বর্ণবাদের বইগুলো

বর্ণবাদের বইগুলো

সম্প্রতি জর্জ ফ্লয়েড নামের এক কৃষ্ণাঙ্গ ব্যাক্তিকে শ্বেতাঙ্গ এক মার্কিন পুলিশ কর্মকর্তার নির্যাতনের ঘটনার প্রতিবাদে সারা যুক্তরাষ্ট্র যখন উত্তাল তখন ‘বর্ণবাদ’ ধারনাটিকে বিভ্রান্তিকর এবং সঠিক নয় বলে মন্তব্য করেছেন যুক্তরাজ্যের মিডলসেক্স বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক কুর্ট বার্লিং। তিনি বর্ণবাদ ধারণাটিকে বোঝার জন্য কয়েকটি বই পড়ার পরামর্শ দিয়েছেন। বইগুলো সম্পর্কে জানাচ্ছেন মারুফ ইসলাম


দ্য ওপেন সোসাইটি অ্যান্ড ইটস এনিমিস

লন্ডন স্কুল অব ইকোনোমিক্সের শিক্ষক কার্ল পুপারের লেখা এই বই বর্ণবাদ সম্পর্কে বিশদ ধারনা দেবে। পুপার নিজে উদ্বাস্তু ছিলেন। জার্মানির নাজিদের দ্বারা নির্যাতনের শিকার হয়ে নিজ ভূম থেকে উৎখাত হন। ভিয়েনায় ছিলেন দীর্ঘদিন। সেখান থেকে পরবর্তীতে যুক্তরাজ্যে চলে আসেন। তিনি জীবন দিয়ে উপলব্ধি করেছেন বর্ণবাদের যন্ত্রণা। এই বইয়ে ফুঁটে উঠেছে সেই বর্ণবাদ। তিনি মনে করেন ‘খারিজবাদ’ হচ্ছে এই তথাকথিত উন্মুক্ত সমাজের সবচেয়ে বড় শত্রু। পুপার এই বইয়ে বর্ণ বা রং নিয়ে একটি বাক্যও ব্যয় করেননি। তিনি দেখিয়েছেন এই সমাজের ভিতরে কারা বাস করে এবং বাইরে কারা বাস করে। একই সঙ্গে দেখিয়েছেন বর্ণবাদকে কারা পেলেপুষে বড় করে।

ব্ল্যাক স্কিন, হোয়াইট মাস্ক

বইটির লেখক ফ্রাঞ্জ ফ্যানন, যিনি বেড়ে উঠেছেন ফরাসী সাম্রাজ্যের মার্টিনিক এলাকায়। এটা এমন এক জায়গা যেখানে কালো রঙকে মনে করা হতো কলঙ্ক। সেখানে মনে করা হতো যে রাষ্ট্রে, ব্যবসা-বাণিজ্যে কিংবা শিক্ষায় কালোরা অপ্রয়োজনীয়। ফ্যানন এই পরিবেশের বিরুদ্ধে লড়াই করেছেন অবিরত এবং সেই পঞ্চাশের দশকেই হয়ে উঠেছিলেন এক অনুকরণীয় চিন্তক ও প্রতিবাদী।

সবার আগে মুগ্ধ করবে এই বইয়ের ভাষা। আর মুগ্ধ করবে এই বইয়ের বিষয়বস্তু। কোথাও সাদা-কালো, বর্ণবাদ, বৈষম্য শব্দ ব্যবহার না করেও প্রতিটি পাতায় পাতায় ফুটিয়ে তুলেছেন বর্ণবাদকে।

দ্য ল্যাঙ্গুয়েজ অব জিন

জিনের ভাষা—নামটি দেখেই বোঝা যাচ্ছে বইটি বংশগতি নিয়ে লেখা। কিন্তু বইটির বড় অংশজুড়ে রয়েছে বর্ণবাদ নিয়ে আলোচনা। বইটি লিখেছেন স্টিভ জোনস। স্টিভ মনে করেন, বর্ণবাদ হচ্ছে অন্যের মাধ্যমে সংঘটিত একটি আচরণ যা নিয়ন্ত্রণ করে সমাজ এবং বৃহত্তর অর্থে জাতি। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ এবং হলকাস্টের পর বর্ণবাদ সারা পৃথিবীতে প্রকট সমস্যা হিসেবে দেখা দেয় বলে মন্তব্য করেছেন স্টিভ। স্টিভ এই বইয়ে আরও বলেছেন, অন্তত দুশো বছর ধরে পৃথিবীতে বর্ণবাদ আছে, ভবিষ্যতে আরও দুশো বছর থাকবে বলেই মনে হয়।

সূত্র: ফাইভ বুকস

Sharing is caring!

Leave a Comment