৩০ জন গৃহবধূ এখানে গড়ে তুলেন নিজস্ব ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। তাদের কর্মতৎপরতায় এ জায়গার নাম হয়েছে ‘বউ বাজার’। আলেয়া খাতুন নিজের দোকানে বসে বিক্রি করছিলেন থ্রিপিস, শাড়ি, সুতি কাপড়। এসব পণ্যের ক্রেতাও মেয়েরা। দোকান চালাতে কেমন লাগছে জানতে চাইলে আলো বেগম বলেন, খুবই ভালো লাগছে। এ ব্যবসা থেকে উপার্জিত অর্থ যেমন সাংসারিক প্রয়োজনে ব্যয় হবে; তেমনি সন্তানদের লেখাপড়ার কাজেও লাগাব। আমার শাশুড়ি আজিজা বেগমও আমাকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করেন। আমরা দুজনে মিলেই দোকানটি চালাচ্ছি। আমরা এখন বেশ ভালো আছি।
এখানে দোকান চালাতে কোনো সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন কিনা এ প্রসঙ্গে আজিজা বেগম জানান, প্রথম প্রথম সমাজের দু’একজন মানুষ তাদের উদ্দেশ্য করে বাঁকা মন্তব্য করত। দেখতে দেখতে অভ্যস্ত হয়ে যাওয়ায় এখন আর বলে না। তবে এ ব্যবসা চালাতে তাদের স্বামীরা যথেষ্ট সহযোগিতা করেছেন। ঈশ্বরদী বাজারের আলো বেগমের (৩২) স্বামী, এক ছেলে এক মেয়ে নিয়েই সংসার। আলো বেগমের মতে, এ দোকান তার সংসারে সচ্ছলতা এনে দিয়েছে। জেসমিন কাপড়ের দোকানের পাশাপাশি মেয়েদের পোশাক সেলাই করেন। এতে আগের চেয়ে আয়ও বেশি হয়। এতে সংসারের সচ্ছলতাও ফিরেছে। অসুস্থ স্বামী নরেশ চৌধুরীর কোনো কাজ করার ক্ষমতা নেই। তাই এক ছেলে এক মেয়ের মা দৈবকি রানী কাপড় বিক্রির পাশাপাশি সেলায়ের কাজও করেন।
নার্গিস বেগমের স্বামী ও দুই ছেলে নিয়েই তার সংসার। স্বামীর আয় ভালো, তারপরও নিজে কিছু একটা করতে চাইছিলেন। সেই ইচ্ছে থেকেই দোকান দেন। দু’জনের আয়ে তারা এখন ভালো আছেন। এ ধরনের প্রায় ত্রিশটি দোকানের প্রতিটিই পরিচালনা করেন মেয়েরা। সাত বছর ধরে গড়ে উঠেছে ঈশ্বরদীর এ বউ বাজার। অনেক মেয়েই এখন এটা দেখে উৎসাহিত হচ্ছেন।