গুলতেকিনের প্রথম বই প্রকাশ
শিল্পসাহিত্য ডেস্ক : হুমায়ূন আহমেদের মৃত্যুর চার বছর পর কাব্য প্রতিভার প্রকাশ ঘটালেন তার সাবেক স্ত্রী গুলতেকিন খান। এবারের একুশের বইমেলার শুরুতেই এসেছে তার প্রথম কবিতার বই ‘আজো, কেউ হাঁটে অবিরাম’।
গতকাল (১ ফেব্রুয়ারি) বইমেলার প্রথম দিন থেকে প্রকাশনা সংস্থা তাম্রলিপির স্টলে বইটি এলেও এর প্রকাশনা উৎসব হবে আগামী ৫ ফেব্রুয়ারি।
তাম্রলিপির কর্ণধার তারিকুল ইসলাম রনি বলেন, ‘এটি গুলতেকিন খানের প্রথম বই। ৫ ফেব্রুয়ারি বাংলা একাডেমির কবি শামসুর রাহমান সেমিনার কক্ষে এর প্রকাশনা উৎসব হবে।’
গুলতেকিন বইটি উৎসর্গ করেছেন দাদা প্রিন্সিপাল ইব্রাহীম খানকে, লিখেছেন-‘প্রথম পাঠক, পথ প্রদর্শক, আমার দাদা প্রিন্সিপ্যাল ইব্রাহীম খানকে’।
হুমায়ূনের অনেক বইয়ের প্রচ্ছদশিল্পী ধ্রুব এষের আঁকা প্রচ্ছদে গুলতেকিনের বইটির মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ১৩৫ টাকা।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তরুণ শিক্ষক হুমায়ূন যখন উপন্যাস লিখতে শুরু করেছিলেন, তখন তাকে বিয়ে করেছিলেন গুলতেকিন। ৩২ বছরের দাম্পত্যে চার সন্তানের বাবা-মা হন তারা। ২০০৫ সালে গুলতেকিনের সঙ্গে বিচ্ছেদের পর হুমায়ূন বিয়ে করেন শাওনকে। তবে গুলতেকিনের সঙ্গে সম্পর্ক ধরে রাখতে দেখা গেছে এই লেখকের পরিবারের সদস্যদের।
ছয়টি বিভাগে সাজানো ‘আজো, কেউ হাঁটে অবিরাম’ বইটিতে গুলতেকিনের ৩৫টি কবিতা স্থান পেয়েছে। বিভাগগুলো হল- ‘ভরে যাক সবার খামার’, ‘রাত্রিকে বাঁধো আজ’, ‘বাজুক স্কুলের ঘণ্টা’, ‘আস্তিজুড়ে মাখিয়েছি কাদা ধুলো’, ‘ফ্রেমে বাঁধলেই শিল্প’ এবং ‘জানতো না, জানতো না’।
বইয়ের ভূমিকায় লেখা হয়েছে- সামান্যকে খুব সাধারণ করে তোলা কবি গুলতেকিন খান-এর সহজাত প্রবৃত্তি। পার্সিয়ুস থেকে লালন আর কাহলিল জিবরান থেকে বব ডিলান পর্যন্ত তার স্বচ্ছন্দ যাতায়াত। এদেশের গরিষ্ঠ জনগোষ্ঠীর মতোই ছন্দময়তার দিকে তার ঝোঁকটির সঙ্গে অনেকেই একাত্ম হয়ে উঠবেন অনায়াসে।
এতে আরও লেখা হয়েছে- ‘এটি তার প্রথম কবিতার বই এ কথা জেনে অনেকেই বিস্মিত হতে পারেন, তবে কিছুক্ষণের মধ্যেই তাঁর মৃদু কিন্তু সুঠাম উচ্চারণ সবাইকে আচ্ছন্ন করে তুলবে।’
লেখক পরিচিতিতে লেখা বলা হয়েছে- পেশায় শিক্ষকতা, নেশায় শিল্প ও সাহিত্য আর প্রবণতায় সর্বজীবের প্রতি শ্রদ্ধা আর মানবতা। লেখালেখিতে হাতেখড়ি হয়েছিল সেই প্রথম কৈশোরেই; ছাপার অক্ষরে প্রথম লেখা দেখে দাদা এদেশের প্রবাদ-প্রতীম শিক্ষাগুরু প্রিন্সিপাল ইব্রাহীম খান, পৈতৃক ভিটে ধানমণ্ডির ‘দখিন হাওয়া’য় মাথায় হাত রেখে উপহার দিয়েছিলেন নগদ পাঁচ টাকা।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি সাহিত্যের পাঠ নিয়ে ‘জীবনের প্রয়োজনে’ বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষকতা শুরু করলেও ততদিনে হারিয়েছেন লেখার খাতা, বলা হয়েছে পরিচিতিতে।