পড়াশোনার পাশাপাশি
- ক্যারিয়ার ডেস্ক
পড়াশোনার পাশাপাশি শখের বসে বিভিন্ন রকম কাজ করা সম্ভব। চেষ্টা, আন্তরিকতা, লেগে থাকলে উদ্যোক্তাও হওয়া যেতে পারে। হাত খরচের টাকা উপার্জন হতে পারে। পড়াশোনার কোনো রকম ক্ষতি না করেই। পড়াশোনার পাশাপাশি শখের কাজে সফলতা অর্জন করেছেন কয়েক জন শিক্ষার্থী। সফল এই সব শিক্ষার্থীর সফলতার সাতকহন জানাচ্ছেন— মুহাম্মদ শফিকুর রহমান
শখ থেকে উদ্যোক্তা
—সানজিদা ওসমান
অর্থনীতি বিভাগ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়
শখের বসে আমি ক্রাফটিং শুরু করে। আস্তে আস্তে এটা এখন ইনকাম সোর্সে রূপ নিয়েছে। আমি মেনে চলি spend money to make money. এছাড়া গান গাওয়া, হারমোনিকা বাজানো, রান্না করা, পাখি পোষা, বই পড়া, বিতর্ক করা, শহর ঘুরে বেড়ানো আমার অন্যতম শখ। ক্রাফটিং থেকে আয়ের ৮০% ই আবার ক্রাফট মেটেরিয়ালস, মেশিনারিজ কিনতে ব্যায় করি। কিছুদিন আগে মেমসাহেব আয়োজিত বসন্ত মেলায় ক্রাফটিং এ সেলার এওয়ার্ড আমার অন্যতম প্রাপ্তি। শখের কাজ যখন যেটা করি। সর্বোচ্চ আন্তরিকতা দিয়ে করার চেষ্টা করি। শখের কাজ এবং পড়াশোনা দুটোই এক সঙ্গে চলতে পারে। ব্যালেন্স করে চলতে জানতে হবে। বায়োস্কোপ আমার অনলাইন পেজ ও গ্রুপের নাম। যেখানে আমি আমার হাতের কাজগুলোকে সবার সামনে তুলে ধরেছি। গিফট আইটেম, টুকটাক আঁকাআঁকি, হাতে বানানো গৃহসজ্জার সামগ্রী, ইত্যাদি কাজ সেখানে রয়েছে।
আমি মূলত কাগজ দিয়েই কাজ করি! সামান্য কাগজকে অসামান্য করপ তুলে ধরতে আমার ভালো লাগে। আমার পেজের লোগোতেও সেটাই ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করেছি। কাগজ, কাঁচি, রং-তুলি নিয়েই আমার বায়োস্কোপ, আমার ক্রাফটিং। ক্লাসে একদিন শিক্ষক আবুল হোসেন স্যার জানতে চেয়েছিলেন “এখন কী করার প্ল্যান?” আমি বলেছিলাম স্যার উদ্যোক্তা হবো, তারপর একদিন সফল ব্যবসায়ী হবো। আজ যখন মানুষ আমাকে উদ্যোক্তা বলে। তখন ভালোই লাগে। এতদিন নিজেকে ক্রাফটার হিসেবে পরিচয় দিতাম। আমার উদ্যোগের নাম বায়োস্কোপ। আমি খুব পরিশ্রম করতে ভালোবাসি! পড়াশোনার পাশাপাশি ২০১২ থেকে টিউশন করেই নিজের পড়ার খরচ বহন করেছি! শখের বসে ক্রাফটিং শুরু করেছিলাম। তবে ক্রাফটিং এখন আমার পার্টটাইম বা কখনো কখনো ফুলটাইম জব।
অল্প পুঁজিতেও উদ্যোক্তা হওয়া সম্ভব
—ফারদিনা আহমেদ ন্যাইনা
সমাজবিজ্ঞান বিভাগ, অনার্স ২য় বর্ষ, বরিশাল ইউনিভার্সিটি
বুদ্ধি আর নিজ থেকে কিছু করার তাগিদ থাকলে অল্প পুঁজিতেও উদ্যোক্তা হওয়া সম্ভব। পড়াশোনার পাশপাশি বাড়তি আয় করা যায়। আমি আর্টিফিশিয়াল ফুলের নানা রকমের হলুদের গয়না তিনি তৈরি করি। অনলাইনে হলো আমার পণ্য বিক্রি করার মাধ্যম। দুই জন কর্মচারী আমাকে কাজে সহায়তা করে। ছোটো বেলা থেকেই হস্তশিল্প এর টুকটাক বানানো আমার শখ। পড়ার ফাঁকে সময় পেলেই আমি বানাতাম রঙিন কাগজ দিয়ে অনেক রকম ফুল। ২০১৭ সালে শুরু করলে তখন ব্যবসা জমাতে পারেনি। ২০১৯ সালে আবার পুরোদমে শুরু করি। ততদিনে কাগজের গয়নার চাহিদাও অনেক বেড়ে যায়। আনকমন কিছু গয়না তৈরি করি। এবার ব্যাপক ক্রেতার খোঁজ মেলে। বরিশালসহ বাংলাদেশের সব জেলায় আমার পণ্য যাচ্ছে। ঢাকা চিটাগং রাজশাহী পঞ্চগড় কুড়িগ্রাম থেকে শুরু করে কক্সবাজার টেকনাফ সব জাগাতেই প্রতি নিয়ত পণ্য পাঠাতে হচ্ছে।
প্রথম দিকে মা, বাবা বকাঝকা করতো। ভাবতো, পড়াশোনা বুঝি গোল্লায় যাবে। পরে বুঝতে পারেন, এসব কাজ পড়াশোনার পাশাপাশি করা যায়। ব্যবসার চেয়ে ক্রেতা সন্তুষ্টি আমার কাছে প্রধান। অনেক যত্ন, সময় নিয়ে পণ্য তৈরি করি। খুব সামান্য লাভে বিক্রি করি। গয়না তৈরির কাঁচামাল হলো আর্টিফিশিয়াল ফুল, রেনু, কাগজ, রং বেরঙ্গের পুতি। প্রতিবেশী দেশ ভারত, চায়না, ঢাকা নিউমার্কেট থেকে এগুলো সংগ্রহ করা হয়। শুরুটা আমার মাত্র ২,৩০০ টাকা দিয়ে করলেও এখন প্রায় ৬০ হাজার টাকা বিনিয়োগ করেছি। মাসে সব খরচ বাদে তার আয় ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা। আমার মনে হয় নারীরা অলস সময় বসে না থেকে বাসায় বসে এমন অনলাইন ভিত্তিক কাজে নিয়োজিত হতে পারে। এতে কিছুটা ইনকামও হবে। আবার সময়টাও ভালো কাটবে।
সূত্র: ইত্তেফাক

 
	                
	                	
	             
	                       			                       	 
	                       			                       	 
	                       			                       	 
	                       			                       	 
	                       			                       	
1 Comment on this Post
Afsana Priya
মেয়ে দের জন্য পড়াশুনার পাশাপাশী অবশ্যই কিছু করা উচিত। আমাকে লেখা টা অনেক সাহস জাগালো। ধন্যবাদ আপনাকে এতো সুন্দর আর্টিকেল এর জন্য।