সমালোচনা ছাড়ুন, ইতিবাচক হোন
- এস এম রাসেল (এবি রাফি)
ক্রিটিসিজম বা সমালোচনা যেন নিত্য দিনের অভ্যাস হয়ে গেছে। এই বিষয়টি প্রায় দেখা যায় মানুষের মধ্যে। মানুষ অন্যের সমালোচনা করতে পছন্দ করেন। বাসা, অফিস ও রাস্তাঘাটে যেকোনো জায়গায় সুযোগ পেলেই সমালোচনা করেন। কিন্তু এই সমালোচনা যে কতটুকু ক্ষতি করে তা একবারও ভেবে দেখেন না। যাকে নিয়ে সমালোচনা করা হয় যদি সে জানতে পারে, তার মনের অবস্থা কি হবে তা যদি একবার কেউ বুঝতে পারে তাহলে কোনদিনও অন্যের ব্যাপারে সমালোচনা করতো না।
একবার ভাবুন তো, যদি আপনার নামে কেউ সমালোচনা করে তাহলে আপনার কেমন লাগবে? সমালোচনা যেমন একজন মানুষকে কষ্ট দেয় ঠিক তেমনি তার সম্মানও নষ্ট করে।
আর যে সমালোচনা করে সেও যে একজন ভালো মানুষ তার নিশ্চয়তা কি? আসলে আপনি যার ব্যাপারে সমালোচনা করেন, সে কিন্তু সামনে থাকে না। আপনি যার ব্যাপারে নেগেটিভ কথা বলছেন, সে যদি বিচক্ষণ হয়, তাহলে আপনার সমালোচনা সমর্থন করবে না । আপনি নিজেই তার কাছে খারাপ মানুষ হয়ে থাকবেন।
আজকে একজনের ব্যাপারে সমালোচনা করলেন, কালকে অন্য জনের ব্যাপারে যে করবেন না তার নিশ্চয়তা কি? তাই সমালোচনা থেকে যত দূরে থাকা যায় ততই আপনার জন্য মঙ্গল।
ইতিবাচক মানুষ হওয়ার অন্যতম বড় বাধা হচ্ছে সমালোচনা। এটি মানুষের সাথে সম্পর্ক নষ্ট করে। আপনি দিন দিন নেতিবাচক হয়ে উঠবেন। সবচেয়ে বড় বিষয়, একটা সময় আপনি নিজেই মানুষের কাছে অপছন্দের হয়ে উঠবেন।
স্যার উইনস্টন চার্চিল সমালোচনার কষ্টকে শারীরিক ব্যথার চাইতেও বেশী বলে আখ্যায়িত করেছেন। তাই চলুন আমরা ইতিবাচক হয়ে উঠি।
ইতিবাচকতা মানুষকে যেমন সাফল্যের শীর্ষচুড়ায় নিয়ে যায়, ঠিক তেমনি সম্মান বয়ে আনতে পারে। ইতিবাচক হতে হলে আমাদের সর্বপ্রথম ভালো মানুষ হতে হবে। কিছু ভালো মানুষের সাথে চলতে হবে, কিছু ভালো বই পড়তে হবে। যা কিছুই বলেন না কেন ভেবে চিন্তে বলতে হবে।
একটি কথা মনে রাখবেন ব্যর্থরা সর্বদা অভিযোগ করে, ছুতা দেয় আর নেতারা সর্বদা সমস্যার সমাধান করেন। আপনি ব্যর্থ হবেন নাকি লিডার হবেন আপনার কর্মই বলে দিবে। তাই আমাদের সবসময়ই ইতিবাচক চিন্তা করতে হবে।
ইতিবাচক চিন্তা মানে হলো ‘যে কোনো অবস্থায় সঠিক চিন্তা করতে পারা’। যে কোনো অবস্থায় বা যে কোনো পরিস্থিতিতে সঠিক চিন্তা করতে পারাকেই পজিটিভ থিংকিং বলে।
ইতিবাচক হতে একটু সময় লাগবে। আপনাকে অভ্যাসে পরিণত করতে হবে। আপনাকে সবসময় ইতিবাচক মানুষের সাথে চলার অভ্যাস করতে হবে । অন্যদের সাহায্য করতে হবে। সাহায্য করার মন মানসিকতা থাকতে হবে। ইতিবাচক উক্তি শোনা নিজেকে ইতিবাচক রাখতে ভূমিকা পালন করে। নিজেকে ক্ষমা করাও একটি বড় দিক। যা আপনাকে প্রতিনিয়ত ইতিবাচক রাখতে সাহায্য করবে।
আমরা কাজ করতে গেলে অনেক ভুল হয়। তাই ভুলের উৎস খুঁজে বের করতে হবে। ভুল হলে তা মেনে নিতে হবে।
আমরা প্রায় সময়ই ব্যর্থ হই। এই ব্যর্থতাকে একটি সুযোগ হিসেবে গ্রহণ করাই বুদ্ধিমানের কাজ। কাজ করলেই ব্যর্থতা আসে। যারা কাজ করে না ব্যর্থতা আসার প্রশ্নই আসে না। তাই কাজ করতে গেলে ব্যর্থতা আসবেই। তাই হতাশ না হয়ে ব্যর্থতাকে মেনে নিন। নতুন করে ভাবুন, নতুন করে চিন্তা করুন। স্বপ্ন দেখুন বড়, প্রত্যাশা রাখুন ছোট, তাহলেই আপনি সুখী মানুষ।