অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে গিয়ে জীবন উৎসর্গ করলেন তালহা
- ক্যাম্পাস ডেস্ক
চারপাশে যখন অন্যায়ের ছড়াছড়ি, কারো বিপদে কেউ এগিয়ে আসে না, বিপদগ্রস্থকে দেখেও না দেখার ভান করে এড়িয়ে যায় নগরবাসী, তখনই প্রতিবাদের অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করে জীবন উৎসর্গ করলেন খন্দকার আবু তালহা নামের ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির এক শিক্ষার্থী।
ঘটনা গতকাল রেবাবারের (৮ আক্টোবর, ২০১৭)। সকাল ৮টার ক্লাস ধরবেন বলে ভোর সাড়ে ৬টায় বাসা থেকে বের হয়েছিলেন আবু তালহা। সকালটা আর দশটা সকালের মতোই ছিল। শান্ত, স্নিগ্ধ, কোলাহলমুক্ত। যখন বাসা থেকে বের হয়েছেন আবু তালহা, তখনো পুরোপুরি জেগে ওঠেনি ঢাকা নগরী। কিন্তু আবু তালহা জানতেন না, কয়েকজন ছিনতাইকারী ঠিকই জেগে উঠেছে টিকাটুলির কে এম দাস লেনে। এই লেনেই বাসা আবু তালহার। বাসা থেকে ভোর সাড়ে ৬টায় বের হয়ে হেঁটে যাচ্ছিলেন বাস স্ট্যান্ডের দিকে। কিন্তু বেশিদূর যেতে পারেন নি। বাসা থেকে মাত্র ১০০ গজ যেতেই চারজন ছিনতাইকারী পথ আটকায় তার। অস্ত্রের মুখে তার কাছ থেকে কেড়ে নেয় মোবাইল-মানিব্যাগসহ সবকিছুু। বিষয়টি মেনে নিতে কষ্ট হয় আবু তালহার। তিনি কিছুক্ষণ ঝিম মেরে দাঁড়িয়ে থাকেন ঘটনাস্থলে। তারপর সামনে থাকিয়ে দেখেন খানিকটা দূরে একই কাজ করছে ওই চার ছিনতাইকারী, আরেকটি রিকশা আটকে। তার হয়তো মনে পড়ে যায় ‘অন্যায় যে করে আর অন্যায় যে সহে, তব ঘৃনা যেন তারে তৃনসম দহে’ছোটবেলায় পড়া কবিতার চরণ। তিনি দৌড়ে গিয়ে বাধা দিতে চেষ্টা করেন, জাপটে ধরেন একজন ছিনতাইকারীকে। তখন ধস্তাধস্তি শুরু হয়। এই ধস্তাধস্তির এক পর্যায়ে এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাত শুরু করে ছিনতাইকারীরা এবং তালহাকে গুরুতর আহত করে পালিয়ে যায় ঘটনাস্থল থেকে।
এরমধ্যে জড়ো হয়ে যায় এলাকাবাসী ও তালহার পরিবারের লোকজন। দ্রæত নিয়ে যায় ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালে। কিন্তু চিকিৎসকদের সকল প্রচেষ্টা ব্যর্থ করে দিয়ে সকাল সাড়ে আটটায় মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন আবু তালহা।
ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির জনসংযোগ বিভাগের উর্ধ্বতন সহকারি পরিচালক আনোয়ার হাবিব কাজল জানান, নিহত আবু তালহা ওই ইউনিভার্সিটির কম্পিউটার সায়েন্স বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। তিনি কুমিল্লার বড়ুড়া উপজেলা নূর উদ্দিন খন্দকারের ছেলে। তার বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করে শোক প্রকাশ করেছে বিশ্ববিদ্যালয় পরিবার।