১২০০ শিক্ষার্থীকে ল্যাপটপ দিলো ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়
- ক্যাম্পাস ডেস্ক
তথ্য প্রযুক্তির ক্রমবিকাশমান ধারার সাথে প্রতিটি শিক্ষার্থীকে যুগোপযোগী করে তুলতে এবং প্রতিযোগীতা মূলক চাকরি বাজারে দক্ষতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে ‘একজন ছাত্র একটি ল্যাপটপ’ প্রকল্পের নিয়মিত কর্মসূচীর অংশ হিসেবে আজ ২৬ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭১ মিলনায়তনে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীদের মাঝে বিনামূল্যে ১২০০টি সেভেন্থ জেনারেশনের ডিসিএল ল্যাপটপ বিতরণ করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টিবোর্ডের চেয়ারম্যান মো. সবুর খানের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে শিক্ষার্থীদের মাঝে বিনামূল্যে ল্যাপটপ বিতরণ করেন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সদস্য অধ্যাপক ড. দিল আফরোজা বেগম। অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য প্রফেসর ড. এস এম মাহাবুবুল হক মজুমদার। ল্যাপটপ প্রদানের পূর্বে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ হামিদুল হক খান একাডেমিক ও শিক্ষা কার্যক্রমে ল্যাপটপের সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করার প্রত্যয়ে শিক্ষার্থীদের শপথবাক্য পাঠ করান।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সদস্য অধ্যাপক ড. দিল আফরোজা বেগম বলেন, ১৬ কোটি মানুষের বাংলাদেশে অর্ধেকের বেশি তরুণ প্রজন্ম। এই তরুণরাই আমাদের শক্তি। তরুণদেরকে সঠিক ও কার্যকর শিক্ষার মাধ্যমে গড়ে তুলতে হবে, তবেই ২০৪১ সালের মধ্যে বিশ্বের বুকে একটি উন্নত জাতি হিসেবে আমরা মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারব। এসময় ড. দিল আফরোজা বেগম জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়ার উদাহরণ দিয়ে বলেন, দুটি কারণে জাপান ও কোরিয়ার আজ উন্নত দেশে পরিণত হয়েছে–প্রথমত: তারা তাদের দেশের মানুষকে মানবসম্পদে পরিণত করতে পেরেছে এবং দ্বিতীয়ত: তারা নিজস্ব প্রযুক্তির উদ্ভাবন করেছে এবং বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে দিয়েছে। আমাদের দেশের বিপুল জনশক্তিকে জনসম্পদে পরিণত করতে হবে, পাশাপাশি প্রযুক্তির আমদানী নির্ভরতা কমিয়ে নিজস্ব প্রযুক্তির উদ্ভাবন করতে হবে বলে মন্তব্য করেন ড. দিল আফরোজা বেগম।
দক্ষ জনশক্তি তৈরি করতে মানসম্মত শিক্ষার বিকল্প নেই উল্লেখ করে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের এই সদস্য আরো বলেন, মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করতে হলে আমাদেরকে সিলেবাস পরিবর্তন করতে হবে এবং সিলেবাসে অবশ্যই সহ-শিক্ষা কার্যক্রম অন্তর্ভূক্ত করতে হবে। এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন উদ্যোগ গ্রহণ করতে যাচ্ছে বলে জানান তিনি। ড. দিল আফরোজা বেগম বলেন, পাঠ্যপুস্তকের জ্ঞানের পাশাপাশি সহশিক্ষা কার্যক্রম শিক্ষার্থীদেরকে সামাজিকভাবে দক্ষ করে গড়ে তোলে। ক্লাসরুম আর পাঠ্যপুস্তকে আবদ্ধ জীবন কখনো পরিপূর্ণ শিক্ষা প্রদান করতে পারে না। তাই শিক্ষার্থীদেরকে অবশ্যই সহশিক্ষা কার্যক্রমে অংশগ্রহণ বাড়াতে হবে। তাদেরকে দেশাত্মবোধে উদ্বুদ্ধ করতে হবে।
সভাপতির বক্তব্যে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান মো. সবুর খান বলেন, বর্তমান সময়ে তথ্যপ্রযুক্তির জ্ঞান ছাড়া টিকে থাকা প্রায় অসম্ভব। আমাদের একাডেমিক সার্টিফিকেট কোনো কাজেই আসবে না, যদি আমরা প্রযুক্তির জ্ঞানে সমৃদ্ধ না হই। এজন্য ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি শুরু থেকেই শিক্ষার্থীদের হাতে ফ্রি ল্যাপটপ তুলে দিচ্ছে। এ পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের মাঝে ১৮ হাজার ল্যাপটপ তুলে দেওয়া হয়েছে বলে জানান মো. সবুর খান।
শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে মো. সবুর খান বলেন, এই ল্যাপটপকে তোমরা তোমাদের ক্যারিয়ার উন্নয়নে যেন ব্যবহার করতে পারো, ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি সেটাই প্রত্যাশা করে। বিশ্ববিদ্যালয় আরো প্রত্যাশা করে যে, এই ল্যাপটপ তোমরা এমন কোনো কাজে ব্যবহার না করো যাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনাম ক্ষুণ্ন হয়। ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির এই ল্যাপটপ বিতরণ কার্যক্রম ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে বলে জানান মো. সবুর খান।
মো. সবুর খান আরও বলেন, ল্যাপটপ বিতরণের সুফল আমরা ইতিমধ্যে পেতে শুরু করেছি। তথ্যপ্রযুক্তির যে কোনো প্রতিযোগিতায় এখন ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা চ্যাম্পিয়ন হয়। তারা দেশ বিদেশ থেকে প্রতিনিয়ত পুরস্কার নিয়ে আসছে। তিনি শিক্ষার্থীদের ল্যাপটপের সঠিক ব্যবহার ও প্রয়োগ নিশ্চিত করার আহ্বান জানান।
উল্লেখ্য, সামার ২০০৮ সেমিষ্টার থেকে ‘ওয়ান স্টুডেন্ট : ওয়ান ল্যাপটপ’ কর্মসূচীর আওতায় ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে ভর্তি হওয়া সকল শিক্ষার্থীকে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বিনামূল্যে ল্যপটপ প্রদান করে আসছে। এরই ধারাবাহিকতায় আজ ফল ২০১৫ সেমিস্টারে ভর্তি হওয়া ১২০০ শিক্ষার্থীর হাতে ল্যাপটপ তুলে দেয়া হয়।