ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদের উদ্বোধন
- ক্যাম্পাস ডেস্ক
ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির স্থায়ী ক্যাম্পাস আশুলিয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়টির কেন্দ্রীয় মসজিদের উদ্বোধন করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৬ মে) ‘আমাদের জীবনে রমজানের গুরুত্ব’ শীর্ষক এক সেমিনারের প্রাক্কালে দৃষ্টিনন্দন তিন তলাবিশিষ্ট সম্পূর্ন কাঁচের তৈরি মসজিদটির উদ্বোধন করেন ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান ড. মো. সবুর খান। সেমিনারে প্রধান আলোচক হিসেবে পবিত্র রমজান মাসে মুসলমানদের দায়িত্ব ও কর্তব্য নিয়ে আলোচনা করেন মদিনা বিশ্ববিদ্যালয় এবং বাংলাদেশের জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মনজুর-ই-এলাহী। সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির উপাচার্য অধ্যাপক ড. ইউসুফ মাহবুবুল ইসলাম। এছাড়া সেমিনারে আরও বক্তব্য রাখেন ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির স্থায়ী ক্যাম্পাসের ডিন অধ্যাপক মোস্তফা কামাল ও পরিচালক (প্রশাসন) মোহাম্মদ ইমরান হোসেন।
দৃষ্টিনন্দন মসজিদটির নকশা করেছেন দেশ বরেণ্য স্থপতি ও ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির স্থাপত্য বিভাগের প্রধান অধ্যাপক মো. খায়রুল এনাম। তিন তলা মসজিদটির দেয়াল ৬০ ডিগ্রি কোণের কাঁচ দ্বারা নির্মিত। প্রায় সহস্রাধিক মুসুল্লী একসাথে মসজিদটিতে জামাতে নামাজ আদায় করতে পারবে। মসজিদে ছাত্রীদের জন্যও দোতলায় পৃথক নামাজের ব্যবস্থা রয়েছে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান ড. মো. সবুর খান বলেন, শিক্ষার্থীদের নামাজ আদায়ের জন্য এই দৃষ্টিনন্দন মসজিদটি নির্মাণ করা হয়েছে। পাশাপাশি এ মসজিদটি ইসলামিক গবেষণা সেন্টার হিসেবেও কাজ করবে যাতে শিক্ষার্থীরা সত্যিকারের ইসলামী ভাবধারায় অনুপ্রাণিত হয়ে কুরআন ও সুন্নাহর ভিত্তিতে নিজেদেরকে উন্নত চরিত্রের অধিকারী হিসেবে গড়ে তুলতে পারে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা যাতে ধর্মীয় মূল্যবোধ ও আদর্শ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে মৌলবাদী ও উগ্রবাদী চেতনায় ও আদর্শে উজ্জীবিত না হয় সেদিকে সকলের সজাগ দৃষ্টি রাখার আহ্বান জানান তিনি।
প্রধান আলোচকের বক্তব্যে অধ্যাপক ড. মনজুর-ই-এলাহী বলেন, রোজাব্রত পালন করা মানে শুধু সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত না খেয়ে থাকা নয়, বরং সকল প্রকার অন্যায়, মিথ্যা, বদভ্যাস থেকে দূরে থাকার নামই রমজান। রমজানের এই অন্তর্নিহিত আহ্বানে যিনি সাড়া দিতে ব্যর্থ হবেন, তার রোজা পালন করা কোনো কাজে আসবে না। তাই রমজানের প্রকৃত শিক্ষা, দায়িত্ব ও কর্তব্য সম্পর্কে সবাইকে সচেতন হওয়ার আহ্বান জানান এই ইসলামী শিক্ষাবিদ।
অধ্যাপক ড. মনজুর-ই-এলাহী আরো বলেন, একটি ন্যায়ভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠা ও মানবিক মূল্যবোধসম্পন্ন মানুষ হিসেবে নিজেকে গড়ে তোলার অপূর্ব সুযোগ এনে দেয় মাহে রমজান। এই সুযোগকে প্রত্যেকেরই কাজে লাগানো উচিত। যিনি এই সুযোগ কাজে লাগাতে পারেন না, তিনি নিঃসন্দেহে দুর্ভাগা। অধ্যাপক ড. মনজুর-ই-এলাহী আক্ষেপ করে বলেন, মাহে রমজান সমাজকে পরিবর্তনের যে সুযোগ এনে দেয় সেই সুযোগ কাজে লাগানোর কোনো উদ্যোগ কোনো প্রতিষ্ঠানকে নিতে দেখা যায় না। যদি সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো রমজানের শিক্ষাকে সমাজের সর্বস্তরে ছড়িয়ে দেওয়ার উদ্যোগ নিত তাহলে সমাজ থেকে অন্যায় ও অনাচার দূর হতো বলে মন্তব্য করেন তিনি। এ সময় রমজানের দায়িত্ব ও কর্তব্য নিয়ে সেমিনার আয়োজন করার জন্য ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিকে ধন্যবাদ জানান অধ্যাপক ড. মনজুর-ই-এলাহী।
সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক ড. ইউসুফ মাহবুবুল ইসলাম বলেন, সবচেয়ে বড় পাপ হচ্ছে অকৃতজ্ঞতা। আমাদের প্রত্যেককে আলাদা আলাদা ডিএনএর মাধ্যমে আল্লাহ আমাদেরকে সৃষ্টি করেছেন, অথচ তাঁর প্রতি আমরা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করি না। রমজান আমাদেরকে আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশের সুযোগ এনে দেয়। সুতরাং আমাদের উচিত এই সুযোগটি গ্রহণ করা।
সেমিনার শেষে প্রায় তিন হাজার শিক্ষার্থী একত্রে ইফতারে অংশগ্রহণ করে যা কোন বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য অনন্য উদাহরণ।