শিশুর হাতে বই তুলে দিন : দীপু মাহমুদ
রবিউল কমল : বাংলা একাডেমি এবং সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে চলছে অমর একুশে গ্রন্থমেলা ২০১৬। মেলায় এসেছিলেন এই প্রজন্মের পাঠকপ্রিয় লেখক দীপু মাহমুদ। যিনি দুই হাতে লিখে চলেছেন সফলভাবে। শিশুকিশোরদের জন্য যেমন লিখছেন তেমনি লিখছেন বড়দের জন্যও। তবে সাম্প্রতিক সময়ে তিনি ইতিহাসনির্ভর মুক্তিযুদ্ধের বই লিখে বেশ আলোচিত। মেলা চত্বরে লেখালেখি এবং এবারের মেলা নিয়ে তিনি কথা বলেন দি প্রমিনেন্টের সাথে।
এবারের মেলায় আপনার কতটি বই আসছে?
- এবারের মেলায় আমার ১২ টি নতুন বই আসছে। এর মধ্যে বড়দের উপন্যাস এবং কিশোর উপন্যাস থাকছে। তবে আমি মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক কিশোর উপন্যাস স্বপ্নযাত্রা ৭১ এবং নীতুর ডায়েরী ১৯৭১ নিয়ে অনেক বেশি আশাবাদী।
আপনি মুক্তিযুদ্ধের বই লিখতে কেন আগ্রহী হলেন?
- এটা একটি ভালো প্রশ্ন। আসলে এখনকার শিশুকিশোররা কোনোদিন মুক্তিযুদ্ধ দেখেনি। আমি চেষ্টা করেছি সেই সময়ের বাস্তব দৃশ্যগুলো তুলে ধরার। আমার বিশ্বাস এই দুটি বই থেকে তারা মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে অনেক কিছুই জানতে পারবে। আমরা কত রকম ত্যাগের বিনিময়ে এই দেশটি পেয়েছি আমি জানাতে চেষ্টা করেছি বইয়ের মাধ্যমে। শুধু ছোটরা না বড়রাও এই বই থেকে মুক্তিযুদ্ধের অনেক অজানা বিষয় জানতে পারবে। আমি চাই আমাদের শিশুদের মধ্যে দেশপ্রেম জাগ্রত হোক, তারা দেশকে ভালোবাসতে শিখুক।
কিন্তু এখনকার শিশুরাতো বই পড়তে চায় না…
- এটা আমি মানতে নারাজ। অভিভাবকরা চাইলে অবশ্যই শিশুরা বই পড়বে। বাড়িতে বইয়ের লাইব্রেরী থাকলে সেই শিশুরা বই পড়া শিখবে। আমাদের উচিত শিশুদের হাতে বই তুলে দেওয়া, তাহলে শিশুরা অবশ্যই বই পড়বে। শুধু শিশুদের দোষ দিলে হবে না বরং আমাদের অভিভাবক মহলকে আরো বেশি সচেতন হতে হবে। শিশুদের মধ্যে বই পড়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। তাহলে জাতি একটি সুন্দর প্রজন্ম উপহার পাবে।
শিশুদের জন্য লিখতে কেমন লাগে?
- অনেক ভালো লাগে।
অটোগ্রাফ বা ফটোগ্রাফ দিতে আপনার কেমন লাগে?
- অবশ্যই ভালো লাগে। এটি একজন লেখকের জন্য পরম পাওয়া। যখন কেউ অটোগ্রাফ চায় তখন বুঝতে পারি তারা আমাকে লেখক হিসেবে গ্রহণ করেছে। একজন লেখকের কাছে এর চেয়ে বেশি কিছু চাওয়ার থাকতে পারে না।
একজন লেখক হিসেবে আপনার প্রিয় লেখক কারা বা কাদের লেখা আপনি বেশি পড়েন?
- অবশ্যই মুহম্মদ জাফর ইকবাল আমার সবচেয়ে প্রিয় লেখক। এছাড়াও আমি মানিক বন্দোপাধ্যায় পড়ি, তারাশংকর পড়ি। আবার যখন পড়ি তখন লুৎফর রহমান রিটন পড়ি। আসলে আমি অনেকের লেখায় পড়ি।
এবারের মেলা কেমন লাগছে?
এবারের মেলা খুব ভালো লাগছে। মেলার পরিসর বাড়ানো হয়েছে। এটা অবশ্যই একটি পজিটিভ দিক। তবে আর একটু সাজানো গোছানো হতে পারতো। তাহলে দর্শণার্থীরা খুব সহজেই স্টল খুঁজে পেত। এখন এমন অবস্থা হয়েছে যে মানুষ ঢুকেই হোঁচট খাচ্ছে। কোনদিকে যাবে ঠিক বুঝে উঠতে পারছে না।
এবারের মেলা কি জমবে?
- অবশ্যই, এবার দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি অনেক ভালো। তাই আগের বছরের তুলনায় এবারের মেলা অনেক বেশি জমজমাট হবে। মানুষ নির্ভয়ে মেলায় আসতে পারবে। সপরিবারে মেলায় ঘুরে ঘুরে বই কিনতে পারবে।
কাদের জন্য লিখতে বেশি ভালো লাগে?
- সবার জন্যই লিখতে ভাল লাগে তবে শিশুদের জন্য লিখতে একটু বেশি স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করি। কারণ তখন নিজের মধ্যে একটি আলাদা কল্পনার জগত তৈরি করা যায়।
পাঠকদের জন্য কিছু বলুন…
- সবাইকে শুভেচ্ছা। আমি সবার কাছে অনুরোধ করবো ভাল মানের বই পড়ুন এবং শিশুর হাতে বই তুলে দিন।
আপনাকে অনেক ধন্যবাদ