শিশুর শিক্ষা অধিকার নিয়ে ড্যাফোডিলে সেমিনার
- ক্যাম্পাস ডেস্ক
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৯৮তম জন্মদিন ও জাতীয় শিশু দিবস ২০১৮ উদযাপন উপলক্ষ্যে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যারশনাল ইউনিভার্সিটির আইন বিভাগের আয়োজনে ‘বাংলাদেশে শিশু অধিকার : শিক্ষা অধিকারের প্রতি বিশেষ দৃষ্টি’ শীর্ষক এক সেমিনার ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার (১৫ মার্চ) বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭১ মিলনায়তনে এ সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ও এনডিসি মাহমুদা শারমিন বেনু। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সেভ দ্য চিলড্রেনের জ্যেষ্ঠ শিক্ষা উপদেষ্টা ও বাংলাদেশ ইসিডি নেটওয়ার্কের ভাইস চেয়ার এম হাবিবুর রহমান। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির আইন বিভাগের প্রধান ড. ফারহানা হেলাল মেহতাব। এছাড়া অন্যান্যের মধ্যে আরো উপস্থিত ছিলেন মানবিক ও সামাজিকবিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক এ এম এম হামিদুর রহমান, বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীবৃন্দ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে মাহমুদা শারমিন বেনু বলেন, শিশুর শিক্ষা অধিকার নিশ্চিত করার পথে প্রধান দুটি বাধা রয়েছে। এক. সচেতনতার অভাব ও দুই. আইনের যথাযথ প্রয়োগের অভাব। এই দুটি বাধা অতিক্রম করতে পারলে শিশুর শতভাগ শিক্ষা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে। এসব বাধা দূর করতে মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয় কাজ করছে বলে জানান মাহমুদা শারমিন বেনু। তিনি বলেন, দারিদ্র্যতার কারণে অধিকাংশ শিশু স্কুলে যায় না। তাই দারিদ্র্যতা দূর করতে সরকার অতি দরিদ্র ১০ লাখ পরিবারকে ৩০ কেজি করে চাল দিচ্ছে। এছাড়া প্রসূতি মায়েদের স্বাস্থ্য নিশ্চিত করতে ও সুস্থ শিশুর জন্ম নিশ্চিত করতে ৮ লাখ মহিলাকে মাতৃত্বকালীন ভাতা দেওয়া হচ্ছে।
মাহমুদা শারমিন বেনু আরো বলেন, শিক্ষা অধিকার সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে প্রতিটি ইউনিয়নে কিশোর-কিশোরী ক্লাব গঠনের উদ্যোগ নিয়েছে মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়। এছাড়া নারীর ক্ষমতায়নে উঠান বৈঠক ও বিভিন্ন ট্রেনিংয়ের ব্যবস্থা করছে মন্ত্রণালয়।
ঝুঁকিপূর্ণ শিশুশ্রম বন্ধে আইন রয়েছে উল্লেখ করে মাহমুদা শারমিন বেনু বলেন, এই আইনের কঠোর প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে। শিশুশ্রম ও শিশু নির্যাতন বন্ধে শুধু শিশু ও মহিলাবিষয়ক মন্ত্রণালয় কাজ করলে চলবে না, অন্যান্য মন্ত্রণলয়সহ সর্বস্তরের মানুষকে এগিয়ে আসতে হবে বলে মন্তব্য করেন মাহমুদা শারমিন বেনু।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে এম হাবিবুর রহমান বলেন, প্রাথমিক শিক্ষা হচ্ছে আমাদের মেরুদণ্ড। মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিত করতে না পারলে আমরা জাতি হিসেবে কোনোদিনই উন্নত হতে পারব না। তাই সবার আগে মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিত করতে হবে। মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষার জন্য মানসম্মত শিক্ষক, মানসম্মত শিক্ষা উপকরণ তথা বই, পাঠবান্ধব স্কুলের পরিবেশ, মানসম্মত পরীক্ষা ব্যবস্থা ও অভিভাবকদের সচেতনতা জরুরি বলে মন্তব্য করেন এম হাবিবুর রহমান।
এম হাবিবুর রহমান বলেন, আমাদের দেশে এখনো সাড়ে পাঁচ লাখ শিশু প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যায় না। এই বিপুল সংখ্যক শিশুকে প্রাথমিক শিক্ষার অন্তর্ভূক্ত করতে না পারলে এসডিজি লক্ষ্য অর্জন করা সম্ভব হবে না। তাছাড়া প্রাথমিক থেকে মাধ্যমিক পর্যায়ে পৌছার আগেই প্রায় অর্ধেক শিশু ঝরে যায়। এসডিজির লক্ষ্য অর্জনে এই ঝরে পড়া রোধ করাও জরুরি বলে অভিমত দেন এম হাবিবুর রহমান।