উপস্থাপনায় ‘পত্রিকামানব’!
- তৌহিদুল ইসলাম
ভেবে দেখুন তো, ক্লাস প্রেজেন্টেশনে (উপস্থাপনায়) বিধিসম্মত পোশাকের পরিবর্তে গায়ে জড়িয়েছেন পত্রিকা! কী, ভাবতে অবাক লাগছে ? হ্যাঁ, এমনটিই করেছেন ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির সাংবাদিকতা ও গণযোগাযোগ বিভাগের ২৭তম ব্যাচের শিক্ষার্থীরা। ইনফরমেশন গেদারিং এন্ড নিউজ রাইটিং বিষয়ের প্রেজেন্টেশনে এমন বৈচিত্রের পসরা সাজিয়ে বসেন তারা। পত্রিকা দিয়ে কেউ বানিয়েছে শার্ট, কেউ কোর্ট আবার কেউ নিজেকে পুরোটা মুড়িয়ে বানিয়েছে পত্রিকামানব!
২৭তম ব্যাচের শিক্ষার্থী নাজিরুল ইসলাম বলেন, ‘চিরায়ত পোশাকে উপস্থাপনার পরিবর্তে ভিন্নধর্মী উপস্থাপনার মাঝে আছে আলাদা উদ্দীপনা। নিজেকে আলাদাভাবে উপস্থাপনের একটা সুযোগ পেয়েছিলাম, যা বেশ ভালোভাবে উপভোগ করেছি। তাছাড়া আমাদের ব্যাচের সবার মাঝে ছিল আলাদা উচ্ছ্বাস। এটিকে আমরা আমাদের উৎসবে রূপ দিতে চেষ্টা করেছি।’
এমন বৈচিত্রময় উপস্থাপনায় শিক্ষার্থীদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা দেখা যায়। তারা নিজেরাই তাদের পোশাক ডিজাইন ও প্রস্তুত করেন। শিক্ষার্থীরা বলেন, আমাদের এমন বৈচিত্রময় উপস্থাপনার সুযোগ তেমন থাকে না। সাধারণত গৎবাঁধা ফর্মাল পোশাকের সাজে আমরা মাঝে মাঝে ক্লান্ত হয়ে যাই। রিপোর্টিং কোর্স হওয়ায় আমরা এমন উপস্থাপনার সুযোগ ও সঙ্গতি দুটোই খুঁজে পেয়েছিলাম।
এমন উপস্থাপনায় অংশ নেয়া আরেক শিক্ষার্থী সুরাইয়া রাত্রী জানান, প্রথম দিকে এমন উপস্থাপনায় কিছুটা সংকোচ বোধ করলেও পরবর্তীতে নতুন কিছুর সম্ভাবনায় বেশ ভালোই উপোভোগ করেছি। এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা ও গণযোগাযোগ বিভাগের শিক্ষক শরিফুল ইসলাম বলেন, শিক্ষার্থীরা যে বার্তা দিতে চেয়েছে সেটি যথার্থ তাৎপর্য বহন করে। অনেক সময় শিক্ষার্থীদের উপস্থাপনায় বিধিসম্মত পোশাক চাপে পরিণত হয়। তাই একঘেঁয়েমি কাটাতে এবং তাদের মাঝে নতুন কিছু আবিষ্কারের উদ্দীপনার বীজ বপন করতে মাঝে মাঝে এমন উদ্দ্যোগ নেয়াই যায়।
শিক্ষাসংশ্লিষ্টরা মনে করেন, আপেল থেকে যদি কৃত্রিম কান তৈরি করা যায়, টমেটো ও ডিমের খোসার সাহায্যে যদি গাড়ির টায়ার তৈরি করা যায়। তবে পত্রিকা দিয়ে পোশাক কেন নয়? বর্তমান বিশ্বে তথ্যপ্রযুক্তির জয়-জয়কার। তথ্য প্রযুক্তির যুগে সব কিছুর সম্ভাবনা আছে, শুধু শুরুটা দরকার।